জলপাইগুড়ি, 8 মে: জলপাইগুড়ি বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ি নিয়ে একটা বই লেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন সমরেশ মজুমদার। সেটা আর হল না। জলপাইগুড়ির সন্তান হলেও এখানে তিনি যোগ্য সম্মান পাননি বলে আক্ষেপ ছিল এই সাহিত্যিকের ৷ সোমবার প্রয়াত হয়েছেন সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। জলপাইগুড়ির আনাচে কানাচে তিনি রেখে গেলেন অনেক স্মৃতি।
1944 সালের 10 মার্চ জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। গয়েরকাটা প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা করেন। তারপর জলপাইগুড়ি জিলা স্কুলে পড়তে শুরু করেন সমরেশ মজুমদার। জলপাইগুড়ির হাকিমপাড়ার বাড়ি থেকেই জিলা স্কুলে পড়াশোনা করতেন। দ্বাদশ শ্রেনী পাশ করার পর তিনি চলে যান কোলকাতায়। গয়েরকাটা চা বাগানের কোয়াটারে তিনি ছেলেবেলায় দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির ইতিহাস গবেষক উমেশ শর্মা।
2009 সালে জলপাইগুড়ি পৌরসভার 125 বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উমেশ শর্মার আমন্ত্রণে জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন সাহিত্যিক। সেই বিষয়ে তিনি একটি বইও লিখেছিলেন ৷ মিত্র ঘোষের প্রকাশনায় বইটি ছাপা হয় ৷ 1100 কপি বই সমরেশ মজুমদার এনজেপি ষ্টেশনে নিয়ে এসেছিলেন বলে জানান উমেশ শর্মা। 2013 সালে উমেশ শর্মা 'চেনা অচেনা দেবেশ সমরেশ' বই লেখাতে খুশি হয়েছিলেন সাহিত্যিক সমরেশ।
আরও পড়ুন : সমরেশ প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সাহিত্যমহল, 'ভাইকে হারালাম'-বললেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
তিনি বলেন, "2018 সালের জানুয়ারিতে বই মেলা উপলক্ষে ও ফনিন্দ্রদেব বিদ্যালয়ের 100 বছর পূর্তিতে তিনি জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন। সে সময় সমরেশ মজুমদার মঞ্চে আক্ষেপ করেছিলেন ৷ তিনি বলেছিলেন, তাঁর জিলা স্কুল তাঁকে কোনওদিন ডাকেনি। কিন্তু ফনিন্দ্রদেব বিদ্যালয় তাঁকে ডেকে সম্মান জানিয়েছে।"
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়িতে ছেলেবেলা কাটিয়েছেন সমরেশ মজুমদার। সেখানেই তাঁর বাবা ও ঠাকুরদা চা বাগানে কাজ করতেন। উত্তরবঙ্গের গয়েরকাটার আংরা ভাষা নিয়ে তাঁর প্রচুর লেখা রয়েছে। পাশাপাশি নকসাল আন্দোলনের সময়কাল, শৈল শহর দার্জিলিং সাহিত্যিকের লেখায় ফিরে ফিরে এসেছে ৷ এমনকি, জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ি নিয়ে একটা বই লেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন সমরেশ মজুমদার। দর্পদেব রায়কত নিয়ে একটা উপন্যাস লেখার ইচ্ছেও ছিল। তার জন্য উমেশ শর্মার কাছে তথ্যও চেয়েছিলেন কিন্তু সেটা আর হল না বলে আক্ষেপ করেন উমেশ শর্মা।