জলপাইগুড়ি, 17 জুন: দম্পতির আত্মহত্য়া মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল যুব সভাপতির আগাম জামিন নাকচ হল ৷ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে ৷ তরপরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে আসরে নামে পুলিশ ৷ এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার, মামলার তদন্তকারী অফিসার নীতেশ লামা ৷ পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, নয়া বস্তির বাড়িতে সৈকত কে না পাওয়া যাওয়ায় তার সম্ভাব্য থাকার ঠিকানাগুলিতে অভিযান চালানো হয় । যদিও পুলিশ তাকে খুঁজে পায়নি।
পুলিশের ওপর আস্থা হারিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ এনে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন মৃত দম্পতির আত্মীয় তথা বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় । এরপর কলকাতা হাইকোর্টের এডিজি কে জয়রামনকে এই মামলায় তদন্তের নির্দেশ দেন । তদন্তকারী অফিসারকে সরিয়ে ডিআইবি -র একজন ইনস্পেকটরকে তদন্তের ভার দিয়েছিলেন জয়রামন । সেই মামলারই রায়দান হয় শুক্রবার ৷
কে এই সৈকত চট্টোপাধ্যায় ?
জলপাইগুড়ির দম্পতি আত্মহত্যা ঘটনায় মৃতদের কাছ থেকে এক সুইসাইড নোট উদ্ধার হয় ৷ সেই নোটেই সৈকত চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও তিন জনের নাম উল্লেখ করা হয় ৷ জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা জেলা যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় । এলাকায় প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত তিনি ৷ অভিযোগের পরেই প্রভাবশালী তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-ঘনিষ্ঠ যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে পুলিশ গ্রেফতার করেনি ।
আরও পড়ুন: দম্পতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা ! কাঠগড়ায় উপপৌরপ্রধান
এ প্রসঙ্গেই, বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, "সত্যের জয় হল । উদ্ধত্য, দাদাগিরির পতন হল । এই রায়ে আদালতের উপর মানুষের আস্থা বিশ্বাস আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে । আমরা আশাবাদী ছিলাম বিচার ব্যবস্থার প্রতি । যারা সুবোধ ভট্টাচার্য ও অপর্ণা ভট্টাচার্যকে মেরেছেন তাদের কয়েকজন জেলের ভাত খাচ্ছেন । আর যিনি এই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত, সেই সৈকত চট্টোপাধ্যায়ও যিনি নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে মনে করেছিলেন । তিনিও এবার জেলের ভাত খাবেন । বিচারব্যবস্থার কাছে সবাই এক। আগামিদিনে তিনি যতই লম্ফঝম্প করুক তাকে জেলের ভাত খেতে হবে । পুলিশ এখনো গ্রেফতার করেনি তাকে। আমরা আবার আদালতের দ্বারস্থ হব ।"
ঠিক কী ঘটেছিল ?
গত 1 এপ্রিল পান্ডাপাড়ার দম্পতির আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে । অপর্ণা ভট্টাচার্য ও সুবোধ ভট্টাচার্য আত্মহত্যা করেন । তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় চার পাতার সুইসাইড নোট ৷ সেখানেই সৈকত চট্টোপাধ্য়ায়, সন্দীপ ঘোষ, সোনালী বিশ্বাস ও মনোময় সরকারের নাম উল্লেখ ছিল ৷ মৃতের আত্মীয় শিখা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয় ৷