জলপাইগুড়ি, 16 জানুয়ারি: ছোটখাটো ছুটি বা শহরের কংক্রিটের ভিড় থেকে নিরালায় কয়েকটা দিন কাটাতে হলে নতুন ইকো ট্যুরিজম হাব অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্য ৷ উত্তরবঙ্গে এই প্রথম গ্রামপঞ্চায়েতের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে ইকো টুরিজম হাব 'আনন্দ মঠ'। মুখ্যমন্ত্রীর পর্যটনের স্বপ্নের প্রকল্প 'ভোরের আলো'র কাছাকাছি, এই ট্যুরিজম হাব খুলে দেওয়া হল পর্যটকদের জন্য ৷
জলপাইগুড়ি বোদাগঞ্জ ভ্রামরীদেবী মন্দিরের কাছে তিস্তা নদীরে চরে এই ট্যুরিজম হাবের আসলে গৌরীকোণ এলাকায় বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল, ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর ইতিহাসের সঙ্গে জুড়তে পারবেন পর্যটকরা ৷ এছাড়া তিস্তা নদীর জলাশয়ে প্রতি শীতেই পরিযায়ী পাখিরা ভিড় জমায়। দেশী-বিদেশী পাখির সমাগম পর্যটক তথা বার্ড ওয়াচারদের আকর্ষন করবেই ৷ সেই সঙ্গে উপরি পাওনা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
এসজেডিএ সদস্য কৃষ্ণ দাস বলেন, "2013 সালে এই জায়গায় ইকো ট্যুরিজম হাব তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে কারণে সরকারের বিভিন্ন জায়গায় আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। এরপরে 2019 সালে ওই জায়গায় 70 বিঘা জমি চিহ্নিত করা হয়। তার মধ্যে 45 বিঘাতে 100 দিনের কাজের মাধ্যমে মাছ চাষ শুরু করা হয় গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে। পর্যটকদের জন্য কটেজ তৈরি করার জন্য সরকারি ভাবে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "এই ইকো ট্যুরিজম হাবে আগামীতে পুকুরে বোটিংয়ের ব্যবস্থা ছাড়াও পর্যটকদের সামনে আদিবাসী রাজবংশী-সহ বিভিন্ন স্থানীয় জনজাতির কৃষ্টি-সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে। এছাড়াও দেবীচৌধুরানী এবং ভবানী পাঠকের ইতিহাস তুলে ধরা হবে। ট্যুরিজম হাবে যে সমস্ত পর্যটকরা আসবেন তাঁদের জন্য স্থানীয় খাবার পরিবেশন করা হবে। পর্যটন কেন্দ্রেই উৎপাদিত শাক-সবজি পর্যটকদের খাওয়ানো হবে। পাশেই তিস্তা নদীর বোরোলী মাছ, স্থানীয় চালের ভাত, চিড়া- মুড়ি থাকছে অতিরিক্ত পাওনা।"
জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলা শাসক তেজস্বী রানা বলেন, "এটা একটা গ্রামপঞ্চায়েতের প্রজেক্ট। প্রাথমিক ভাবে তিনটি কটেজ দিয়ে পথ চলা শুরু করা হয়েছে। আগামীতে কটেজ সংখ্যা বাড়ানো হবে। পাশাপাশি বোটিং থেকে শুরু করে ট্যুর গাইড, বার্ড ওয়াচিং-সহ বিভিন্ন প্রজেক্ট চালু করা হবে। স্থানীয় মানুষের যেমন কর্ম সংস্থান হবে, একই ভাবে এলাকার উন্নতি হবে।"
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বারোপাটিয়া নতুন বস গ্রামপঞ্চায়েতের গৌরীকোন এলাকায় তৈরি করা এই ট্যুরিজম হাব সদর ব্লকের বারোপাটিয়া নতুন বস গ্রামপঞ্চায়েতের উদ্যোগে এবং জলপাইগুড়ি জেলাপরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির, পিএনআরডি-সহ একাধিক দফতরের আর্থিক সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে ৷ এখন পর্যন্ত খরচ রয়েছে প্রায় 5 কোটি টাকা ৷ পর্যটন বিকাশে এই ট্যুরিজম হাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী সকলেই ৷
আরও পড়ুন:
1. পর্যটকদের জন্য সুখবর! এবার এক বাসেই পৌঁছনো যাবে সিকিম-দার্জিলিং
2. বর্ষশেষে বড় প্রাপ্তি, বক্সায় আবারও বাঘের দর্শন; বেজায় খুশি বন দফতর
3. প্রিয়জনের সমাধি দেখতে বিদেশ থেকে আসেন বহু মানুষ, ইংরেজ আমলের চার্চ আজও হেরিটেজের অপেক্ষায়