জলপাইগুড়ি, 20 মে : জলপাইগুড়ি টাউন ক্লাব মোড়ের এক বন্ধ দোকানের সামনে বসে এক কিশোরী । পরনে সালোয়ার কামিজ। ওড়না দিয়ে মুখ বাঁধা । পাশে রাখা একটি সাইকেল । হাতে একটি ঝোলা ব্যাগ । সামনে যাকেই দেখছে, তাকেই জিজ্ঞাসা করছে, "আমাকে একটা কাজ দেবে?" প্রথমে তাকে কেউই খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি । কিন্তু, পরে স্থানীয়রা লক্ষ্য করে ওই কিশোরী সমানে কেঁদে চলেছে । তারপরই সন্দেহ হয় তাদের । ওই কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে অবাক হয়ে যায় সকলে ।
ওই কিশোরী মামণি রায় । ধুপগুড়ির দক্ষিণ খয়েরবাড়ির বাসিন্দা । এবার মাধ্যমিক দিয়েছে । বাবা মদন রায় । পেশায় রাজমিস্ত্রি । নিজের মা নেই । মা মারা যাওয়ার পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন । সে বলে, "সৎ মা ভাইকে বেশি আদর করে । আর আমাকে মারধর করে ।" তাই অভিমানে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে সে ।
সাড়ে তিন ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে প্রায় 40 কিলোমিটার দূরে জলপাইগুড়ি টাইনে কাজের সন্ধানে এসেছে সে । মামণি বলে, "সৎ মা প্রতিদিনই অত্যাচার করত । কয়েকদিন ধরে অত্যাচার বেড়েছিল । সহ্য করতে না পেরে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ি । আমি আর বাড়িতে থাকতে চাই না । বাড়ি ফিরতে চাই না ।"
জলপাইগুড়ির বাসিন্দা তথা সমাজ সেবক নব্যেন্দু সরকার জানান, "আমি টাউন ক্লাবের মোড়ে দেখি একটি মেয়ে কান্নাকাটি করছে । আর সবার কাছে কাজ চাইছে । আমার সন্দেহ হওয়াতে জানতে চাই কী হয়েছে । সে জানায়, সৎ মায়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সাইকেল চালিয়ে চলে এসেছে । আমরা চাই, প্রশাসন বিষয়টি দেখুক । যাতে মেয়েটি বাড়ি ফিরতে পারে । মেয়েটির খাওয়ার ব্যবস্থা আমরা করেছি ।"