বাশঁবেড়িয়া, 17 মে: তৃণমূল নেতাকে গুলির ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছিলেন সত্যরঞ্জন শীল ওরফে সোনা । তারপরই রবিবার মগরা থানায় সোনা শীল ও তাঁর সঙ্গী সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে ভোলা-সহ আরও দু'জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । সোমবার বেলার দিকে তাঁদের কোর্টে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে । গুলি চালানোর সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছিল সোনা । সেই সঙ্গে সপ্তগ্রাম বিধায়ক তপন দাশগুপ্তের স্নেহভাজন হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে কেন এইভাবে হেনস্থার স্বীকার হতে হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ সেই সঙ্গে নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে কাজ করেও তাঁকেই এই রাজনীতির স্বীকার হতে হয়েছে । তাই নিয়ে তিনি স্যোশাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন । তাতেও সোনা দাবি করেন, "আমি দোষী নই । প্রয়োজনে পুলিশ তদন্ত করুক ৷"
গত 12 মে বাঁশবেড়িয়ার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগীর উপর গুলি চালানোর ঘটনায় নাম উঠে আসে বাঁশবেড়িয়ার পৌরপ্রশাসক অরিজিতা শীলের স্বামী সত্যরঞ্জন শীল ওরফে সোনা শীলের । ঘটনার পর সোনা শীলের দু'টি বাড়িতে ভাঙচুর চালায় অদিত্য নিয়োগীর সমর্থকরা । এই ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা ছিলেন সোনা । রবিবার সন্ধ্যার পর চুঁচুড়া থানার পুলিশ সোনা ও তাঁর দেহরক্ষী সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরও দু'জনকে গ্রেফতার করে ।
সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিয়োতে সোনা বলেন, "বহু কষ্ট-বেদনা নিয়ে আপনাদের বলছি । না হলে আপনারাও আমাকে অবিশ্বাস করবেন । যাকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করি, ভালবাসি, তাকে আমার গোপন কথাও বলেছি, সেই মানুষটা আমাকে ভুল বুঝবে আমি ভাবতে পারিনি । সপ্তগ্রামে ভোট হয়েছে ৷ আমি কী করেছি আর না করেছি সবই জানে । কিন্তু গুলি চালানোর ঘটনার পর আমার ঘরবাড়ি-গাড়ি ভাঙচুর করেছে । টাকা পয়সা, সোনা গয়না লুট করে চলে গিয়েছে । আমার অপরাধটা কী ? আমি জেনেছি আদিত্য নিয়োগীকে কারা গুলি করেছে । দু-একদিনের মধ্যে সকলেই জেনে যাবেন । আমি যদি সত্যি কোনও অপরাধ করে থাকি তাহলে মাননীয়া দিদিকে (মুখ্যমন্ত্রী) বলব, দিদি আপনি সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন । যদি সত্যি কোনও অপরাধ থাকে, আমি যদি দলবিরোধী কাজ করে থাকি, আপনি যা শাস্তি দেবেন আমি মাথা পেতে নেব । সে শাস্তি যদি মৃত্যুও হয় তাই মেনে নেব ।একটু তদন্ত করুন ।" সোনা আগেই বলেছিলেন তিনি আত্মসমর্পণ করবেন । সেই মতো তিনি রবিবার আত্মসমর্পন করেন । তিনি ওই ভিডিয়োতে বারবার বলেন, "আমি কোনও অপরাধ করিনি ৷"
তৃণমূলের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগীকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত সোনা শীলকে যে দোষারোপ দেওয়া হচ্ছে । এর পিছনে কারা আছে । সোনা শীল কি দোষী, না এর পিছনে কোনও রাজনীতি চলছে ? এসব প্রশ্নই উস্কে দিলেন সোনা ৷ তবে নির্বাচনের আগে সপ্তগ্রাম বিধায়কের ছায়াসঙ্গী ছিলেন এই সোনা । তিনিই হঠাৎ তৃণমূলের চক্ষুশূল হলেনই বা কেন সেটা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে । তবে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে । এই গুলি চালনার ঘটনায় কারা জড়িত সেটা পরিষ্কার হলেই তা সামনে আসবে ।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল সুপারের বিরুদ্ধে মদ খেয়ে ডিউটি করার অভিযোগ, বিক্ষোভ যুব তৃণমূলের