ETV Bharat / state

"মহিলাদের কষ্ট বুঝলেন না দিদি", প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ ইশরাত

রাজ্যসভায় তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল পাশ হওয়ায় খুশি মামলাকারীদের অন্যতম ইশরাত । কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রীকে ।

ইশরাত জাহান
author img

By

Published : Jul 31, 2019, 3:45 AM IST

হাওড়া, 31 জুলাই : ভারতের মুসলিম মহিলাদের কাছে আজ এক ঐতিহাসিক দিন । দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে লোকসভা এবং রাজ্যসভা দুই কক্ষেই পাশ হয়েছে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল । যারপর স্বভাবতই খুশি তাৎক্ষণিক তিন তালাক নিয়ে মামলাকারীদের অন্যতম ইশরাত জাহান । শুভেচ্ছা জানালেন মুসলিম সমাজকে । কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ।

কেউ ফোনে, কেউ হোয়াটসঅ্যাপে বা কেউ চিঠিতে বিবিকে তাৎক্ষণিক তিন তালাক দিয়েছে । শওহরদের সেই সিদ্ধান্তের তথা গোটা মুসলিম সমাজের তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিষয়টির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান পাঁচ মহিলা । ইশরাত জাহান, শায়রা বানো, আতিয়া সাবরি, গুলশন পারভিন ও আরফিন রহমান । ইশরাত হাওড়ার বাসিন্দা । 2015 সালে তাঁর শওহর দুবাই থেকে ফোনে তালাক দেন । তারপর থেকেই শুরু লড়াই । বাকিদের সঙ্গে তিনিও তাৎক্ষণিক তিন তালাকের বিরোধিতা করে পৌঁছান সুপ্রিম কোর্টে । অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও লড়াই চালিয়ে গেছেন প্রত্যেকেই । 2017 সালে তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক তকমা দেয় সুপ্রিম কোর্ট । তারপরই তাৎক্ষণিক তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বিল আনে মোদি সরকার । কিন্তু সেইসময় বিল পাশ করাতে ব্যর্থ হয় তারা ।

এবার ক্ষমতায় আসার পরই ফের ওই বিল নিয়ে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র । শেষপর্যন্ত লোকসভার পর গতকাল রাজ্যসভায়ও বিলটি পাশ হয়েছে । যাতে তাৎক্ষণিক তিন তালাককে বেআইনি ঘোষণা করে কড়া শাস্তির প্রস্তাব রয়েছে । এবার থেকে তাৎক্ষণিক তিন তালাক ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে । শওহরের 3 বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে ।

আজ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পর ETV ভারতকে টেলিফোনে ইশরাত বলেন, তিনি খুব খুশি । মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষায় এই বিল সংসদে উপস্থাপন ও তা পাশ হওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে কৃতজ্ঞ । এর পাশাপাশি ইশরাত বলেন, "এই তাৎক্ষণিক তিন তালাকের জন্য মুসলিম মহিলাদের জীবন অন্ধকারে চলে যেত । এখন আর তা হবে না । আর পাশাপাশি আমি মুসলিম মহিলাদের শুভেচ্ছা জানাতে চাই । কারণ এই তালাক নিয়ে তাঁদের মনে যে ভয় কাজ করত আর তা থাকবে না ।" মুসলিম ভাইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ইশরাত বলেন, "তাঁদের ঘরেও মেয়েবোনদের বিয়ের পর একই ভয়ে দিন কাটত । সেই ভয় থেকে মুক্তি পাবেন এবার তাঁরা ।"

প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানালেও ইশরাত একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে । কারণ তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিরোধী বিলের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি । তাঁর উদ্দেশে ইশরাত বলেন, "আমি দিদিকে বলতে চাই তিনি মুসলিম মহিলাদের দেখেননি । দেখলে আমাকে বাংলা ছেড়ে সুপ্রিম কোর্টে যেতে হত না । উনি ভোট ব্যাঙ্কের লক্ষ্যে ভেবেছেন মহিলাদের পক্ষে গেলে ছেলেদের ভোট পাবেন না । কিন্তু উনি নিজে মহিলা । মুখ্যমন্ত্রীও বটে । কিন্তু তাও উনি মহিলাদের কষ্ট বুঝলেন না । আমি দিদিকে বলতে চাই আপনি মহিলাদের দেখুন । ওদের কষ্ট বুঝুন এবং পাশে দাঁড়ান । রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় হোক । তালাকের জন্য জীবন নষ্ট হয় । তাই রাজ্যবাসীকে আমি এই বিলের সমর্থন করার আবেদন জানাচ্ছি ।" এরপরই তিনি যোগ করেন, "একটা কথা বলতে চাই, মোদিজির লক্ষ্য সবাইকে শাস্তি দেওয়া নয় । এই বিল সংসারকে বাঁচানোর । ভয় তৈরি করবে । এই ভয় থাকলেই কেউ তালাক দেবে না । আর না দিলে কারুর শাস্তিও হবে না ।"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : রাজ্যসভায় পাশ তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল, ঐতিহাসিক জয় বলছে কেন্দ্র

এরপর নিকাহ হালালার বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করবেন বলে জানালেন । কী এই নিকাহ হালালা? বিবিকে তিন তালাক দেওয়ার পর ফের যদি নিকাহ করতে চান তবে তাঁকে অন্য কারোর সঙ্গে একদিনের জন্য নিকাহ করাতে হবে । ওই ব্যক্তি তিন তালাক দিলে ফের মহিলাকে নিকাহ করতে পারবেন প্রথম শওহর । এছাড়া পণ প্রথার বিরুদ্ধেও লড়তে চান ইশরাত । বলেন, "একাধিক মহিলার বিয়ের পথে অন্যতম বাধা এই প্রথা । কারণ বহু মেয়ের পরিবার ছেলেপক্ষের দাবি মতো যৌতুক দিতে পারে না । অনেকে এতই গরিব যে সামান্য কিছুও দিতে পারে না । ফলে দেখা যায় অনেক মহিলার বিয়ে হয় না । অনেকে আবার আত্মহত্যাও করেন এই যৌতুক দিতে না পেরে ।"

এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন ইশরাত । প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করবেন বলে জানালেন ।

হাওড়া, 31 জুলাই : ভারতের মুসলিম মহিলাদের কাছে আজ এক ঐতিহাসিক দিন । দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে লোকসভা এবং রাজ্যসভা দুই কক্ষেই পাশ হয়েছে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল । যারপর স্বভাবতই খুশি তাৎক্ষণিক তিন তালাক নিয়ে মামলাকারীদের অন্যতম ইশরাত জাহান । শুভেচ্ছা জানালেন মুসলিম সমাজকে । কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ।

কেউ ফোনে, কেউ হোয়াটসঅ্যাপে বা কেউ চিঠিতে বিবিকে তাৎক্ষণিক তিন তালাক দিয়েছে । শওহরদের সেই সিদ্ধান্তের তথা গোটা মুসলিম সমাজের তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিষয়টির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান পাঁচ মহিলা । ইশরাত জাহান, শায়রা বানো, আতিয়া সাবরি, গুলশন পারভিন ও আরফিন রহমান । ইশরাত হাওড়ার বাসিন্দা । 2015 সালে তাঁর শওহর দুবাই থেকে ফোনে তালাক দেন । তারপর থেকেই শুরু লড়াই । বাকিদের সঙ্গে তিনিও তাৎক্ষণিক তিন তালাকের বিরোধিতা করে পৌঁছান সুপ্রিম কোর্টে । অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও লড়াই চালিয়ে গেছেন প্রত্যেকেই । 2017 সালে তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক তকমা দেয় সুপ্রিম কোর্ট । তারপরই তাৎক্ষণিক তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বিল আনে মোদি সরকার । কিন্তু সেইসময় বিল পাশ করাতে ব্যর্থ হয় তারা ।

এবার ক্ষমতায় আসার পরই ফের ওই বিল নিয়ে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র । শেষপর্যন্ত লোকসভার পর গতকাল রাজ্যসভায়ও বিলটি পাশ হয়েছে । যাতে তাৎক্ষণিক তিন তালাককে বেআইনি ঘোষণা করে কড়া শাস্তির প্রস্তাব রয়েছে । এবার থেকে তাৎক্ষণিক তিন তালাক ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে । শওহরের 3 বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে ।

আজ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পর ETV ভারতকে টেলিফোনে ইশরাত বলেন, তিনি খুব খুশি । মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষায় এই বিল সংসদে উপস্থাপন ও তা পাশ হওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে কৃতজ্ঞ । এর পাশাপাশি ইশরাত বলেন, "এই তাৎক্ষণিক তিন তালাকের জন্য মুসলিম মহিলাদের জীবন অন্ধকারে চলে যেত । এখন আর তা হবে না । আর পাশাপাশি আমি মুসলিম মহিলাদের শুভেচ্ছা জানাতে চাই । কারণ এই তালাক নিয়ে তাঁদের মনে যে ভয় কাজ করত আর তা থাকবে না ।" মুসলিম ভাইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ইশরাত বলেন, "তাঁদের ঘরেও মেয়েবোনদের বিয়ের পর একই ভয়ে দিন কাটত । সেই ভয় থেকে মুক্তি পাবেন এবার তাঁরা ।"

প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানালেও ইশরাত একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে । কারণ তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিরোধী বিলের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি । তাঁর উদ্দেশে ইশরাত বলেন, "আমি দিদিকে বলতে চাই তিনি মুসলিম মহিলাদের দেখেননি । দেখলে আমাকে বাংলা ছেড়ে সুপ্রিম কোর্টে যেতে হত না । উনি ভোট ব্যাঙ্কের লক্ষ্যে ভেবেছেন মহিলাদের পক্ষে গেলে ছেলেদের ভোট পাবেন না । কিন্তু উনি নিজে মহিলা । মুখ্যমন্ত্রীও বটে । কিন্তু তাও উনি মহিলাদের কষ্ট বুঝলেন না । আমি দিদিকে বলতে চাই আপনি মহিলাদের দেখুন । ওদের কষ্ট বুঝুন এবং পাশে দাঁড়ান । রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় হোক । তালাকের জন্য জীবন নষ্ট হয় । তাই রাজ্যবাসীকে আমি এই বিলের সমর্থন করার আবেদন জানাচ্ছি ।" এরপরই তিনি যোগ করেন, "একটা কথা বলতে চাই, মোদিজির লক্ষ্য সবাইকে শাস্তি দেওয়া নয় । এই বিল সংসারকে বাঁচানোর । ভয় তৈরি করবে । এই ভয় থাকলেই কেউ তালাক দেবে না । আর না দিলে কারুর শাস্তিও হবে না ।"

এই সংক্রান্ত আরও খবর : রাজ্যসভায় পাশ তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল, ঐতিহাসিক জয় বলছে কেন্দ্র

এরপর নিকাহ হালালার বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করবেন বলে জানালেন । কী এই নিকাহ হালালা? বিবিকে তিন তালাক দেওয়ার পর ফের যদি নিকাহ করতে চান তবে তাঁকে অন্য কারোর সঙ্গে একদিনের জন্য নিকাহ করাতে হবে । ওই ব্যক্তি তিন তালাক দিলে ফের মহিলাকে নিকাহ করতে পারবেন প্রথম শওহর । এছাড়া পণ প্রথার বিরুদ্ধেও লড়তে চান ইশরাত । বলেন, "একাধিক মহিলার বিয়ের পথে অন্যতম বাধা এই প্রথা । কারণ বহু মেয়ের পরিবার ছেলেপক্ষের দাবি মতো যৌতুক দিতে পারে না । অনেকে এতই গরিব যে সামান্য কিছুও দিতে পারে না । ফলে দেখা যায় অনেক মহিলার বিয়ে হয় না । অনেকে আবার আত্মহত্যাও করেন এই যৌতুক দিতে না পেরে ।"

এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন ইশরাত । প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করবেন বলে জানালেন ।

Intro:ভারতের মুসলিম সমাজের কাছে আজ এক ঐতিহাসিক দিন। দীর্ঘ টানা পোড়েনের পর অবশেষে লোকসভা এবং রাজ্যসভা, দুই কক্ষেই পাশ হয়েছে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল।
যার পর স্বাভাবিকভাবেই খুশি তিন তালাক নিয়ে মামলাকারীদের মধ্যে অন্যতম ইশরাত জাহান। আজ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পরে তিনি ইটিভি ভারতকে টেলিফোনে একটি সাক্ষাৎকারে তার অভিব্যক্তি দেন। মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষায় এই বিল সংসদে উপস্থাপন ও তা পাশ হওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে কৃতজ্ঞ বলে জানান। এর পাশাপাশি ইশরাতের বক্তব্য, কারণ এই তাৎক্ষণিক তালাকের জন্য মুসলিম মহিলাদের জীবন অন্ধকারে চলে যেত। এখন আর তা হবে না। আর পাশাপাশি আমি মুসলিম মহিলাদের শুভেচ্ছা জানাতে চাই। কারণ এই তালাক নিয়ে তাদের মনে যে ভয় কাজ করত আর তা থাকবে না। মুসলিম ভাইদেরও শুভেচ্ছা জানিয়ে ইশরাত বলেন, তাদের ঘরেও মেয়ে বোনদের বিয়ের পর একই ভয়ে দিন কাটত। সেই ভয় থেকে মুক্তি মিলবে এবার তাদের।
Body:অন্যদিকে প্রথমেই তৃণমূল সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই তালাক বিরোধী বিলের বিরোধিতা করেছিলেন। তার উদ্দেশ্যে ইশরাত বলেন, আমি দিদিকে বলতে চাই তিনি মুসলিম মহিলাদের দেখেনই নি। দেখলে আমাকে বাংলা ছেড়ে সুপ্রিম কোর্টে আসতে হত না। উনি ভোট ব্যাংকের লক্ষ্যে ভেবেছেন মহিলাদের পক্ষে গেলে ছেলেদের ভোট পাবেন না। কিন্তু উনি নিজে মহিলা। মুখ্যমন্ত্রীও বটে। কিন্তু তাও উনি মহিলাদের কষ্ট বুঝলেন না। আমি দিদিকে বলতে চাই আপনি মহিলাদের দেখুন। ওদের কষ্ট বুঝুন এবং পাশে দাঁড়ান। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় হোক। তালাকের জন্য জীবন নষ্ট হয়। তাই গোটা বাংলাবাসীকে আমি এই বিলের সমর্থন করার আবেদন জানাচ্ছি।
একটা কথা বলতে চাই, মোদিজির সবাইকে শাস্তি দেওয়া লক্ষ্য নয়। এই বিল সংসারকে বাঁচানোর। ভয় তৈরি করবে। এই ভয় থাকলেই কেউ তালাক দেবে না। আর না দিলে কারুর শাস্তিও হবে না।Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.