সাঁকরাইল(হাওড়া), 7 নভেম্বর: টানা সাতদিন নিখোঁজ থাকার পর (Missing for seven days) সাঁকরাইলের যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়েছে । প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের জেরে খুন বলেই দাবি পরিবারের । এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া ।
কালীপুজোতে হাওড়ার দক্ষিণ সাঁকরাইলে নিজের বাড়িতে এসেছিলেন হায়দরাবাদ নিবাসী সঞ্জু রায় (28)। পড়াশোনা ও চাকরি সূত্রে হায়দরাবাদেই থাকতেন তিনি । গত মাসের 28 তারিখ রাতে জন্মদিনের কেক কাটার পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান সঞ্জু । তারপর কেটে যায় প্রায় সাতদিন ।
জানা গিয়েছে, 31 অক্টোবর উলুবেড়িয়া সংলগ্ন গঙ্গার ঘাট থেকে সঞ্জুর দেহ উদ্ধার হয় (Youth Body Recovered) । তবে সনাক্তকরণের অভাবে দেহ উলুবেড়িয়া মর্গে রাখা ছিল । এরপর রবিবার সন্ধ্যা 6টা নাগাদ নিখোঁজ সঞ্জুর দেহ শনাক্তকরণের জন্য পরিবারের লোকেদের সাঁকরাইল থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয় । হাতে স্টিলের ব্রেসলেট ও পায়ের জুতো দেখে ওই দেহ সঞ্জুর বলেই শনাক্ত করে তাঁর পরিবার । যদিও পরিবারের অভিযোগ তাঁর মুখে ক্ষতের চিহ্ন ছিল । পাশাপাশি তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও এখনও উদ্ধার করা যায়নি । সঞ্জু রায়ের মৃত্যু হত্যা বলেই দাবি করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা ।
পরিবার সূত্রে দাবি, সঞ্জুর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সুস্মিতা নামে একটি মেয়ের সম্পর্ক ছিল । দুর্গাপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় দু'জনকে একসঙ্গে নাচতে দেখা গেছিল । এরপর কালীপুজোর সময়েও তাঁদের এক সঙ্গে ঘুরতেও দেখা যায় বলেই পরিবার সূত্রে খবর । ওই সম্পর্কের জেরেই তাঁদের ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলেই অভিযোগ তুলছেন পরিবারের সদস্যরা । আত্মীয় কুসুম হাজরার দাবি, "সঞ্জুর সঙ্গে স্থানীয় একটি মেয়ের এগারো বছরের সম্পর্ক ছিল । সঞ্জু বিগত দু'বছর সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছিল । এরপর সে যখনই সাঁকরাইলে আসত মেয়েটি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করত, ফোন করত এবং দেখা করার চেষ্টা করতো ।" কুসুম হাজরা আরও দাবি করেন, সঞ্জু যদি পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যাই করত তাহলে তাঁর মুখ কীভাবে থেঁতলে গেল । আমি চাই পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করুক ও অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দিক ।"
প্রসঙ্গত, 28 অক্টোবর রাত্রে সঞ্জু বাড়ি না-ফেরায় চিন্তায় ছিল পরিবারের সদস্যরা । এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে সাঁকরাইল থানায় লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয় । লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে নিখোঁজ ওই যুবকের খোঁজ শুরু হয় । পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন রাত্রি দেড়টা নাগাদ তাঁর মোবাইল ফোনে একটি কল এলে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর অনেকক্ষণ কেটে গেলেও সঞ্জু ফিরে না-আসায় তাঁর সন্ধানে বের হন পরিবারের সদস্যরা । তবে হন্যে হয়েও কোথাও তাঁর খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন: বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ডাকঘরের স্থানবদল, বিপাকে গ্রাহকরা
ঘটনার রাত্রে কার ফোন পেয়ে তিনি বাইরে গিয়েছিলেন, সঞ্জুর ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে । পাশাপাশি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সঞ্জুর হারিয়ে যাওয়া মোবাইল চিহ্নিত করার কাজও করা হচ্ছে বলে সাঁকরাইল থানা সূত্রে খবর ।