ডোমজুড় (হাওড়া), 6 সেপ্টেম্বর : হাওড়ার ডোমজুড়ের বাসিন্দা গোপাল দে ৷ 30 বছর আগে বাবার পরামর্শে শুরু করেছিলেন তেলেভাজার দোকান ৷ সেই সময় চপ প্রতি দাম নিতেন 1 টাকা ৷ আজ 2021 সালে মূল্যবৃদ্ধির বাজারেও সেই এক টাকাতেই বিক্রি করছেন চপ ৷ বর্তমানে তার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে বেগুনি, কচুরি, ডালের বড়া, সিঙ্গারা সহ নানা সুস্বাদু খাবার ৷ কিন্তু, মূল্য সেই এক টাকা ৷ গত তিরিশ বছর ধরে এভাবেই তাঁর দোকানে আসা ক্রেতাদের সস্তায় তেলেভাজা বিক্রি করছেন গোপাল দে ৷ আর এই সস্তার সুস্বাদু তেলেভাজার লোভে সকাল থেকে ভিড় লেগেই থাকে তাঁর দোকানে ৷
কিন্তু এত কম দামে কেন তেলেভাজা বিক্রি করছেন গোপাল দে ? এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তাঁর আদি বাড়ি হাওড়ার আমতায় ৷ আর্থিক প্রতিকূলতার জেরে পড়াশোনা বেশিদূর এগোয়নি ৷ তাই রুটি-রুজির টানে বাবার হাত ধরে ডোমজুড়ের সলপে চলে যান ৷ বছর পঞ্চাশের আগে ডোমজুড়ের সলপে একটি পানবিড়ির দোকান খুলেছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, সেই ব্যবসায় লাভ হয়নি তাঁর ৷ তার পরেই বাবার পরামর্শে 30 বছর আগে তেলেভাজার দোকান খোলেন গোপাল দে ৷ তখন থেকেই 1 টাকায় যাবতীয় খাবার বিক্রি করছেন তিনি ৷ কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, তাঁর বাবার নির্দেশ ছিল, গরিব মানুষ যাতে তাঁর দোকান থেকে দামের কারণে খালি হাতে ফিরে না যায় ৷ বাবার সেই নির্দেশ পালন করেই আজও এক দামে চপ বিক্রি করছেন গোপাল দে ৷
আরও পড়ুন : Coal Case : কয়লা পাচার কাণ্ডে ইডির নজরে একাধিক বেসরকারি সংস্থা
তবে, বর্তমান বাজারে এক টাকায় চপ বিক্রি করে তাঁর সংসার কীভাবে চলে ? যেভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, তাতে 1 টাকায় চপ, বেগুনি, সিঙ্গারা বিক্রি করলে করলে লোকসান হওয়াটাই স্বাভাবিক ৷ বেসন, তেল, আলু, আটা এবং অন্যান্য সামগ্রীর দাম বাড়লেও, তিনি চান না খাবারের দাম বাড়াতে ৷ তাতে লাভের অঙ্ক কম হলেও তাঁর কিছু যায় আসে না ৷ বয়স বাড়লেও গোপালবাবু একই উৎসাহে কাজ করে চলেছেন ৷ এক ছেলে রয়েছে গোপাল দে ৷ মাঝে মাঝে তিনি বাজার করে দিয়ে যান ৷ কিন্তু, একার হাতেই তিনিই দোকান সামলান ৷ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিয়ম করে তিনি তেলেভাজা বিক্রি করেন ৷ আর তাঁর প্রাপ্তি, দোকানে আসা ক্রেতাদের হাসি মুখ ৷