ETV Bharat / state

Howrah Thermocol Industry কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, সমস্যায় রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়ার চাঁদমালা তৈরির শিল্পীরা - due to price hike of Raw Materials Chandmala Artists are Trouble in Rameshwarpur

আশ্বিনে দেবীর অকালবোধনের আলোতে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব ঝলমল করে উঠবে দিনকয়েক বাদে ৷ তবে প্রদীপের নীচে অন্ধকারও রয়েছে ৷ যেমন জগৎবল্লভপুরের রামেশ্বরপুরের মালাকার এলাকার শোলা শিল্পীদের জীবন (Chandmala Artists are Trouble in Rameshwarpur)।

Howrah Thermocol Industry
কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, সমস্যায় রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়ার চাঁদমালা তৈরির শিল্পীরা
author img

By

Published : Aug 23, 2022, 2:52 PM IST

হাওড়া, 23 অগস্ট: আশ্বিন মাসে দেবীর অকাল বোধনের আর বেশি সময় নেই । আর দেবীর সাজশয্যার অন্যতম অঙ্গ চাঁদমালা থেকে প্রতিমার মুকুট । যা ছাড়া দেবী দুর্গার সাজ অসম্পূর্ণ। অথচ প্রতিবছর যাঁদের হাতে দেবী সেজে ওঠেন, সেই হাওড়ার জগৎবল্লভপুর এলাকার রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়ার চাঁদমালা তৈরির শিল্পীরাই আজ অন্ধকারে (Chandmala Artists are Trouble in Rameshwarpur) ।

করোনার আগে তো বটেই, এমনকী গত বছরেও বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় বেশ ভালো বরাত পেয়েছিলেন জগৎবল্লভপুরের শিল্পীরা । তবে এই বছর যেন বিধি বাম । সেভাবে বরাত না পেয়ে কাজ শুরুই করতে পারেননি অনেক শিল্পী । কয়েকজন বরাত পেলেও মোটের উপর তা পর্যাপ্ত নয় ৷ কোনওরকমে এতদিন এই কাজ করে একপ্রকার সংসার চললেও এ বছরে নিদারুণ সংকটে এলাকার চাঁদমালা শিল্পীরা । তাই কপালে চিন্তার ভাঁজ । কেউ দশ, কেউ বা পঞ্চাশ বছর ধরে এই শিল্পের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছেন । কারও বা এটাই পৈতৃক ব্যবসা । দেবী দুর্গার আগমনের শুভ মুহূর্ত সন্নিকটে এলেও মা কি তবে প্রসন্ন হবেন না এঁদের প্রতি? একদিকে দক্ষিণবঙ্গে সাতচল্লিশ শতাংশ কম বৃষ্টি হওয়ার জন্য এলাকাতে শোলার চাষ হলেও সেই শোলা ব্যবহারের উপযোগী হয়নি । পাশাপাশি দাম বেড়েছে অন্যান্য কাঁচামালেরও।

কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, সমস্যায় রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়ার চাঁদমালা তৈরির শিল্পীরা

আরও পড়ুন: লাভ আছে, তবু কারিগর ও কাঁচামালের অভাবে ধুঁকছে শোলার কদম ফুল শিল্প

এক রিম কাগজ আগে যেখানে 420 টাকা ছিল, এখন বড়বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে 800 টাকার বেশি দামে । কদমফুলের দামও অনেকটা বেড়েছে । একদিকে বরাতের অভাব অন্যদিকে কাঁচামালের আকাশছোঁয়া দাম, সবমিলিয়ে নিজেদের অন্ন সংস্থানের উপায় খুঁজতে রাতের ঘুম উড়েছে চাঁদমালা শিল্পীদের । তার উপরে এই দ্রব্যের ক্রেতা দোকানদারেরা চাঁদমালা, মুকুটের দামও বাড়তে দিতে রাজি হচ্ছেন না । হাতে গোনা কয়েকজন দোকানদার যারা কিছুটা হলেও বেশি দামে এদের থেকে চাঁদমালা, মুকুট কিনছেন তাঁদের উপরে ভরসা করেই কোনওরকমে একটু অন্ন সংস্থান করছেন এখানকার শিল্পীরা । আর সেটুকুও বন্ধ হয়ে গেলে না খেয়েই দিন কাটাতে হবে রামেশ্বরপুরের শোলা শিল্পীদের । প্রায় 35 পরিবার এই পেশাতে যুক্ত আছেন রামেশ্বরপুর গ্রামে । যাদের প্রধান রোজগারের উপায় এই চাঁদমালা ও শোলার মুকুট তৈরির মাধ্যমেই ।

চার বছর আগে রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়াতে বিয়ে করে এসেছেন শ্রাবণী দত্ত । তিনি জানান, তাঁদের পরিবারে চারজন সদস্য রয়েছেন । সকলে মিলেই কাজ করেন তাঁরা । সংসারের নিত্যদিনের কাজের মধ্যেই চাঁদমালা, মুকুট তৈরির কাজও চলে । চাহিদা থাকলেও কাঁচামালের দাম বেড়েছে । তাই কাজ বেশি এলেও তাতে বেশি পোশায় না ।

অপরদিকে বরাতের অভাবে এখনও কাজই শুরু করতে পারেননি অনেকেই । এক শোলা শিল্পী দুলাল দত্ত জানান, দু'বছর লকডাউনের পর এই বছর সকলেই দোদুল্যমানতার মধ্যে ছিল । সেভাবে বাজারে চাহিদাও বাড়েনি । পরিবারের সকলকে নিয়ে এই কাজে হাত লাগান তিনি । এটাই তার পৈতৃক ব্যবসা । দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে তিনি এই কাজ করছেন ।

আরও পড়ুন: সরকারি সাহায্য না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়েই চলে গেলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শোলা শিল্পী অনন্ত মালাকার

আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি দেবী দুর্গার অকালবোধোনের আলোতে বাঙালির উৎসব ঝলমল করলেও প্রতিদিন একটু একটু করে অমাবস্যার কালো অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে জগৎবল্লভপুরের রামেশ্বরপুরের মালাকার এলাকার শোলা শিল্পীদের জীবন । যদি সরকার এই শিল্পীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে হয়ত নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে মালাকার পাড়ার শোলা শিল্পীরা। তবে আদৌ কি আর কখনও তাঁদের জীবনে নতুন প্রদীপের আলো ফুটবে ৷ তার উত্তর জানা নেই এই এলাকার পঁয়ত্রিশটি পরিবারের কাছে ।

হাওড়া, 23 অগস্ট: আশ্বিন মাসে দেবীর অকাল বোধনের আর বেশি সময় নেই । আর দেবীর সাজশয্যার অন্যতম অঙ্গ চাঁদমালা থেকে প্রতিমার মুকুট । যা ছাড়া দেবী দুর্গার সাজ অসম্পূর্ণ। অথচ প্রতিবছর যাঁদের হাতে দেবী সেজে ওঠেন, সেই হাওড়ার জগৎবল্লভপুর এলাকার রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়ার চাঁদমালা তৈরির শিল্পীরাই আজ অন্ধকারে (Chandmala Artists are Trouble in Rameshwarpur) ।

করোনার আগে তো বটেই, এমনকী গত বছরেও বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় বেশ ভালো বরাত পেয়েছিলেন জগৎবল্লভপুরের শিল্পীরা । তবে এই বছর যেন বিধি বাম । সেভাবে বরাত না পেয়ে কাজ শুরুই করতে পারেননি অনেক শিল্পী । কয়েকজন বরাত পেলেও মোটের উপর তা পর্যাপ্ত নয় ৷ কোনওরকমে এতদিন এই কাজ করে একপ্রকার সংসার চললেও এ বছরে নিদারুণ সংকটে এলাকার চাঁদমালা শিল্পীরা । তাই কপালে চিন্তার ভাঁজ । কেউ দশ, কেউ বা পঞ্চাশ বছর ধরে এই শিল্পের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছেন । কারও বা এটাই পৈতৃক ব্যবসা । দেবী দুর্গার আগমনের শুভ মুহূর্ত সন্নিকটে এলেও মা কি তবে প্রসন্ন হবেন না এঁদের প্রতি? একদিকে দক্ষিণবঙ্গে সাতচল্লিশ শতাংশ কম বৃষ্টি হওয়ার জন্য এলাকাতে শোলার চাষ হলেও সেই শোলা ব্যবহারের উপযোগী হয়নি । পাশাপাশি দাম বেড়েছে অন্যান্য কাঁচামালেরও।

কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, সমস্যায় রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়ার চাঁদমালা তৈরির শিল্পীরা

আরও পড়ুন: লাভ আছে, তবু কারিগর ও কাঁচামালের অভাবে ধুঁকছে শোলার কদম ফুল শিল্প

এক রিম কাগজ আগে যেখানে 420 টাকা ছিল, এখন বড়বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে 800 টাকার বেশি দামে । কদমফুলের দামও অনেকটা বেড়েছে । একদিকে বরাতের অভাব অন্যদিকে কাঁচামালের আকাশছোঁয়া দাম, সবমিলিয়ে নিজেদের অন্ন সংস্থানের উপায় খুঁজতে রাতের ঘুম উড়েছে চাঁদমালা শিল্পীদের । তার উপরে এই দ্রব্যের ক্রেতা দোকানদারেরা চাঁদমালা, মুকুটের দামও বাড়তে দিতে রাজি হচ্ছেন না । হাতে গোনা কয়েকজন দোকানদার যারা কিছুটা হলেও বেশি দামে এদের থেকে চাঁদমালা, মুকুট কিনছেন তাঁদের উপরে ভরসা করেই কোনওরকমে একটু অন্ন সংস্থান করছেন এখানকার শিল্পীরা । আর সেটুকুও বন্ধ হয়ে গেলে না খেয়েই দিন কাটাতে হবে রামেশ্বরপুরের শোলা শিল্পীদের । প্রায় 35 পরিবার এই পেশাতে যুক্ত আছেন রামেশ্বরপুর গ্রামে । যাদের প্রধান রোজগারের উপায় এই চাঁদমালা ও শোলার মুকুট তৈরির মাধ্যমেই ।

চার বছর আগে রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়াতে বিয়ে করে এসেছেন শ্রাবণী দত্ত । তিনি জানান, তাঁদের পরিবারে চারজন সদস্য রয়েছেন । সকলে মিলেই কাজ করেন তাঁরা । সংসারের নিত্যদিনের কাজের মধ্যেই চাঁদমালা, মুকুট তৈরির কাজও চলে । চাহিদা থাকলেও কাঁচামালের দাম বেড়েছে । তাই কাজ বেশি এলেও তাতে বেশি পোশায় না ।

অপরদিকে বরাতের অভাবে এখনও কাজই শুরু করতে পারেননি অনেকেই । এক শোলা শিল্পী দুলাল দত্ত জানান, দু'বছর লকডাউনের পর এই বছর সকলেই দোদুল্যমানতার মধ্যে ছিল । সেভাবে বাজারে চাহিদাও বাড়েনি । পরিবারের সকলকে নিয়ে এই কাজে হাত লাগান তিনি । এটাই তার পৈতৃক ব্যবসা । দীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে তিনি এই কাজ করছেন ।

আরও পড়ুন: সরকারি সাহায্য না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়েই চলে গেলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শোলা শিল্পী অনন্ত মালাকার

আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি দেবী দুর্গার অকালবোধোনের আলোতে বাঙালির উৎসব ঝলমল করলেও প্রতিদিন একটু একটু করে অমাবস্যার কালো অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে জগৎবল্লভপুরের রামেশ্বরপুরের মালাকার এলাকার শোলা শিল্পীদের জীবন । যদি সরকার এই শিল্পীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে হয়ত নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে মালাকার পাড়ার শোলা শিল্পীরা। তবে আদৌ কি আর কখনও তাঁদের জীবনে নতুন প্রদীপের আলো ফুটবে ৷ তার উত্তর জানা নেই এই এলাকার পঁয়ত্রিশটি পরিবারের কাছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.