কলকাতা, 2 এপ্রিল: হাওড়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোই এখন লক্ষ্য ৷ সেই উদ্দেশে শনিবার বিকেলে শান্তি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে সিপিএমের তরফে ৷ যোগমায়ার সামনে সমবেত হয়ে মিছিল শুরু হবে ৷ উপস্থিত থাকবেন বঙ্গ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ এলাকার বাম কর্মী-সমর্থকরা ৷ হাওড়ায় জেলা সিপিএমের সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বলেন, "জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা যারা সংর্ঘষ করছে, তাদের আটকাব ৷ রুটি-রুজির লড়াইকে জোরদার করতে শান্তি ফেরাতেই হবে ৷"
দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, "রাজ্য প্রশাসন অপদার্থ ৷ এদের মদত আছে বলেই পরপর তিন বছর ধরে একই অশান্তির ঘটনা ঘটছে ৷ পুলিশ অস্ত্র হাতে মিছিল করার অনুমতি দেয় ৷ কিন্তু আমরা বামফ্রন্ট, বাম-সহযোগী দলগুলি, জাতীয় কংগ্রেস সবাই মিলে শান্তি মিছিল করতে চাইলে অনুমতি দেয় না ৷ 144 ধারার অজুহাতে আমাদের আটকানো হচ্ছে । অথচ এখনও লাল ঝান্ডা দেখলে সাম্প্রদায়িক শক্তি ভয় পায়, সাধারণ মানুষ অশান্তি চায় না, তারা ভরসা পায় ৷ তাই শান্তি মিছিল হবেই ৷"
সিপিএমের আরও অভিযোগ, "আগে বাম আমলে ধর্মীয় মিছিলের নামে এরকম দাঙ্গা হত না ৷ এখন এসব হয় ৷ রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বিভাজনের রাজনীতি সুকৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য ও কেন্দ্র- উভয় শাসকদল ৷ ধর্ম নিয়ে রাজনীতির কারবারিদের থেকে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে ৷"
রামনবমীর সন্ধ্যায় হাওড়ার শিবপুরে হিংসার ঘটনার নিন্দা করে সিপিএমের বক্তব্য, "পরপর তিন বছর হাওড়ার শিবপুরে রামনবমীর দিন উত্তেজনা তৈরি হল এবং অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটল ৷ এ বছরের ঘটনার তীব্রতা অনেক বেশি ৷ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও প্ররোচনা সংঘর্ষের চেহারা নেয়, যা শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত চলতে থাকে ৷ এই সংঘর্ষে দুই সম্প্রদায়েরই মানুষ আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । চরম প্রশাসনিক গাফিলতি ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণেই এরকম ভয়াবহ ঘটনা আবারও ঘটল হাওড়া শহরে ৷ প্রশাসনের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও পুলিশকে আগাম সতর্ক করার পরেও এই ঘটনা রাজনৈতিক অভিসন্ধির ইঙ্গিতই বহন করছে ৷ সরকার না চাইলে এমন অশান্তি হয় না ৷" ঘটনার পর শুক্রবার স্থানীয়দের তরফে মিছিল বার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ৷ যদিও মুখ্যমন্ত্রী সেই মিছিল করতে নিষেধ করেন ৷ গোটা ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ৷ এমনকী, রবিবারের এই বাম মিছিলেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলেই খবর ৷
আরও পড়ুন: 'শিবপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে', জি20-তে যোগ দিতে এসে জানালেন রাজ্যপাল