বেলুড়, 27 এপ্রিল : করোনা আবহে কর্তব্যরত নার্সদের আবাসনে জলের হাহাকার । অত্যন্ত দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন আবাসিকের নার্স সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা । নেই নূন্যতম কোভিড বিধি পালনের পরিস্থিতি ।
হাওড়ার বেলুড় ইএসআই হাসপাতালের পিছন দিকে রয়েছে স্টাফ নার্স কোয়ার্টার । সেখানে চারতলা কোয়ার্টারগুলির 6 টার মধ্যে পাঁচটি বসবাসযোগ্য । আবার সেগুলির একতলা হয়ে উঠেছে বসবাসের অযোগ্য । কার্যত একে আবাসন বলা ভুল । জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই আবাসনগুলি । 5 তলা এই আবাসনের একতলা ঘিরে গজিয়েছে লতাপাতা । আবর্জনা ও দুর্গন্ধে টেকা দায় । সঙ্গে রয়েছে সাপের উপদ্রপও । এই আবাসনে বহুদিন যাবৎ নেই পানীয় জল সহ নিত্য ব্যবহারের জন্য জলও । এখানে বসবাসকারী নার্সিং স্টাফরা কার্যত চরম অবহেলায় দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন ।
তাঁদের অভিযোগ, আবাসনে নেই কোনও পানীয় জলের সরবরাহ । অগত্যা হাওড়া পৌর নিগমের পাঠানো জলের গাড়ির উপরেই নির্ভর করে চলতে হচ্ছে তাঁদের । হাসপাতালে ডিউটি সেরে আবাসনে ফিরে জলের গাড়ির অপেক্ষা করতে হয় । যেদিন গাড়ি আসে সেদিন বালতিতে জল ভরে আবাসনে নিজের ফ্ল্যাটে জল নিয়ে যেতে হয় তাঁদের । আর যেদিন জলের গাড়ি আসে না, সেদিন পানীয় জল তো দুরস্ত, বাথরুমে নিত্যকর্ম সারার পরে ফ্লাশে জল পর্যন্ত থাকে না । অগত্যা এইভাবে জীবন কাটাচ্ছেন এই আবাসনে বসবাসকারী একাধিক নার্সিং স্টাফ, ফার্মাসিস্ট ও তাঁদের পরিবার । প্রায় 20টি পরিবারের জীবন বিপর্যস্ত সেখানে ।
এই প্রসঙ্গে ওই হাসপাতালে কর্মরতা নার্সিং স্টাফ তনিমা সামন্ত অভিযোগ করেন, এই আবাসনে তাঁরা চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। প্রতিদিন ডিউটিতে যাওয়ার আগে বা ডিউটি থেকে ফেরার পরে বালতি নিয়ে জলের জন্য লাইন দিতে হয় । ঘরে জল না থাকার দরুন নিত্যকর্মের কাজ হাসপাতালেই সারতে হয় । রোজ জলের লাইনে বালতি রেখে যান যদি কেউ সেটা জল ভরে রেখে দেয় তাঁর জন্য। নাহলে বাড়ি ফিরে একফোঁটা জল পাওয়া যায় না ।
আরও পড়ুন : কলকাতা হাইকোর্টের কার্যকরী প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল
এই হাসপাতালের কর্মরত স্টোরকিপার শর্বরী দে অভিযোগ করেন, তাঁদের হাসপাতালকে ইতিমধ্যে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করেছে রাজ্য সরকার । এই অবস্থায় তাঁরা সেখানে ডিউটি সেরে বাড়ি এসে জল পান না । হাসপাতালে কাজ সেরে কোয়ার্টারে ফিরে পোশাক কাচাকাচি করে নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাবেন, সেটুকুও তাঁরা পারছেন না ।