হাওড়া, 27 ফেব্রুয়ারি: শাসকদলের চক্ষু ও স্বাস্থ্য শিবিরে বাজল মাইক । মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে রাজ্যে । নিয়ম অনুযায়ী, পরীক্ষা শুরু থেকে শেষ হওয়ার দিন পর্যন্ত প্রকাশ্যে মাইক বাজানো নিষিদ্ধ । যদিও হাওড়ার বালি বিধানসভা এলাকাতে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র । রবিবার সকালে বালি এলাকার 29 নম্বর ওয়ার্ডে দেখা গেল মাইক হাতে ওই বিধানসভার বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়কে (TMC MLA Rana Chatterjee) । সকাল 9টা থেকে এই অনুষ্ঠান শুরু হয় । সোমবার ফের মাধ্যমিক পরীক্ষা ছিল । আর ঠিক তার আগের দিন সকালবেলাতে বিধায়কের এহেন কাজে বিতর্ক তৈরি হয়েছে জেলা রাজনীতিতে (Madhyamik Exam Rules Violation) ।
পুলিশ সূত্রের খবর, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রশাসনের নিষেধ সত্বেও মাইক হাতে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে বক্তৃতা দিতে দেখা গেল বিধায়ককে । অপরদিকে মাধ্যমিক পরীক্ষার বিধি নিষেধ থাকার কারণে মাইক ছাড়া সভা মঞ্চ থেকে খালি গলায় বক্তৃতা দিতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়কে । রবিবার বেলুড়ের গিরিশ ঘোষ রোডে ওই রক্তদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি । অনুষ্ঠানে পৌঁছেই প্রথমে তিনি মাইক বন্ধ করতে বলেন উদ্যোক্তাদের । এরপর মাইক্রোফোন ছাড়াই নিজেও বক্তব্য রাখেন তিনি । এই ঘটনায় খুশি সকলে । মন্ত্রীর ভূমিকাকে সাধুবাদ জানিয়েছে বৃহত্তর বালি এলাকার মানুষ ও ছাত্রছাত্রীরা । সেখানে বালির বিধায়কের এমন কার্যকলাপ নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক ।
যদিও বিষয়টিকে সহজে ছেড়ে কথা বলতে নারাজ হাওড়ার বিজেপি নেতৃত্ব । বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই জানান, রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে । রাজ্য প্রশাসনের স্পষ্ট নির্দেশ, এই সময়কালে কোনওভাবেই কোথাও প্রকাশ্যে মাইক বাজানো যাবে না । সেই নির্দেশিকা মেনে রাজ্যের মন্ত্রী অরুপ রায় খালি গলাতে সভা করেছেন, সেখানে বালির বিধায়কের এতটাই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা যে তাঁকে মাইক হাতে নিয়ে বক্তব্য রাখতে হচ্ছে । তিনি বিধায়ককে কটাক্ষ করে বলেন, পরীক্ষার দিনে গোলাপ ফুল দিয়ে পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা দিচ্ছেন ৷ আবার পরীক্ষার প্রস্তুতির দিনে মাইক চালিয়ে তাঁদের প্রস্তুতিতে বাধা দিচ্ছেন । তিনি বিধায়ককে প্রশ্ন করেন, যদি শাসকদলের জনপ্রতিনিধির এই আচরণ হয়, তাহলে কর্মীদের আচরণ কী হতে পারে । অপরদিকে মানুষকে সচেতনতার বার্তা দিতেই মাইক বাজানো হয়েছিল বলে দাবি করেছেন বালির বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায় (Bally MLA use mic despite ban ) ।
ঘটনা সম্বন্ধে বিধায়ক জানান, তাঁর মেয়েও এই বছর মাধ্যমিক দিচ্ছে । তাই একজন পিতা হওয়ার জায়গা থেকে তিনি নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যের বোধটা জানেন । তিনি আরও জানান, ওইদিন অনুষ্ঠান মঞ্চের বাইরে কোনও মাইক ছিল না । তিনি নিজে একজন চিকিৎসক তাই সভা মঞ্চের সামনে ও পেছনে স্বাস্থ্য শিবিরে আসা ব্যক্তিদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবগত করছিলেন । সভাস্থলের বাইরে প্রকাশ্যে কোনও মাইক না থাকার জন্য কেউ বিরক্ত হননি বলেও দাবি করেন বিধায়ক ।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকের সময় মাইক বাজিয়ে পাড়ায় বিজেপির কর্মসূচি, তুঙ্গে তরজা