ETV Bharat / state

77th Independence Day: নেই সংগ্রহশালা, বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর স্মৃতিবিজড়িত পালাড়া গ্রাম ও চন্দননগর বিস্মৃতির অতলে

Rashbehari Basu Memories: নেই কোনও সংগ্রহশালা ও সৌধ ৷ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবেও ব্রাত্যই থেকে গিয়েছে বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর স্মৃতিবিজড়িত পালাড়া গ্রাম ও চন্দননগর ৷

Rashbehari Basu Memories
রাসবিহারী বসু
author img

By

Published : Aug 13, 2023, 4:18 PM IST

রাসবিহারী বসুর স্মৃতিবিজড়িত পালাড়া গ্রাম ও চন্দননগর বিস্মৃতির অতলে

চন্দননগর, 13 অগস্ট: বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর জন্মস্থান সুবলদহ হলেও হুগলির ভদ্রেশ্বরের পালাড়া গ্রামে মামার বাড়িতে কাটে তাঁর শৈশব ও কিশোর । তাঁর পড়াশোনা শুরু চন্দননগর থেকে । আর সেখান থেকেই বিপ্লবের মূল মন্ত্রে দীক্ষিত হওয়া । চন্দননগর থেকেই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের রসদ পেতে তিনি জাপানে যান । এক সময়ে ইংরেজদের ঘুম কেড়ে নেওয়া সেই বিপ্লবীর স্মৃতি অনেকটাই বিস্মৃতির অতলে । ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউট করা হয়েছে ঠিকই । তবে সরকারি ভাবে রাসবিহারী বসুকে নিয়ে কোনও সংগ্রহশালা চন্দননগর বা পালাড়া গ্রামে হয়নি ।

রাজ্য সরকার তাঁর পৈতৃক বাড়ি বর্ধমানের সুবলদহে কিছুটা উন্নতি করলেও হুগলিতে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার কিছুই করেনি । চন্দননগর রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও রাজ্যপাল পিভি আনন্দ বোস পরিদর্শনে গিয়েছিলেন । কিন্তু ব্যাস ওটুকুই ৷ রিসার্চ ইনস্টিটিউটেরও দাবি, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে এই বিপ্লবীর স্মৃতিবিজড়িত চন্দননগর বা পালাড়া ব্রাত্যই থেকে গিয়েছে ।

রাসবিহারী বসুর মামার বাড়ি ছিল ভদ্রেশ্বর বিঘাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পালাড়া গ্রামে । বাবা বিনোদবিহারী বসু কর্মসূত্রে সিমলায় চলে যাওয়ার পর কৈশোর বয়স থেকে পালাড়াতেই থাকতেন তিনি । পরে তিনি চন্দননগরে চলে যান । তাঁর নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই গ্রামে । তবে তাঁর মামার বাড়ির কোনও অস্তিত্ব আজ আর নেই । বাগানের মধ্যে একটি বাঁধানো স্থান করা আছে । তা এখন অন্যের দখলে । এখানে রাসবিহারীর স্মৃতি রক্ষা কমিটি তৈরি হয়েছিল । একটি আবক্ষ মূর্তি ছাড়া কোনও কিছুর অস্তিত্ব নেই ।

মামার বাড়ির পাশে বর্তমান প্রজন্মের বাসিন্দা সন্দীপ বসু বলেন, "এখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে অনেকে এসেছেন । রাসবিহারীর জন্মদিনে 20 বছর আগে পালাড়া গ্রামে উৎসব হত । এখন সে সব নষ্ট হতে বসেছে । রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার উদ্যোগ নিক পালাড়ায় কিছু করার জন্য । জাপানে থেকে রাসবিহারীর সংগ্রহের জিনিসপত্র এনে সংগ্রহশালা করা যেতে পারে । সরকার উদ্যোগ নিলে এই গ্রামের মানুষ সমস্ত রকম ভাবে সাহায্য করবে এই বিপ্লবীর জন্য ।"

রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, সরকারি তরফে তাঁর জন্মস্থান হিসেবে সুবলদহের উন্নতি করা হয়েছে । ইতিহাস থেকে দেখা যায় পালাড়া গ্রাম বা চন্দননগরে রাসবিহারী বসু জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন । কিন্তু সেই জায়গা সম্পূর্ণ রূপে বঞ্চিত হয়ে রয়েছে । চন্দননগরে রাসবিহারীর পৈতৃক বাড়ি ছিল । চন্দননগরের পৌরনিগমের পূর্বতন বোর্ড সেই জায়গায় বোরো অফিস করে দেয় । খুবই দুঃখজনক ঘটনা । আগামী প্রজন্মের কাছে তাঁর স্বাধীনতার সশস্ত্র সংগ্রামের একটি সংগ্রহশালার প্রয়োজন চন্দননগরে । পালাড়া গ্রামে তাঁর স্মৃতিধন্য প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন । চন্দননগরে কোনওদিন সংগ্রহশালা বা স্মৃতিসৌধ তৈরি হলে রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউট অবশ্যই সবসময়ের মতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে । কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বিপ্লবীদের নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে । রাসবিহারীকে নিয়ে চন্দননগরে বা পালাড়ায় কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করলে সকলেই খুশি হবে । এখনও পর্যন্ত হুগলিতে রাসবিহারীকে নিয়ে কোনও চিন্তাভাবনা করা হয়নি রাজ্য ও কেন্দ্রের তরফে ।

আরও পড়ুন: অনাদরে পড়ে আছে বিপ্লবীর নামফলক, হারিয়ে যাচ্ছে 'হান্টারওয়ালি' বিমলপ্রতিভা দেবীর ইতিহাস

রাসবিহারী বসু জন্মগ্রহণ করেন 1886 সালে । চন্দননগরে থাকাকালীন ডুপ্লে কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি, বর্তমান যা পরিচিত কানাইলাল বিদ্যামন্দির নামে ৷ কলেজের তৎকালীন ডেপুটি ডিরেক্টর চারুচন্দ্র রায়ের কাছে বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষিত হন রাসবিহারী বসু । তাঁর সঙ্গে বন্ধু হিসাবে পেয়েছিলেন শ্রীশচন্দ্র ঘোষ ও কানাই লালকে । তবে চন্দননগর ও কলকাতায় পড়াশোনা শেষ না করেই তিনি সিমলায় চলে যান কাজের জন্য । পরে আবার 1906 সালে চন্দননগরে ফিরে আসেন । কলকাতার বিপ্লবী গোষ্ঠী স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রসার ঘটাতে উত্তর ভারতে দেরাদুন শহরে যেতে বলা হয় তাঁকে । পরবর্তীকালে রাসবিহারী বসুর নিজের চেষ্টায় ভারত সরকারের দেরাদুন ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে কাজে যোগ দেন ৷

সরকারি কাজের সঙ্গে সমান ভাবে পাল্লা দিয়ে বোমা তৈরির অ্যাসিড ও গোর্খা অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসারের কাছ থেকে রিভলবার সংগ্রহ করেন রাসবিহারী বসু । তাঁরই পরিকল্পনায় দিল্লির রাজপথে ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের উপর বোমা হামলা হয় । ছদ্মবেশ ও নাম পরিবর্তন করে ভারতের স্বাধীনতার জন্য কাজ করে গিয়েছেন । এই বিপ্লবীকে অনেকেই জানতেন পুলিশের চর হিসাবে । 1914 সালে পুলিশ যখন তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে, তখন অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে । দিল্লি ষড়যন্ত্র মামলা, লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা, বারাণসী ষড়যন্ত্র মামলা-সহ একাধিক অভিযোগে রাসবিহারীর মাথার দাম দেওয়া হয় মোট সাড়ে বারো হাজার টাকা । তখনও রাসবিহারী বসুকে আশ্রয় দেয় ফরাসি অধিকৃত শহর চন্দননগর ।

আরও পড়ুন: সোনা দিয়ে তৈরি বালির কণার চেয়েও ছোট জাতীয় পতাকা, তাক লাগালেন রাজস্থানের শিল্পী

রাসবিহারী বসু চন্দননগরে গোপন বৈঠক করেন ৷ সেখানেই ঠিক হয় তাঁর জাপান যাওয়ার বিষয়টি ৷ সেই সময় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাপান যাবেন । সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পিএন টেগোর ছদ্মনামে জাপান যাওয়ার একটি টিকিট কাটেন রাসবিহারী বসু । কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ বিষয়ে অবশ্য কিছুই জানতেন না । পরবর্তী কালে ব্রিটিশদের চোখ এড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ জাপানের টোকিয়োতে রাসবিহারী বসুর বাড়িতে গিয়েছিলেন । জাপানে যাওয়ার একটাই লক্ষ্য ছিল, ভারতের স্বাধীনতা । তার জন্য প্রয়োজন বিপুল অস্ত্র ও অর্থের । সেই লক্ষ্যে অনেক দূর এগিয়ে, দেশের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করেছিলেন রাসবিহারী বসু ৷ তবে ইংরেজদের থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার মাত্র দু বছর আগে 1945 সালে শেষ হয় রাসবিহারীর সংগ্রামী জীবন।

রাসবিহারী বসুর স্মৃতিবিজড়িত পালাড়া গ্রাম ও চন্দননগর বিস্মৃতির অতলে

চন্দননগর, 13 অগস্ট: বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর জন্মস্থান সুবলদহ হলেও হুগলির ভদ্রেশ্বরের পালাড়া গ্রামে মামার বাড়িতে কাটে তাঁর শৈশব ও কিশোর । তাঁর পড়াশোনা শুরু চন্দননগর থেকে । আর সেখান থেকেই বিপ্লবের মূল মন্ত্রে দীক্ষিত হওয়া । চন্দননগর থেকেই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের রসদ পেতে তিনি জাপানে যান । এক সময়ে ইংরেজদের ঘুম কেড়ে নেওয়া সেই বিপ্লবীর স্মৃতি অনেকটাই বিস্মৃতির অতলে । ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউট করা হয়েছে ঠিকই । তবে সরকারি ভাবে রাসবিহারী বসুকে নিয়ে কোনও সংগ্রহশালা চন্দননগর বা পালাড়া গ্রামে হয়নি ।

রাজ্য সরকার তাঁর পৈতৃক বাড়ি বর্ধমানের সুবলদহে কিছুটা উন্নতি করলেও হুগলিতে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার কিছুই করেনি । চন্দননগর রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও রাজ্যপাল পিভি আনন্দ বোস পরিদর্শনে গিয়েছিলেন । কিন্তু ব্যাস ওটুকুই ৷ রিসার্চ ইনস্টিটিউটেরও দাবি, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে এই বিপ্লবীর স্মৃতিবিজড়িত চন্দননগর বা পালাড়া ব্রাত্যই থেকে গিয়েছে ।

রাসবিহারী বসুর মামার বাড়ি ছিল ভদ্রেশ্বর বিঘাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পালাড়া গ্রামে । বাবা বিনোদবিহারী বসু কর্মসূত্রে সিমলায় চলে যাওয়ার পর কৈশোর বয়স থেকে পালাড়াতেই থাকতেন তিনি । পরে তিনি চন্দননগরে চলে যান । তাঁর নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই গ্রামে । তবে তাঁর মামার বাড়ির কোনও অস্তিত্ব আজ আর নেই । বাগানের মধ্যে একটি বাঁধানো স্থান করা আছে । তা এখন অন্যের দখলে । এখানে রাসবিহারীর স্মৃতি রক্ষা কমিটি তৈরি হয়েছিল । একটি আবক্ষ মূর্তি ছাড়া কোনও কিছুর অস্তিত্ব নেই ।

মামার বাড়ির পাশে বর্তমান প্রজন্মের বাসিন্দা সন্দীপ বসু বলেন, "এখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে অনেকে এসেছেন । রাসবিহারীর জন্মদিনে 20 বছর আগে পালাড়া গ্রামে উৎসব হত । এখন সে সব নষ্ট হতে বসেছে । রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার উদ্যোগ নিক পালাড়ায় কিছু করার জন্য । জাপানে থেকে রাসবিহারীর সংগ্রহের জিনিসপত্র এনে সংগ্রহশালা করা যেতে পারে । সরকার উদ্যোগ নিলে এই গ্রামের মানুষ সমস্ত রকম ভাবে সাহায্য করবে এই বিপ্লবীর জন্য ।"

রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, সরকারি তরফে তাঁর জন্মস্থান হিসেবে সুবলদহের উন্নতি করা হয়েছে । ইতিহাস থেকে দেখা যায় পালাড়া গ্রাম বা চন্দননগরে রাসবিহারী বসু জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন । কিন্তু সেই জায়গা সম্পূর্ণ রূপে বঞ্চিত হয়ে রয়েছে । চন্দননগরে রাসবিহারীর পৈতৃক বাড়ি ছিল । চন্দননগরের পৌরনিগমের পূর্বতন বোর্ড সেই জায়গায় বোরো অফিস করে দেয় । খুবই দুঃখজনক ঘটনা । আগামী প্রজন্মের কাছে তাঁর স্বাধীনতার সশস্ত্র সংগ্রামের একটি সংগ্রহশালার প্রয়োজন চন্দননগরে । পালাড়া গ্রামে তাঁর স্মৃতিধন্য প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন । চন্দননগরে কোনওদিন সংগ্রহশালা বা স্মৃতিসৌধ তৈরি হলে রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউট অবশ্যই সবসময়ের মতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে । কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বিপ্লবীদের নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে । রাসবিহারীকে নিয়ে চন্দননগরে বা পালাড়ায় কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করলে সকলেই খুশি হবে । এখনও পর্যন্ত হুগলিতে রাসবিহারীকে নিয়ে কোনও চিন্তাভাবনা করা হয়নি রাজ্য ও কেন্দ্রের তরফে ।

আরও পড়ুন: অনাদরে পড়ে আছে বিপ্লবীর নামফলক, হারিয়ে যাচ্ছে 'হান্টারওয়ালি' বিমলপ্রতিভা দেবীর ইতিহাস

রাসবিহারী বসু জন্মগ্রহণ করেন 1886 সালে । চন্দননগরে থাকাকালীন ডুপ্লে কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি, বর্তমান যা পরিচিত কানাইলাল বিদ্যামন্দির নামে ৷ কলেজের তৎকালীন ডেপুটি ডিরেক্টর চারুচন্দ্র রায়ের কাছে বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষিত হন রাসবিহারী বসু । তাঁর সঙ্গে বন্ধু হিসাবে পেয়েছিলেন শ্রীশচন্দ্র ঘোষ ও কানাই লালকে । তবে চন্দননগর ও কলকাতায় পড়াশোনা শেষ না করেই তিনি সিমলায় চলে যান কাজের জন্য । পরে আবার 1906 সালে চন্দননগরে ফিরে আসেন । কলকাতার বিপ্লবী গোষ্ঠী স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রসার ঘটাতে উত্তর ভারতে দেরাদুন শহরে যেতে বলা হয় তাঁকে । পরবর্তীকালে রাসবিহারী বসুর নিজের চেষ্টায় ভারত সরকারের দেরাদুন ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে কাজে যোগ দেন ৷

সরকারি কাজের সঙ্গে সমান ভাবে পাল্লা দিয়ে বোমা তৈরির অ্যাসিড ও গোর্খা অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসারের কাছ থেকে রিভলবার সংগ্রহ করেন রাসবিহারী বসু । তাঁরই পরিকল্পনায় দিল্লির রাজপথে ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের উপর বোমা হামলা হয় । ছদ্মবেশ ও নাম পরিবর্তন করে ভারতের স্বাধীনতার জন্য কাজ করে গিয়েছেন । এই বিপ্লবীকে অনেকেই জানতেন পুলিশের চর হিসাবে । 1914 সালে পুলিশ যখন তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে, তখন অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে । দিল্লি ষড়যন্ত্র মামলা, লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা, বারাণসী ষড়যন্ত্র মামলা-সহ একাধিক অভিযোগে রাসবিহারীর মাথার দাম দেওয়া হয় মোট সাড়ে বারো হাজার টাকা । তখনও রাসবিহারী বসুকে আশ্রয় দেয় ফরাসি অধিকৃত শহর চন্দননগর ।

আরও পড়ুন: সোনা দিয়ে তৈরি বালির কণার চেয়েও ছোট জাতীয় পতাকা, তাক লাগালেন রাজস্থানের শিল্পী

রাসবিহারী বসু চন্দননগরে গোপন বৈঠক করেন ৷ সেখানেই ঠিক হয় তাঁর জাপান যাওয়ার বিষয়টি ৷ সেই সময় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাপান যাবেন । সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পিএন টেগোর ছদ্মনামে জাপান যাওয়ার একটি টিকিট কাটেন রাসবিহারী বসু । কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ বিষয়ে অবশ্য কিছুই জানতেন না । পরবর্তী কালে ব্রিটিশদের চোখ এড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ জাপানের টোকিয়োতে রাসবিহারী বসুর বাড়িতে গিয়েছিলেন । জাপানে যাওয়ার একটাই লক্ষ্য ছিল, ভারতের স্বাধীনতা । তার জন্য প্রয়োজন বিপুল অস্ত্র ও অর্থের । সেই লক্ষ্যে অনেক দূর এগিয়ে, দেশের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করেছিলেন রাসবিহারী বসু ৷ তবে ইংরেজদের থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার মাত্র দু বছর আগে 1945 সালে শেষ হয় রাসবিহারীর সংগ্রামী জীবন।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.