উত্তরপাড়া (হুগলি), 4 অগস্ট : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Bengal SSC Scam) জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের (Partha Chatterjee) পাশ থেকে কার্যত সরে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) ৷ তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee) ৷ তৃণমূলের মহাসচিব-সহ সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ৷ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করেই আবার সক্রিয় রাজনীতিতে পার্থকে ফিরতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি ৷
এই পরিস্থিতিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ‘মন’ বুঝে অনেক তৃণমূল নেতার মুখেই পার্থ বিরোধী মন্তব্য শোনা যাচ্ছে ৷ কিন্তু সেই পথে হাঁটতে রাজি নন হুগলির উত্তরপাড়ার তৃণমূল কর্মী দেবকুমার রায় ৷ তাঁর সাফ কথা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দুর্দিনে তিনি পাশে থাকতে চান ৷ যতক্ষণ না আদালত দোষী সাব্যস্ত কাছে, ততক্ষণ বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক যে তাঁর কাছে নির্দোষ, সেটাও জানাতে ভোলেননি তিনি ৷
এটা যে তাঁর মুখের কথা নয়, তার প্রমাণ অবশ্য দেবু (এলাকায় তিনি এই নামেই বেশি পরিচিত) বুধবারই রেখেছিলেন ৷ ওই দিন পার্থকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ইডি (ED) ৷ সেই সময় আদালতেই ছিলেন তিনি ৷ পার্থর পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেছেন এই তৃণমূল কর্মী ৷
দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, তখন তিনি কেন পার্থর হয়ে প্রকাশ্যে সওয়াল করছেন ? দেবকুমার রায়ের বক্তব্য, ‘‘আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের পুরনো দিনের সৈনিক । তৃণমূল কংগ্রেস যেদিন থেকে তৈরি হয়, মিটিং-মিছিলে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছি । সেই সময় থেকে দেখেছি তৃণমূল কংগ্রেস মানেই দিদি ছাড়া মুকুলদা, পার্থদা, সুব্রত বক্সী, এই তিনজনের অবদান অনস্বীকার্য ।’’
প্রশ্ন উঠছে, এই পরিস্থিতিতে পার্থ নিয়ে তৃণমূলের যে অবস্থান, তাহলে তা কি ভুল ? দেবকুমারের মতে, ‘‘দল আজ যখন দেখেছে দলের কিছু করার নেই, তখন দলের ইমেজ ধরে রাখতে হবে । জনসাধারণের কাছে একটা খারাপ বার্তা গিয়েছে । দল দলের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।’’
এর পর আক্ষেপ ঝরে পড়ে দেবকুমারের গলায় ৷ তিনি বলেন, ‘‘গতকাল আমার সবথেকে খারাপ লেগেছে, যাঁরা এতদিন দাদার চার পাশে থাকতেন, তাঁদের দু’চার জনের যাওয়া উচিত ছিল ৷ গতকাল আমি একটি মুখও দেখেনি ৷’’ এর পর তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি মনে করেছি, আমার বিবেক বলেছে, এই লোকটার আজকে দুর্দিন, লোকটার পাশে গিয়ে দাঁড়ানো উচিত । দাদা এমন কিছু কাজ করেননি ৷ এখনও কিন্তু অভিযুক্ত ৷ দোষী সাব্যস্ত হননি । দোষী না হওয়ার আগেই যদি জুতো ছুঁড়ে মারা হন । সেটাতে সমাজে একটা খারাপ বার্তা যায়৷ সেটা ঠিক নয় । দাদার একটা সম্মান আছে ।’’
পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে একজন সম্মানীয় রাজনীতিক, সেটা বোঝাতেই বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে গিয়ে তাঁর পায়ে হাত দিয়েছিলেন, এমনটাই বৃহস্পতিবার জানালেন দেবকুমার রায় ৷ তবে তিনি এখানেই থামতে চান না ৷ বরং আগামিকাল, শুক্রবার যখন পার্থকে আবার আদালতে পেশ করা হবে, তখন তিনি সেখানে ফের উপস্থিত থাকতে চান বলে জানিয়েছেন উত্তরপাড়ার তৃণমূলের দেবু ৷
আরও পড়ুন : Partha-Arpita: কালো টাকা সাদা করতে রিয়েল এস্টেটে খাটাতেন পার্থ-অর্পিতা ?