হুগলি, 2 ডিসেম্বর: হুগলি জেলায় গড়ে 100 লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। তারমধ্যে রাজ্যের প্রয়োজন মতো রেখে বাকি আলু রফতানি করা হয় ৷ রাজ্য জুড়ে রয়েছে কয়েক হাজার হিমঘর ৷ সেখানে সারা বছরের খাবার ও বীজ আলু মজুত করে রাখা হয়। বছরের বিভিন্ন সময়ে উৎপাদন অনুযায়ী আলুর দাম নির্ধারিত হয় । কিন্তু বর্তমানে আলু উৎপাদন হলেও ঠিক মতো রফতানি না-করতে পারায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে । হিমঘরে বিপুল পরিমাণে আলু এই রাজ্যে থেকে যাচ্ছে । কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে বেশ কিছু পরিমাণ আলু রফতানি হয়েছে । কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও প্রায় 10 লক্ষ মেট্রিকটন আলু রয়েছে রাজ্যের হিমঘরে । তাই রফতানি ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে । সেই দিকেই তাকিয়ে চাষীরা।
পশ্চিমবঙ্গে বিপুল পরিমাণে আলুর উৎপাদন হয় । এই রাজ্য ছাড়াও বিহার আসাম, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা-সহ বিভিন্ন জায়গায় আলু রফতানি হয় । এ রাজ্য থেকে বছরে 30 থেকে 35 শতাংশ আলু ভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হত । রফতানির বাজার দখল করেছে উত্তরপ্রদেশ । অসম, বিহার-সহ বিভিন্ন বাজারে এখন উত্তরপ্রদেশের আলু। মূলত বাংলার ব্যবসায়ী ও হিমঘর মালিকের মাধ্যমে রাজ্যের আলু বাইরে যেত । অভিযোগ 2014 সালে আলুর দাম বৃদ্ধির কারণে বর্ডার শীল করে দেওয়ার জন্য রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও পশ্চিম বঙ্গের আলুর চেয়ে উত্তর প্রদেশের আলুর গুণগত মান ভালো হওয়া চাহিদা বেশি থাকে। আলু রফতানির জন্য কেন্দ্র তারকেশ্বর থেকে কিষাণ রেল চালু করেছিল। কিন্তু উত্তর প্রদেশ থেকে কিষাণ রেল চালু হলেও হুগলিতে তা বন্ধ হয়ে গেছে । এই প্রসঙ্গেই ব্যবসায়ীদের বক্তব্য দুই সরকারকে এগিয়ে এসে এ রাজ্যের আলুর গুণগত মান ভালো ও রফতানি ক্ষেত্রে উদ্যোগী হওয়া উচিত। রাজ্যের আলু ভিন্ন রাজ্যে না যাওয়ার জন্য কেন্দ্রকেই দায়ী করেছে রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না।
রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন "কেন্দ্র সরকারের ভুল মার্কেটিং নীতির জন্য এই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে । সাধারণত পশ্চিমবাংলার ক্ষেত্রে একটা বড় বিপর্যয় । কেন্দ্রীয় সরকার একাধিকবার রাজ্য সরকারের প্রতি অর্থনৈতিক ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে । আলু রফতানি ক্ষেত্রেও সেই রকম পর্যায়ে গিয়েছে । পরবর্তীকালে কিভাবে আমরা এর থেকে উদ্ধার হতে পারি অন্যান্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে রফতানির ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে । তার রাস্তা সহজভাবেই বেরিয়ে যাবে ।"
আলু রফতানির প্রসঙ্গেই রাজ্য হিমঘর সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ ও ব্যবসায়ী শুভজিৎ সাহা বলেন, "বাংলার আলুর গুণগত মান অনেকটাই কম হয়ে গিয়েছে । বাইরে রাজ্যে ও বিদেশে আলু রফতানি করতে হলে গুণগত মান অবশ্যই ভালো চাই । সেদিক থেকে উত্তরপ্রদেশের আলু সবদিক থেকেই ভালো। যা রফতানি কমে যাওয়ার অন্যতন কারণ ৷"
আরও পড়ুন: