চন্দননগর, 4 জুন: মাকালু জয় করে যেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন চন্দননগরের পর্বতারোহী পিয়ালী বসাক । টানা 24 ঘণ্টার বেশি বরফের মধ্যে আটকে ছিলেন তিনি ৷ যার ফলে তাঁর পায়ে ফ্রস্টবাইট হয়েছে । এমনকী তিনি নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয়েছেন। কাঠমাণ্ডু এইমসে চিকিৎসা চলে তাঁর ৷ বর্তমানে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পিয়ালী ৷ তবে তাঁর মাথার উপর এখন বিপুল অংকের লোনের টাকার পাহাড় । তা সত্ত্বেও শৃঙ্গ জয়ের অদম্য ইচ্ছেকে এখনও দমাতে পারেনি পর্বত কন্যা পিয়ালী বসাক।
পিয়ালী এখনও পর্যন্ত আট হাজারে ছয়টি শৃঙ্গ জয় করেছেন । প্রতিটা সময় জীবনকে বাজি রেখে পর্বতের শিখরে উঠেছে তিনি । অন্নপূর্ণা ও মাকালু জয়ের নানা প্রতিকূলতার সাক্ষী দেশবাসী । আর্থিক সমস্যা, আবার শারীরিক ও প্রাকৃতিক বাঁধার মধ্যে এগিয়ে চলেছেন পিয়ালী । আগামিদিনে তাঁর ইচ্ছে বাকি আট হাজার উচ্চতা সম্পন্ন তিনটি শৃঙ্গ জয় করার । নেপাল থেকে চন্দননগরের বাড়িতে ফিরে 24 ঘণ্টা পাহাড়ে বরফের মধ্যে কাটানো অভিজ্ঞতার কথা জানালেন পিয়ালী। বাড়ি ফিরলেও এখনও পায়ে ফ্রস্টবাইট রয়েছে তাঁর ৷ তাই আপাতত আর পর্বতারোহণ নয় ৷ বেশ কিছুদিন তাঁকে এখন থাকতে হবে বিশ্রামে ৷
আরও পড়ুন: মাকালু জয়ের পর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত পিয়ালী, ভর্তি রয়েছেন কাঠমান্ডুর এইমসে
প্রসঙ্গত, 17 মে মাকালু সামিট করে ফেরার পথে তুষার ঝড়ের মধ্যে পড়েন পিয়ালী বসাক। 75 ডিগ্রি ঢালে জুতোয় লাগানো ক্রাম্পনের উপর ভর করে প্রায় 24 ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলেন তিনি । তুষার ঝড়ে সাময়িক স্নো-ব্লাইন্ড হয়ে যান পিয়ালী। শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে পাহাড় থেকে নামতে পারেননি তিনি । এক পর্বতারোহীকে বাঁচাতে গিয়ে দেরি হয় তাঁকে নামাতে। শেরপারা নেমে এলেও তিনি উপরে আটকে যান। রাশিয়ান এক পর্বতারোহী নামার সময় পরদিন তাঁকে দেখে উদ্ধারের জন্য এজেন্সিকে জানায়। পরে পিয়ালীকে উদ্ধার করেন শেরপারা ৷ হেঁটে বেস ক্যাম্পে নামানো হয় তাঁকে ।
আরও পড়ুন: মাকালুর হাড়হিম ঠান্ডায় 24 ঘণ্টা পর উদ্ধার পিয়ালী
বেস ক্যাম্প থেকে হেলিকপ্টারে করে কাঠমাণ্ডু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন পিয়ালী । সেই সঙ্গে পায়ের দুই বুড়ো আঙুলে ফ্রস্টবাইট হয়ে যায় তাঁর । তিনদিন চিকিৎসার পর একটু সুস্থ হয়েছেন পিয়ালী । তবেই তিনি বাড়ি ফিরেছেন ৷ বাড়ি ফিরতেই প্রতিবেশীরা উপস্থিত হয় তাঁর বাড়িতে । তারা ফুলের মালা পড়িয়ে অভ্যর্থনা জানায় পিয়ালীকে। আগামিদিনে আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা, চো ইউ, সিসা পাংমা-সহ আরও আট হাজারের বেশি উচ্চতার শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে পাড়ি দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে বলে জানালেন বাংলার গর্ব ।