ETV Bharat / state

চার দশকের কর্মজীবন, তবু জোটেনি 'চাকরি'; আক্ষেপ নিয়েই নেপালে ফিরলেন স্কুল নাইটগার্ড ঘনশ্যাম - school night guard returned to his country

Bhadreshwar School Night Guard returned to his country: তেলিনিপাড়া ভদ্রেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি কাটিয়েছেন প্রায় 50 বছর ৷ চাকরি সরকারি না-হওয়ায় আক্ষেপ নিয়ে স্বদেশে ফিরলেন স্কুলের নাইট গার্ড ৷ নেপালে ফিরে যাওয়ার সময় তাঁকে স্কুল থকেে দেওয়া হল সংবর্ধনা ৷

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 13, 2023, 9:38 PM IST

আক্ষেপ নিয়েই নেপালে ফিরলেন ঘনশ্যাম থাপা

ভদ্রেশ্বর, 12 ডিসেম্বর: দীর্ঘ 48 বছর ভদ্রেশ্বর স্কুলে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ঘনশ্যাম থাপা। চাকরির সরকারি স্বীকৃতি না-পেয়ে নেপালে ফিরলেন তিনি ৷ নেপাল থেকে কাজের সন্ধানে ভারতে আসা তাঁর। এখানে দীর্ঘ কর্মজীবন। একাধিক প্রধান শিক্ষক থেকে অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষিকারা অবসর নিয়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি তেলিনিপাড়া ভদ্রেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে গিয়েছেন তিনি। স্কুলের একটি ছোট ঘরে তাঁর সংসার ছিল এতদিন। মাইনে বলতে মাত্র 4 হাজার টাকা পেতেন স্কুলের তরফে। সরকারি দফতরে বিভিন্ন সময় শিক্ষকরা আবেদন করেছেন তাঁর স্থায়ী চাকরির জন্য, কিন্তু সরকারি স্বীকৃতি মেলেনি তাঁর। শেষ বয়সে ফের নেপালেই ফিরে গেলেন ঘনশ্যাম।

তাঁর চলে যাওয়ার খবর সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই এগিয়ে আসেন সকলে। বহু প্রাক্তন ছাত্র থেকে শিক্ষক দেখা করতে আসেন। সংবর্ধনা দেওয়া হয় ছাত্র ও শিক্ষকদের তরফেও। অনেকেই তাঁদের থাপাদা'র জন্য আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। ঘনশ্যাম থাপার বাড়ি নেপালের ত্যাঙলাগি ধানা পোখারী গ্রামে। 1976 সালে ভাইয়ের কথায় চাকরির আশায় ভদ্রেশ্বরে আসেন থাপা। সেইসময় তেলিনিপাড়া ভদ্রেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে রাতের নিরাপত্তা জন্য নিয়োগ করা হয়। তারপর থেকে প্রায় 48 বছর পেরিয়ে গিয়েছে।

বর্তমানে তাঁর বয়স 68 বছর। তিনি গতকাল, মঙ্গলবার রওনা দিয়ে দিয়েছেন নেপালের গ্রামের বাড়িতে। পরিবার পরিজন বলতে তাঁর একমাত্র ভাই রয়েছে সেখানে। বাকি জীবনটা তাঁর কীভাবে চলবে সেই ব্যাপারেও তিনি চিন্তিত। শুধু একটাই আক্ষেপ সরকারি চাকরি বা স্বীকৃতি ৷ তা হলে হয়তো বাকি জীবনটা কিছুটা হলেও নিশ্চিন্তেই কাটতেন ঘনশ্যামবাবু ৷ তিনি বলেন, "দীর্ঘ জীবন আমি এই স্কুলে ছিলাম। সরকারের তরফে বারবার চাকরির আবেদন করলেও কিছু সুরাহা হয়নি। তাই দেশে চলে যাচ্ছি। অনেকের ভালোবাসা পেয়ে খুশি আমি।"

প্রাক্তন এক ছাত্র শক্তিপদ ভট্টাচার্য তাঁকে নিয়ে বলেন, "একটাই আক্ষেপ উনি সরকারি সাহায্য পেলেন না ৷ সোশাল মিডিয়ায় বহু ছাত্র ও শিক্ষক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।" স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক দেবকুমার দাস বলেন, "যত সামান্য বেতনে অস্থায়ী পদে যোগ দান করেন। বর্তমানে ডেভেলপমেন্ট ফান্ড থেকে তাঁকে মাত্র 4 হাজার টাকা দেওয়া হয়। তৎকালীন সময় স্কুল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকরা সরকারি দফতরে দরবার করেও ঘনশ্যামবাবুর চাকরির স্থায়ীকরণ করতে পারেননি। দিবারাত্ৰ স্কুলকে আগলে রেখেছিলেন। চোখের জলে তিনি ফিরলেন দেশে ৷

আরও পড়ুন:

  1. পাশেই দোকান চালান বাবা, মেট্রো স্টেশনে বসে রাতদিন পড়ে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর আবদুল
  2. 'প' বর্ণ দিয়ে প্রবন্ধ লিখে নজির ফরাক্কা স্কুল শিক্ষকের
  3. ইউনিসেফের মডেলে রাজ্যের 1 হাজার 313 স্কুলের মনোন্নয়ন

আক্ষেপ নিয়েই নেপালে ফিরলেন ঘনশ্যাম থাপা

ভদ্রেশ্বর, 12 ডিসেম্বর: দীর্ঘ 48 বছর ভদ্রেশ্বর স্কুলে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ঘনশ্যাম থাপা। চাকরির সরকারি স্বীকৃতি না-পেয়ে নেপালে ফিরলেন তিনি ৷ নেপাল থেকে কাজের সন্ধানে ভারতে আসা তাঁর। এখানে দীর্ঘ কর্মজীবন। একাধিক প্রধান শিক্ষক থেকে অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষিকারা অবসর নিয়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি তেলিনিপাড়া ভদ্রেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে গিয়েছেন তিনি। স্কুলের একটি ছোট ঘরে তাঁর সংসার ছিল এতদিন। মাইনে বলতে মাত্র 4 হাজার টাকা পেতেন স্কুলের তরফে। সরকারি দফতরে বিভিন্ন সময় শিক্ষকরা আবেদন করেছেন তাঁর স্থায়ী চাকরির জন্য, কিন্তু সরকারি স্বীকৃতি মেলেনি তাঁর। শেষ বয়সে ফের নেপালেই ফিরে গেলেন ঘনশ্যাম।

তাঁর চলে যাওয়ার খবর সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই এগিয়ে আসেন সকলে। বহু প্রাক্তন ছাত্র থেকে শিক্ষক দেখা করতে আসেন। সংবর্ধনা দেওয়া হয় ছাত্র ও শিক্ষকদের তরফেও। অনেকেই তাঁদের থাপাদা'র জন্য আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। ঘনশ্যাম থাপার বাড়ি নেপালের ত্যাঙলাগি ধানা পোখারী গ্রামে। 1976 সালে ভাইয়ের কথায় চাকরির আশায় ভদ্রেশ্বরে আসেন থাপা। সেইসময় তেলিনিপাড়া ভদ্রেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে রাতের নিরাপত্তা জন্য নিয়োগ করা হয়। তারপর থেকে প্রায় 48 বছর পেরিয়ে গিয়েছে।

বর্তমানে তাঁর বয়স 68 বছর। তিনি গতকাল, মঙ্গলবার রওনা দিয়ে দিয়েছেন নেপালের গ্রামের বাড়িতে। পরিবার পরিজন বলতে তাঁর একমাত্র ভাই রয়েছে সেখানে। বাকি জীবনটা তাঁর কীভাবে চলবে সেই ব্যাপারেও তিনি চিন্তিত। শুধু একটাই আক্ষেপ সরকারি চাকরি বা স্বীকৃতি ৷ তা হলে হয়তো বাকি জীবনটা কিছুটা হলেও নিশ্চিন্তেই কাটতেন ঘনশ্যামবাবু ৷ তিনি বলেন, "দীর্ঘ জীবন আমি এই স্কুলে ছিলাম। সরকারের তরফে বারবার চাকরির আবেদন করলেও কিছু সুরাহা হয়নি। তাই দেশে চলে যাচ্ছি। অনেকের ভালোবাসা পেয়ে খুশি আমি।"

প্রাক্তন এক ছাত্র শক্তিপদ ভট্টাচার্য তাঁকে নিয়ে বলেন, "একটাই আক্ষেপ উনি সরকারি সাহায্য পেলেন না ৷ সোশাল মিডিয়ায় বহু ছাত্র ও শিক্ষক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।" স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক দেবকুমার দাস বলেন, "যত সামান্য বেতনে অস্থায়ী পদে যোগ দান করেন। বর্তমানে ডেভেলপমেন্ট ফান্ড থেকে তাঁকে মাত্র 4 হাজার টাকা দেওয়া হয়। তৎকালীন সময় স্কুল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকরা সরকারি দফতরে দরবার করেও ঘনশ্যামবাবুর চাকরির স্থায়ীকরণ করতে পারেননি। দিবারাত্ৰ স্কুলকে আগলে রেখেছিলেন। চোখের জলে তিনি ফিরলেন দেশে ৷

আরও পড়ুন:

  1. পাশেই দোকান চালান বাবা, মেট্রো স্টেশনে বসে রাতদিন পড়ে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর আবদুল
  2. 'প' বর্ণ দিয়ে প্রবন্ধ লিখে নজির ফরাক্কা স্কুল শিক্ষকের
  3. ইউনিসেফের মডেলে রাজ্যের 1 হাজার 313 স্কুলের মনোন্নয়ন
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.