ভদ্রেশ্বর (হুগলি), 8 এপ্রিল: ভলিবলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সফল হুগলির ভদ্রেশ্বরের চাঁপাদানির বাসিন্দা সুষমা শ ৷ 18 বছরের এই ভলিবল খেলোয়াড় সম্প্রতি খেলো ইন্ডিয়াতে বাংলা দলের হয়ে অংশ নিয়েছিলেন ৷ সেখানে বাংলা দল সোনা জিতেছে ৷ ন্যাশনাল গেমসেও বাংলা দল রুপো জিতেছে ৷ সেই দলের অংশও ছিলেন সুষমা শ ৷ এমনকি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে জাতীয় দলের হয়ে অংশও নিয়েছেন তিনি ৷ কিন্তু, তা সত্ত্বেও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পরা পরিবারের মেয়ে সুষমা সেভাবে সামনের সারিতে উঠে আসতে পারেননি ৷ পরিবারের আর্থিক দুরাবস্থা তাঁর ভলিবল খেলার পথের অন্যতম বাধা ৷ তবে, সুষমার বাবা-মা মেয়ের খেলায় সেই অর্থকষ্টের প্রভাব পড়তে দেন না ৷
সুষমা চার বছর হল ভলিবল খেলছেন ৷ এই চার বছরের মধ্যে গুজরাতে ন্যাশনাল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলা দলের হয়ে অংশ নিয়েছেন ৷ সেখানে রুপোজয়ী বাংলা দলের অংশ ছিলেন সুষমা শ ৷ এ বছর মধ্যপ্রদেশের খেলো ইন্ডিয়ায় বাংলা দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৷ মধ্যপ্রদেশের আয়োজিত ইয়ুথ ন্যাশনাল গেমসেও বাংলা দলের হয়ে অংশ নিয়েছেন তিনি ৷ সেই দলেরও অংশ ছিলেন সুষমা ৷ ইতিমধ্যে জাতীয় দলেও সুযোগ পেয়েছেন হুগলির চাঁপাদানির এই মেয়ে ৷ চাঁপাদানি পৌরসভার 11 নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর বাড়ি ৷ দীনেশ শ-এর অ্যাসবেস্টরের ছাদ দেওয়া বাড়িতে 4 জনের পরিবার ৷ সুষমার মা-বাবা ছাড়াও তাঁর এক দিদি রয়েছেন ৷ তিনি পড়াশোনা করছেন ৷ কিন্তু, এই দিদির খেলা দেখেই সুষমার ভলিবলে আসা ৷
15 বছর বয়সে ভদ্রেশ্ববর ইউনাইটেড অ্যাথলেটিক ক্লাবে ভলিবল প্রশিক্ষণ শুরু করেন সুষমা ৷ সেখান থেকে প্রথমে দু’টি জুনিয়র দল ও পরবর্তী সময়ে রাজ্য দল হয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পান সুষমা শ ৷ এমনকি কাজাখস্তানে ভারতীয় দলের সঙ্গে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতেও গিয়েছিলেন তিনি ৷ খেলার ব্যাপারে তাঁকে খুবই সাহায্য করেছেন কোচ পার্থ দাস এবং সোমা দাস ৷ তাঁকে নিজের মেয়ের মতো তাঁর আগলে রাখেন ৷
আরও পড়ুন: মাকে আশ্বস্ত করে, বিপদসংকুল মাকালু ও অন্নপূর্ণা শৃঙ্গ জয়ের জন্য পাড়ি দিলেন পিয়ালী
সুষমার বাবা জুট মিলের শ্রমিক ৷ তাঁর মা গৃহবধূ ৷ আর পাশাপাশি, সেলাইয়ের কাজ করেন ৷ বড় মেয়ে পড়াশোনা করতে ভালোবাসেন বলে তাঁরা তাঁকে সেই সব সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন ৷ আর ছোট মেয়ে সুষমা ভলিবল খেলতে চায় বলে, তাঁকেও পূর্ণ সমর্থন করে যান ৷ শত সমস্যা সত্ত্বেও সুষমার বাবা সবকিছু সামলে নেন ৷ সুষমা চায় আগামী দিনে ভারতীয় দলের হয়ে ভালো পারফর্ম করতে ৷ তাঁর নাম সবাই জানবে ৷ বাবা-মা এবং দিদিকে ভালো বাড়িতে রাখতে চান ৷ সেই সঙ্গে একটি ভালো চাকরি চান তিনি ৷