পাণ্ডুয়া, 3 মে : পশ্চিমবঙ্গে কাজে এসে আটকে পড়েছিলেন। লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায় । রোজগার করার মতো এই পরিস্থিতিতে আর কিছুই নেই । ফলে বাড়ি ভাড়া মেটাতে পারছেন না তাঁরা । এদিকে, টাকা না থাকায় খাবারও জুটছে না । এই পরিস্থিতিতে কার্যত বাধ্য হয়েই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন হাওড়ায় কাজে আসা বিহারের 20 জন শ্রমিক । কেউ সাইকেলে, কেউ আবার হেঁটে রওনা দিয়েছেন । গতকাল এই 20 জনকে দেখা যায় হুগলির পাণ্ডুয়ায় । তাঁদের সকলেরই বাড়ি বিহারের JCD ও বাঁকা জেলায় । 400 কিলোমিটার যেতে হবে তাঁদের । তাই পাণ্ডুয়ায় একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ।
কলকাতা ও হাওড়ায় কাজের তাগিদে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, অসম থেকে বহু শ্রমিক আসেন আমাদের রাজ্যে । কেউ নির্মাণ সংস্থায় কাজ করেন । কেউ আবার হোটেলে বা শাড়ি কাপড়ের দোকানে । অনেকে ফেরি করেও রোজগার করেন । লকডাউনের জেরে এমন সব কাজই বন্ধ । লকডাউনের মেয়াদ বাড়তে থাকায় সঞ্চয়ের অঙ্কও কমেছে । প্রথমে কিছুদিন চললেও পরে ধার বাড়তে থাকে স্থানীয় দোকানে । এভাবে চলবে না ভেবে অনেকে আগেই রওনা দিয়েছিলেন বাড়ির উদ্দেশে । কিন্তু তাও কাজের আশায় থেকে গেছিলেন কেউ কেউ । ভেবেছিলেন লকডাউন শেষ হয়ে যাবে । কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ বাড়তে থাকায় সমস্যায় পড়েন । বাড়িওয়ালাও চাপ দিতে থাকে টাকার জন্য । স্থানীয় দোকান মালিকও ধার দিতে নারাজ । এই পরিস্থিতিতে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন সকলে ।
হাওড়া দাশনগরের এমন 20 জন একটি আবাসন নির্মাণের কাজ করছিলেন । তাঁরা শুক্রবার সকালে হাওড়া থেকে রওনা দেন । মাঝে গতকাল হুগলিতে বিশ্রাম নেন । তাঁদের এই অবস্থা দেখে খাবারের ব্যবস্থা করে একটি সেচ্ছাসেবী সংস্থা । খাবার খেয়ে ফের সাইকেল চালাতে শুরু করেন তাঁরা । কেউ কেউ আবার হাঁটা লাগান ।
তাঁদের মধ্যে মণীশ সিং ও পাঁচু দাসরা বলেন, "হাওড়াতে কাজ নেই তাই বাড়ি ভাড়া দিতে পারছিলাম না । বাড়িওয়ালা তাগাদা দিচ্ছিলেন । মুদিখানার দোকানেও ধার দিচ্ছে না । পুলিশের কাছে গেছিলাম । কেউ খাবার দিয়ে সাহায্য় করেনি । বাধ্য হয়ে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য বের হলাম । টাকা পয়সা নেই। বাড়ি ফিরলে কিছু একটা খাবারের ব্যবস্থা হবে । সেই আশায় 400 কিলোমিটার সাইকেল নিয়ে যাব । যাঁরা সাইকেল পাননি তাঁরা হেঁটেই ফিরছেন ।"
