ETV Bharat / state

ফলনের তুলনায় চাহিদা কম, আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই ; বলছেন আলুচাষিরা - Exporting Potato

রাজ্যে প্রতি বছর প্রায় 90 হাজার কুইন্টাল আলু উৎপাদিত হয় । কিন্তু উৎপাদিত ফসলের তুলনায় চাহিদা কম । ফলে বাড়িতে বা হিমঘরেই নষ্ট হচ্ছে ফসল । পয়সা খরচ করে চাষ করেও দাম পাচ্ছেন না আলু চাষিরা । আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা । হারাচ্ছেন উৎসাহও ।

হিমঘরে জমছে আলু
author img

By

Published : Jul 27, 2019, 2:50 AM IST

Updated : Jul 27, 2019, 11:04 PM IST

চুঁচুড়া, 27 জুলাই : উৎপাদিত ফসলের তুলনায় চাহিদা কম । বাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে ফসল । পয়সা খরচ করে চাষ করেও দাম পাচ্ছেন না । ফলে সমস্যায় রাজ্যের আলুচাষিরা । রাজ্যে অন্যতম আলু উৎপাদক জেলা হিসেবে পরিচিত হুগলি । সেখানকার কৃষকদের অভিযোগ, আলুচাষ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই সরকারের । যে পরিমাণ আলুর ফলন হয়েছে তা অন্য রাজ্যে রপ্তানি করা যেতে পারে । কিন্তু, সরকার এনিয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না । কার্যত বাড়িতে নষ্ট হচ্ছে আলু । আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা । উৎসাহ হারাচ্ছেন ।

চাষিরা ঋণ নিয়ে আলু চাষ শুরু করেছিলেন । চাষের মাঝে বৃষ্টির জন্য আলুচাষ ক্ষতির মুখে পড়েছিল । চাষিরা ভেবেছিলেন, যে আলু উৎপাদিত হবে তাতে ঋণ ঠিকই শোধ করা যাবে । কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি বলে জানাচ্ছেন আলুচাষিরা । এক চাষি যেমন বললেন, "লাভ তো দূরের কথা, ঋণ শোধের টাকা তুলতে পারিনি এখনও । ফলে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হচ্ছে ।"

তথ্য বলছে, রাজ্যে প্রতি বছর প্রায় 90 হাজার কুইন্টাল আলু উৎপাদিত হয় । যার মধ্যে হুগলি জেলায় এবার আলুর উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি প্রায় 15 টন । হিমঘরে মজুত ছিল 16611514 কুইন্টাল । মজুত আলুর 30 শতাংশ বিক্রি হলেও বাকি আলুর কী হবে তা জানা নেই চাষিদের । তাঁরা জানাচ্ছেন, হিমঘরে বস্তা বস্তা জ্যোতি, চন্দ্রমুখী আলু নষ্ট হচ্ছে । এখন বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে 12 টাকা কেজি দরে, চন্দ্রমুখী 20 টাকায় । আপাতদৃষ্টিতে খোলা বাজারে আলুর দাম ভালো মনে হলেও এতে লাভের লাভ হচ্ছে না, দাবি কৃষকদের । তাঁরা জানাচ্ছেন, খোলা বাজারে আলু যে দামে বিক্রি হচ্ছে তার অর্ধেক দামও তাঁরা পান না । এখন বাঁচার একমাত্র পথ হল রপ্তানি । অন্ধ্র ,উত্তরপ্রদেশ ও বিহারসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যেও আলু যায় । কিন্তু, সেসব রাজ্যে আগের তুলনায় বাংলার আলুর চাহিদা কমেছে ।

পোলবার এক চাষি দিলীপ ময়রা যেমন বললেন, "সরকার যদি আলু বাইরে না পাঠায় তাহলে বাংলার আলু শেষে নিলামে চলে যাবে । বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে । প্রতিদিন কাগজে দেখা যাচ্ছে চাষিরা আত্মহত্যা করেছে । কেন করছে সেটা দেখা উচিত সরকারের । কারণ আলু যদি চাষ করে ফেলে দিতে হয়, তাহলে ঋণে জর্জরিত হয়ে যাব আমরা । এই ঋণের বোঝা নিয়ে পরেরবার চাষও করতে পারব না । তখন আত্মহত্যা ছাড়া আর উপায় থাকবে না । উত্তরপ্রদেশ ও অন্ধ্রপ্রদেশ নিজেরা আলুচাষ করায় বাংলার আলুর চাহিদা নেই । চাষিদের এক বিঘা আলুচাষ করতে 18 থেকে 20 হাজার টাকা লাগে । কিন্তু আলু বিক্রি করে অর্ধেক টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না ।"

আলু ব্যবসায়ী পুলক ঘোষ বলেন, "চাষিরা তো শেষ হচ্ছেনই । তারপর রয়েছি আমরা । আমরাও শেষ হয়ে যাচ্ছি । আমরা চাষিদের কাছ থেকে 230 থেকে 240 টাকা বস্তা আলুর বন্ড কিনে সেই আলু খুচরো বাজারে দিই । তাতে আমরাও আর লাভের মুখ দেখছি না । হিমঘরে দিনের পর দিন আলু পড়ে থাকায় 100 বস্তা আলু বাছাইয়ের পর 70 বস্তা আলু পরিষ্কার পাওয়া যাচ্ছে । বাকি কাটপিস ও ছোটো আলু কম পয়সায় বিক্রি হয় । পরিষ্কার আলুটা বাজারে 470 টাকা করে বেচা হচ্ছে । তারপরও খুচরো বিক্রেতাদের কাছে ধারেই চলে যায় আমাদের টাকা । আর আলু বাইরে পাঠানোর জন্য যে পরিকাঠামো দরকার । সেটা যেমন খরচ সাপেক্ষ তেমনই ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া আলু বাইরে পাঠানো অসম্ভব । সরকারি নিয়ম কানুন ও বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করলে আদৌ টাকা পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে । আগামী দিনে আলু ব্যবসায়ীরাও পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে ।"

আলু ব্যবসায়ীদের তরফে রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, "হুগলি জেলা তথা রাজ্যে আলু চাষ ও ব্যবসার সাথে এক কোটি মানুষ জড়িত । আগামী দিনে সরকার আলু নিয়ে না ভাবলে চাষি ও ব্যবসায়ী সকলেই শেষ হয়ে যাবে । হিমঘরে যা আলু মজুত হয়েছিল তার মধ্যে 30 থেকে 32 শতাংশ আলু বিক্রি হয়েছে । অগাস্ট মাসের শেষে 50 শতাংশ আলু বিক্রি হয়ে যাওয়ার কথা । কিন্তু বাজারের যা হাল তাতে মনে হয় না তা বিক্রি হবে । আলু ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনও গতি থাকছে না ।"

দেখুন ভিডিয়ো

এবিষয়ে খুচরো ব্যবসায়ীদের গলায় আবার অন্য সুর । চুঁচুড়া বাজারের এক খুচরো বিক্রেতা বীরেন্দ্র কুমার সাউ বলেন, "চাষি থেকে খুচরো বাজারে আসতে অনেক কটা হাত ঘুরে আসার কারণেই দামটাও অনেক বেশি হয়ে যায় । এর মধ্যে মিডলম্যান থাকার ফলে এই অবস্থা । বাজারে আমরা 450 টাকা আলুর বস্তা কিনলেও সেখানে ওজনে কম থাকে । এর মধ্যেও বাছাইয়ের ব্যাপার থাকছে । এখন বর্তমান বাজার 12 টাকা থেকে 13 টাকা কেজি চলছে । কিন্তু মিডলম্যান না থাকলে আমাদের চলবে না । কারন অল্প আলুর জন্য হিমঘর থেকে আলু এনে, বাছাই করে, এখানে পর্যন্ত আনা সম্ভব হবে না । তার উপর ব্যবসায়ীদের কাছে সারা বছরে একটা ধার-বাকির ব্যাপার থাকে ।"

যদিও আলুচাষিদের এইসব দাবি খারিজ করেছে জেলা কৃষি বিপণন দপ্তর । তারা জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত আলুচাষের পরিস্থিতি ঠিকই আছে । সরকারি তরফে কোনও নির্দেশিকা আসেনি । বাজারে আলুর দামে তুলনামূলক সামঞ্জস্য আছে ।

চুঁচুড়া, 27 জুলাই : উৎপাদিত ফসলের তুলনায় চাহিদা কম । বাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে ফসল । পয়সা খরচ করে চাষ করেও দাম পাচ্ছেন না । ফলে সমস্যায় রাজ্যের আলুচাষিরা । রাজ্যে অন্যতম আলু উৎপাদক জেলা হিসেবে পরিচিত হুগলি । সেখানকার কৃষকদের অভিযোগ, আলুচাষ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই সরকারের । যে পরিমাণ আলুর ফলন হয়েছে তা অন্য রাজ্যে রপ্তানি করা যেতে পারে । কিন্তু, সরকার এনিয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না । কার্যত বাড়িতে নষ্ট হচ্ছে আলু । আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা । উৎসাহ হারাচ্ছেন ।

চাষিরা ঋণ নিয়ে আলু চাষ শুরু করেছিলেন । চাষের মাঝে বৃষ্টির জন্য আলুচাষ ক্ষতির মুখে পড়েছিল । চাষিরা ভেবেছিলেন, যে আলু উৎপাদিত হবে তাতে ঋণ ঠিকই শোধ করা যাবে । কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি বলে জানাচ্ছেন আলুচাষিরা । এক চাষি যেমন বললেন, "লাভ তো দূরের কথা, ঋণ শোধের টাকা তুলতে পারিনি এখনও । ফলে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হচ্ছে ।"

তথ্য বলছে, রাজ্যে প্রতি বছর প্রায় 90 হাজার কুইন্টাল আলু উৎপাদিত হয় । যার মধ্যে হুগলি জেলায় এবার আলুর উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি প্রায় 15 টন । হিমঘরে মজুত ছিল 16611514 কুইন্টাল । মজুত আলুর 30 শতাংশ বিক্রি হলেও বাকি আলুর কী হবে তা জানা নেই চাষিদের । তাঁরা জানাচ্ছেন, হিমঘরে বস্তা বস্তা জ্যোতি, চন্দ্রমুখী আলু নষ্ট হচ্ছে । এখন বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে 12 টাকা কেজি দরে, চন্দ্রমুখী 20 টাকায় । আপাতদৃষ্টিতে খোলা বাজারে আলুর দাম ভালো মনে হলেও এতে লাভের লাভ হচ্ছে না, দাবি কৃষকদের । তাঁরা জানাচ্ছেন, খোলা বাজারে আলু যে দামে বিক্রি হচ্ছে তার অর্ধেক দামও তাঁরা পান না । এখন বাঁচার একমাত্র পথ হল রপ্তানি । অন্ধ্র ,উত্তরপ্রদেশ ও বিহারসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যেও আলু যায় । কিন্তু, সেসব রাজ্যে আগের তুলনায় বাংলার আলুর চাহিদা কমেছে ।

পোলবার এক চাষি দিলীপ ময়রা যেমন বললেন, "সরকার যদি আলু বাইরে না পাঠায় তাহলে বাংলার আলু শেষে নিলামে চলে যাবে । বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে । প্রতিদিন কাগজে দেখা যাচ্ছে চাষিরা আত্মহত্যা করেছে । কেন করছে সেটা দেখা উচিত সরকারের । কারণ আলু যদি চাষ করে ফেলে দিতে হয়, তাহলে ঋণে জর্জরিত হয়ে যাব আমরা । এই ঋণের বোঝা নিয়ে পরেরবার চাষও করতে পারব না । তখন আত্মহত্যা ছাড়া আর উপায় থাকবে না । উত্তরপ্রদেশ ও অন্ধ্রপ্রদেশ নিজেরা আলুচাষ করায় বাংলার আলুর চাহিদা নেই । চাষিদের এক বিঘা আলুচাষ করতে 18 থেকে 20 হাজার টাকা লাগে । কিন্তু আলু বিক্রি করে অর্ধেক টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না ।"

আলু ব্যবসায়ী পুলক ঘোষ বলেন, "চাষিরা তো শেষ হচ্ছেনই । তারপর রয়েছি আমরা । আমরাও শেষ হয়ে যাচ্ছি । আমরা চাষিদের কাছ থেকে 230 থেকে 240 টাকা বস্তা আলুর বন্ড কিনে সেই আলু খুচরো বাজারে দিই । তাতে আমরাও আর লাভের মুখ দেখছি না । হিমঘরে দিনের পর দিন আলু পড়ে থাকায় 100 বস্তা আলু বাছাইয়ের পর 70 বস্তা আলু পরিষ্কার পাওয়া যাচ্ছে । বাকি কাটপিস ও ছোটো আলু কম পয়সায় বিক্রি হয় । পরিষ্কার আলুটা বাজারে 470 টাকা করে বেচা হচ্ছে । তারপরও খুচরো বিক্রেতাদের কাছে ধারেই চলে যায় আমাদের টাকা । আর আলু বাইরে পাঠানোর জন্য যে পরিকাঠামো দরকার । সেটা যেমন খরচ সাপেক্ষ তেমনই ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া আলু বাইরে পাঠানো অসম্ভব । সরকারি নিয়ম কানুন ও বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করলে আদৌ টাকা পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে । আগামী দিনে আলু ব্যবসায়ীরাও পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে ।"

আলু ব্যবসায়ীদের তরফে রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, "হুগলি জেলা তথা রাজ্যে আলু চাষ ও ব্যবসার সাথে এক কোটি মানুষ জড়িত । আগামী দিনে সরকার আলু নিয়ে না ভাবলে চাষি ও ব্যবসায়ী সকলেই শেষ হয়ে যাবে । হিমঘরে যা আলু মজুত হয়েছিল তার মধ্যে 30 থেকে 32 শতাংশ আলু বিক্রি হয়েছে । অগাস্ট মাসের শেষে 50 শতাংশ আলু বিক্রি হয়ে যাওয়ার কথা । কিন্তু বাজারের যা হাল তাতে মনে হয় না তা বিক্রি হবে । আলু ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনও গতি থাকছে না ।"

দেখুন ভিডিয়ো

এবিষয়ে খুচরো ব্যবসায়ীদের গলায় আবার অন্য সুর । চুঁচুড়া বাজারের এক খুচরো বিক্রেতা বীরেন্দ্র কুমার সাউ বলেন, "চাষি থেকে খুচরো বাজারে আসতে অনেক কটা হাত ঘুরে আসার কারণেই দামটাও অনেক বেশি হয়ে যায় । এর মধ্যে মিডলম্যান থাকার ফলে এই অবস্থা । বাজারে আমরা 450 টাকা আলুর বস্তা কিনলেও সেখানে ওজনে কম থাকে । এর মধ্যেও বাছাইয়ের ব্যাপার থাকছে । এখন বর্তমান বাজার 12 টাকা থেকে 13 টাকা কেজি চলছে । কিন্তু মিডলম্যান না থাকলে আমাদের চলবে না । কারন অল্প আলুর জন্য হিমঘর থেকে আলু এনে, বাছাই করে, এখানে পর্যন্ত আনা সম্ভব হবে না । তার উপর ব্যবসায়ীদের কাছে সারা বছরে একটা ধার-বাকির ব্যাপার থাকে ।"

যদিও আলুচাষিদের এইসব দাবি খারিজ করেছে জেলা কৃষি বিপণন দপ্তর । তারা জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত আলুচাষের পরিস্থিতি ঠিকই আছে । সরকারি তরফে কোনও নির্দেশিকা আসেনি । বাজারে আলুর দামে তুলনামূলক সামঞ্জস্য আছে ।

Intro:বাংলার আলু পচবে বাংলাতেই এমনি অভিযোগ আনছে চাষী থেকে ব্যবসায়ী।সরকারের তরফে আলু ভিন্ন রাজ্যে না পাঠালে সমস্যায় পড়তে হবে চাষীদের।হুগলি জেলায় প্রতি বছর 90 হাজার কুইন্টাল আলু চাষ হয়।সেই জায়গায় আলুর বিকল্প বাজার না থাকায় প্রতিবছর বাড়ছে চাষীর আত্মহত্যা।বাজারে জ্যোতি আলু কেজি প্রতি 12 টাকা ও চন্দ্র মুখী 20 টাকা হলেও।চাষীরা তার অর্ধেক দামও পাচ্ছে না।চাষের খরচ তো দূরের কথা ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা থাকছে না তাদের।সেই ক্ষেত্রে আলু নিয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার।এবারে আলু ওঠার মুখে বৃষ্টির ফলে নষ্ট হলেও।70 শতাংশ আলু এখনও হিমঘরে মজুত আছে।সেই তুলনায় বাজারে আলুর চাহিদাও কম।অন্ধ্র ,উত্তরপ্রদেশ ও বিহার সহ বেশ কিছু রাজ্যে আগের তুলনায় বাংলার আলুর চাহিদা কমেছে।সুতরাং চাহিদার তুলনায় আলু বেশি হওয়ায় দাম কমে
হুগলি জেলায় এবারে আলুর উৎপাদন হেক্টর প্রতি 15 টন।যার মধ্যে হিমঘরে মজুত ছিল 16611514 কুনটাল।তার মধ্যে 30 শতাংশ আলু বিক্রি হলেও বাকি আলু কি হবে সেই দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে চাষী থেকে ব্যবসায়ীর।তবে এবিষয়ে জেলা কৃষি বিপণন দপ্তরের তরফে জানা গেছে।এখন ও পর্যন্ত আলু পরিস্থিতি ঠিকই আছে।সরকারি তরফে কোন নির্দেশিকা আসেনি।বাজারে আলু দাম তুলনামূলক সামঞ্জস্যই আছে।
পোলবার এক চাষী দিলীপ ময়রা বলেন সরকার যদি আলু বাইরে না পাঠায়।তাহলে বাংলার আলু শেষে নিলামে চলে যাবে।অবিক্রি হয়ে যাবে আসতে আসতে।প্রতিদিন কাগজে দেখা যাচ্ছে চাষী আত্মহত্যা করেছে।কেন করছে সেটা দেখা উচিত সরকারকে।কারণ আলু যদি চাষ করে ফেলে দিতে হয়।তাহলে চাষীরা দাম না পেয়ে ঋণে জর্জরিত হয়ে যাচ্ছে।পরবর্তী চাষ করতে পারছে না।তাতেই চাষী আত্মহত্যা করেছে।আলুতে রঙ না লাগানোয় রাজ্যের বাইরের আলু যাচ্ছে না ।অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশ ও অন্ধ্র নিজেরা আলু চাষ করায় বাংলার আলুর চাহিদা নেই।চাষিদের এক বিঘা আলু চাষ করতে 18 থেকে 20 হাজার টাকা লাগে।কিন্তু আলু বিক্রি করে অর্ধেক টাকাও পাচ্ছে না চাষীরা।
এক আলু ব্যবসায়ী পুলক ঘোষ বলেন চাষিদের পর আমরাও শেষ হয়ে যাচ্ছি।আমরা চাষীদের কাছ থেকে 230 থেকে 240 টাকা বস্তা আলুর বন্ড কিনে সেই আলু খুচরা বাজারে দিতে আমরা আমরাও লাভের মুখ দেখছি না।হিমঘরে থেকে 100 বস্তা আলু বাঁচাইয়ের পর 70 বস্তা আলু পরিষ্কার আলু পাওয়া যায়।বাকি কাটপিস ও ছোট আলু কম পয়সায় বিক্রি হয়।পরিষ্কার আলুটা বাজারে 470 টাকা করে বেচা হচ্ছে।তারপরেও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ধারেই চলে যায় আমাদের টাকা।আর আলু বাইরে পাঠানোর জন্য যে পরিকাঠামো দরকার ।সেটা যেমন খরচ সাপেক্ষ ,ঝুঁকি সাপেক্ষ ও বটে।সরকারি সহযোগিতা ছাড়া আলু বাইরে পাঠানো অসম্ভব।সরকারি নিয়ম কানুন ও বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করলে আদেও টাকা পাওয়া যাবে কিনা যথেষ্ট ই সংশয় আছে।আগামী দিনে আলু ব্যবসায়ী রাও পুরোপুরি শেষ।

আলু ব্যবসায়ীর তরফে রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন হুগলি জেলা তথা রাজ্যে আলু চাষ ও ব্যবসার সাথে এক কোটি মানুষ জড়িত।আগামী দিনে সরকার আলু নিয়ে না ভাবলে চাষী ও ব্যবসায়ী সকলেই শেষ হয়ে যাবে।হিমঘরে যা আলু মজুত হয়েছিল তার মধ্যে 30 থেকে 32 শতাংশ আলু বিক্রি হয়েছে।আগস্ট মাসের শেষে 50 শতাংশ আলু বিক্রি হয়ে যাওয়া কথা।কিন্তু বাজারের যা হাল তাতে মনে হয়না তা বিক্রি হবে।আলু ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোন গতি থাকছে বলে দাবি তার।

চুঁচুড়া বাজারের এক খুচরা বিক্রেতা বীরেন্দ্র কুমার সাও বলেন চাষী থেকে খুচরা বাজারে আসতে অনেক কটা হাত ঘুরে আসার কারণেই দামটা ও অনেক বেশি।এর মধ্যে মিডিল ম্যান থাকার ফলে এই অবস্থায়।বাজারে আমরা 450 টাকা আলুর বস্তা কিনলেও সেখানে ওজনে কম থাকে।এর মধ্যেও বাছাই এর ব্যাপার থাকছে।এখন বর্তমান বাজার 12 টাকা থেকে 13 টাকা কিলো চলছে।কিন্তু মিডিল ব্যবসাদার না থাকলে আমাদের চলবে না।কারন আমরা অল্প আলুর জন্য হিমঘর থেকে আলু এনে ,বাছাই করে,এখানে পর্যন্ত আনা সম্ভব হবে না।তারউপর ব্যবসাদারদের কাছে সারা বছরে একটা ধার বাকির ব্যাপার থাকে।
WB_HGL_POTATO MARKETING_7203418

Body:WB_HGL_POTATO MARKETING_7203418

Conclusion:
Last Updated : Jul 27, 2019, 11:04 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.