হরিপাল, 22 অক্টোবর : লক্ষ্মীপুজোর বিসর্জনকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হরিপাল । বৃহস্পতিবার রাতে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের সূত্রপাত । প্রথমে হরিপালের মোশায় মোড়ে পুলিশের সঙ্গে পুজো কমিটির বেশ কয়েকজনের বচসা হয় । এরপরই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে উত্তেজিত জনতা । প্রতিরোধ করতে গেলে আহত হন 20জন পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার । ওই এলাকার বেশ কিছু মানুষও আহত হয় । এই ঘটনায় 15 জন এলাকাবাসীকে আটক করা হয়েছে ।
হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সূত্রে খবর, হরিপালের বিভিন্ন গ্রাম মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশটি লক্ষ্মীপুজো হয় । হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কোনও পুজোয় শোভাযাত্রা বের করা যাবে না তা মিটিং করে আগেই বলে দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু তা সত্ত্বেও পুজো কমিটিগুলো শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নেয় । বাইরে থেকে বড় বড় বক্স আর প্রচুর মাইক ভাড়া করে নিয়ে আসে । পুলিশের তরফে দিনের বেলায় মাইকে প্রচার করে শোভাযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরেও এই ঘটনা ঘটে ৷
আরও পড়ুন : Teenager Died : রেললাইনে ভিডিয়ো শুট করতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত কিশোর
এদিন মূলত হরিপাল স্টেশন, মোশায় মোড় ও পোদ্দার মোড়-সহ বেশ কিছু রাস্তায় লক্ষ্মীপুজোর শোভাযাত্রা বের হয় । তার সঙ্গে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে চলে নাচ-গান ৷ বারণ করা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি । এবারেও হাইকোর্টের রায়ে হরিপাল থানার পুলিশ আগে থেকেই এলাকার সকল পুজো কমিটিকে ডেকে শোভাযাত্রা বন্ধ করার আবেদন করলেও কাজ হয়নি ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হরিপালে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে অশান্তি শুরু হয় । দুপুরে হরিপাল থানার পুলিশ বেশ কয়েকটি বক্স ও মাইক বাজানোর সরঞ্জাম আটক করে । ক্লাব সদস্যরা তারস্বরে মাইক বাজানো থেকে বিরত থাকবে এবং শোভাযাত্রা করা হবে না বলায় সেসব ফিরিয়ে দেয় পুলিশ । তখনকার মত বিষয়টি মিটে গেলেও সন্ধ্যায় এক সঙ্গে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে বিসর্জনের প্রস্তুতি নেয় কয়েকটি ক্লাব ।
শোভাযাত্রা রুখতে হরিপাল থানার বিশাল পুলিশবাহিনী বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে টহল দেওয়া শুরু করে ৷ এরপর রাত দশটা নাগাদ হরিপালের মোশায় মোড়ে মাইক বাজিয়ে শোভাযাত্রা বের হতেই বাধা দেয় পুলিশ ৷ তখনই পুলিশের উপর শুরু হয় ইট বৃষ্টি । এর পাল্টা লাঠি চার্জ করে পুলিশ ও র্যাফ । ঘটনায় একজন এএসআইয়ের মাথা ফাটে । ঘাড়ে ও পায়ে আঘাত লাগে হরিপাল থানার ওসি মধুসূদন ঘোষের ৷ এলাকার দোকানপাট এবং বাড়িঘর ভাঙচুর চালানো হয় ।
আরও পড়ুন : Kalyan Banerjee : দুর্গার সামনে কেঁদে কীসের জন্য ক্ষমা চাইলেন তৃণমূল সাংসদ ?
শুক্রবার সকাল থেকেই এলাকা থমথমে । ঘটনার পরই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ । গত রাতেই ঘটনায় জড়িত থাকায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । আজ তাদের চন্দননগর আদালতে তোলা হবে । এই বিষয়ে স্থানীয় এক দোকানদার কিরণ চন্দ্র ভড় জানান, ডিজে বাজানোকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে গণ্ডগোল বাঁধে । ডিজে বাজিয়ে শোভাযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তারস্বরে মাইক বাজিয়ে শোভাযাত্রা করায় ধেয়ে আসে পুলিশ । স্থানীয় মানুষ তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে । আশেপাশের বেশ কিছু দোকানেও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ ৷
আরও পড়ুন : Durga Puja-Crime : নবমীর রাতে উত্তরপাড়ায় মদ্যপদের হাতে আক্রান্ত মা-মেয়ে