গোবরডাঙা (উত্তর 24 পরগনা), 11 জানুয়ারি: দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়েও, লাঠির সাহায্যে সাইকেল চালিয়ে অযোধ্যা যাচ্ছেন এক যুবক। বছর বাইশের যুবকের নাম সৌমিক গোলদার। এ যাত্রায় তাঁর সঙ্গী হয়েছেন বন্ধু রাকেশ মণ্ডল। দু'জনের বাড়িই উত্তর 24 পরগনার গোবরডাঙায়। গত 9 জানুয়ারি তাঁরা যাত্রা শুরু করেছেন নিজেদের বাড়ি থেকে। বুধবার হুগলির পাণ্ডুয়া হয়ে বর্ধমানের দিকে যাত্রাপথে অনেকেই শুভেচ্ছা জানান তাঁদের। রামের প্রতি ভক্তি থেকেই তাঁদের এই যাত্রা শুরু। সৌমিকের ধারণা তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তি জোরে তিনি অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে (22 জানুয়ারি) পৌঁছে যাবেন ৷
শুধুমাত্র রামের প্রতি আবেগ থেকে এই কঠিন যাত্রা সৌমিক গোলদারের। তিনি বর্তমানে গোবরডাঙা হিন্দু কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়াশোনা করছেন ৷ এছাড়াও ইলেকট্রিক্যাল নিয়ে আইটিআই পাশ করেছেন সৌমিক ৷ 2020 সালে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুতে টিউমার ধরা পড়ে। সেখান থেকেই ক্যানসারে আক্রান্ত হন তিনি । বেঙ্গালুরুতে দীর্ঘ চিকিৎসায় অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও গত বছর বাইক দুর্ঘটনায় ফের পায়ে আঘাত লাগে। সেখান থেকেই পায়ে পচন শুরু হয়।
বাধ্য হয়ে সাত মাস আগে তাঁর ডান পা কেটে বাদ দিতে হয়। মনের জোর এত, তাও ভেঙে পড়েননি সৌমিক। একটু সুস্থ হতেই লড়াই শুরু করেন সৌমিক। বাঁ-পায়েই সাইকেল চালানো শুরু করেন। ডান হাত দিয়ে লাঠির সাহায্যে প্যাটেল করে প্রায় হাজার কিলোমিটার যাত্রাপথ অতিক্রম করতে অযোধ্যার উদ্দেশে পাড়ি দেন সৌমিক ৷ সৌমিক গোলদার সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। ইতিমধ্যেই চিকিৎসার জন্য লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। নতুন করে কৃত্রিম পা লাগানো তাঁর কাছে ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাঁর সঙ্গী রাকেশ মণ্ডল ৷ যাত্রাপথে বহু মানুষ সাহায্য ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন দুই সাইকেল আরোহীকে ৷
সামান্য কিছু খাবার ও পোশাক নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন তাঁরা ৷ তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন গড়ে প্রায় 90 কিলোমিটার যাত্রা করবেন ৷ রাকেশ বলেন, "গোবরডাঙায় একটা রামমন্দির আছে সেখানেই সৌমিকের সঙ্গে কথা হয়, অযোধ্যায় রামমন্দির দেখতে যাব। সৌমিকের পা বাদ গেলেও ওর মনের জোর খুব ৷ ওর সঙ্গে আমিও এই যাত্রায় সামিল হয়েছি।"
আরও পড়ুন: