ETV Bharat / state

চলতি মাসেই ইতিহাসে অযোধ্যা, এবার হেরিটেজ স্বীকৃতির দাবি শ্রীরামপুরের রাম মন্দিরের

270 year Dilapidated Sreerampur Ram Mandir: আগামী 22 জানুয়ারি অযোধ্যার রাম জন্মভূমিতে উদ্বোধন হবে রাম মন্দিরের ৷ যার প্রস্তুতি তুঙ্গে ৷ কিন্তু, শ্রীরামপুরে 270 বছর আগে তৈরি রাম-সীতা মন্দির আজ অবহেলিত ৷ 1753 খ্রিস্টাব্দে শেওড়াফুলির রাজা রাজচন্দ্র রায় এই রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ৷ কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভগ্নদশা মন্দিরের ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 3, 2024, 7:06 PM IST

Updated : Jan 4, 2024, 12:06 PM IST

হেরিটেজ স্বীকৃতির দাবি শ্রীরামপুরের রাম মন্দিরের

শ্রীরামপুর, 3 জানুয়ারি: আগামী 22 জানুয়ারি অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে বিশাল আয়োজন চলছে ৷ সেই আবহে এবার 270 বছরের পুরনো জরাজীর্ণ ও অবহেলিত হুগলির শ্রীরামপুরের রাম মন্দির সংস্কার ও হেরিটেজের দাবি উঠেছে ৷ পরিস্থিতি এমনই যে, মন্দিরের পলেস্তেরা খসে বেরিয়ে এসেছে চুন-সুড়কির ঢালাই ৷ বর্তমানে শেওড়াফুলি রাজ পরিবারের উদ্যোগে এই মন্দিরকে পুনর্নির্মাণ ও হেরিটেজের স্বীকৃতির আবেদন করা হয়েছে ৷ রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যে শ্রীরামপুর পৌরসভার তত্ত্বাবধানে পুনর্নির্মাণের কথা হচ্ছে ৷

শ্রীরামপুরের রাম-সীতা মন্দিরের ইতিহাস

ইতিহাসের পাতা উল্টোলে পাওয়া যায়, 1753 খ্রিস্টাব্দে শেওড়াফুলির রাজা রাজচন্দ্র রায় শ্রীরামপুরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাম-সীতা মন্দির ৷ অতি প্রাচীন কষ্টি পাথরের রাম, লক্ষ্মণ, সীতা ও হনুমানের মূর্তি রয়েছে সেখানে ৷ রাম-সীতার সেবার জন্য শ্রীপুর, গোপীনাথপুর ও মোহনপুর নিয়ে মোট তিনশো বিঘা জমি দান করেন রাজচন্দ্র রায় ৷ এই জায়গা থেকে কর আদায় করে চলত মন্দিরের সেবা ৷ দীর্ঘ দিনের পুরনো জরাজীর্ণ এই মন্দির ৷ চারদিকের দেওয়াল ও মূল মন্দিরের দেওয়ালে অসংখ্য ফাটল ৷ বর্ষায় গর্ভগৃহের ছাদ থেকে জল পড়ে ৷ এমন পরিস্থিতি মূর্তি বেদী থেকে সরিয়ে রাখতে পর্যন্ত হয়েছিল ৷

সাত পুরুষ ধরে শ্রীরামপুর রাম মন্দিরের সেবা করে আসছে রায় পরিবার ৷ এখনও রামের জন্মদিন ও রাম দোল পালন করা হয় এখানে ৷ বিশেষ পুজো হয় এই অনুষ্ঠানের দিনগুলিতে ৷ প্রতিদিন নিত্যসেবা করে রায় পরিবারের বংশধর তথা পুরোহিত রাজ শেখর রায় ৷ তিনি বলেন, "শেওড়াফুলি রাজ পরিবারের যখন সাহায্য আসা বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিনশো বিঘা জমির কর আদায় থেকেই মন্দিরের যাবতীয় খরচ চলত ৷ ইংরেজ শাসন আসার পর শ্রীরামপুর পৌরসভার গঠন থেকেই অধিকাংশ জমি অধিগ্রহণ হয়ে যায় ৷ কোনও টাকা পাওয়া যেত না ৷ পরবর্তী সময়ে বংশপরম্পরায় আমাদের পরিবার এই মন্দিরের দায়ভার সামলে আসছে ৷ বর্তমানে এই মন্দির ভগ্নপ্রায় অবস্থা ৷ ছাদ থেকে জল পড়ে ৷ আমরাও চাই এর সংস্কার হোক ৷ রাজ পরিবার চিন্তাভাবনা করছে ৷ এই মন্দির হেরিটেজ স্বীকৃতি পাক সকলেই চাই আমার ৷"

শেওড়াফুলি রাজ পরিবারের রাজারা হুগলি-হাওড়া মিলিয়ে একাধিক রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ৷ শ্রীরামপুরের মন্দিরের নামে তিনটি গ্রাম দান করা হয়েছিল সেই সময় ৷ বর্তমানে এই মন্দিরের পরিস্থিতি জরাজীর্ণ ৷ সেই কথা মাথায় রেখে সংস্কারের জন্য রাজ্য হেরিটেজ কমিশন ও সরকারের কাছে আবেদন করেছে রাজ পরিবার ৷ তাদের মধ্যেই এক নতুন প্রজন্মের বংশধর সৌরদীপ ঘোষ বর্মন বলেন, "আমাদের কথা হচ্ছে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন ও শ্রীরামপুর পৌরসভার সঙ্গে ৷ যৌথভাবে তত্ত্বাবধান করে একজন বাস্তুকারের সাহায্যে এই মন্দির পুনর্নির্মাণ করার কথা ৷ অধিগৃহিত জমির কিছুটা ফিরিয়ে দিলে মন্দিরের সেবা চালাতে সুবিধা হয় ৷ সেই সঙ্গে সরকারের কাছে আবেদন হেরিটেজের তকমা যাতে পাওয়া যায় ৷"

আরও পড়ুন:

  1. চন্দননগরের আলোয় সাজল রাম মন্দিরের সামনের রাস্তা
  2. রাম মন্দিরের প্রবেশদ্বারে শোভা পাবে বাংলার শিল্পশৈলী, একশো ম্যুরাল তৈরি বিশ্বজিতের
  3. কাশীর রমাপতি মন্দির থেকে খেলনা অর্পণ করা হবে অযোধ্যার রামলালাকে

হেরিটেজ স্বীকৃতির দাবি শ্রীরামপুরের রাম মন্দিরের

শ্রীরামপুর, 3 জানুয়ারি: আগামী 22 জানুয়ারি অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে বিশাল আয়োজন চলছে ৷ সেই আবহে এবার 270 বছরের পুরনো জরাজীর্ণ ও অবহেলিত হুগলির শ্রীরামপুরের রাম মন্দির সংস্কার ও হেরিটেজের দাবি উঠেছে ৷ পরিস্থিতি এমনই যে, মন্দিরের পলেস্তেরা খসে বেরিয়ে এসেছে চুন-সুড়কির ঢালাই ৷ বর্তমানে শেওড়াফুলি রাজ পরিবারের উদ্যোগে এই মন্দিরকে পুনর্নির্মাণ ও হেরিটেজের স্বীকৃতির আবেদন করা হয়েছে ৷ রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যে শ্রীরামপুর পৌরসভার তত্ত্বাবধানে পুনর্নির্মাণের কথা হচ্ছে ৷

শ্রীরামপুরের রাম-সীতা মন্দিরের ইতিহাস

ইতিহাসের পাতা উল্টোলে পাওয়া যায়, 1753 খ্রিস্টাব্দে শেওড়াফুলির রাজা রাজচন্দ্র রায় শ্রীরামপুরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাম-সীতা মন্দির ৷ অতি প্রাচীন কষ্টি পাথরের রাম, লক্ষ্মণ, সীতা ও হনুমানের মূর্তি রয়েছে সেখানে ৷ রাম-সীতার সেবার জন্য শ্রীপুর, গোপীনাথপুর ও মোহনপুর নিয়ে মোট তিনশো বিঘা জমি দান করেন রাজচন্দ্র রায় ৷ এই জায়গা থেকে কর আদায় করে চলত মন্দিরের সেবা ৷ দীর্ঘ দিনের পুরনো জরাজীর্ণ এই মন্দির ৷ চারদিকের দেওয়াল ও মূল মন্দিরের দেওয়ালে অসংখ্য ফাটল ৷ বর্ষায় গর্ভগৃহের ছাদ থেকে জল পড়ে ৷ এমন পরিস্থিতি মূর্তি বেদী থেকে সরিয়ে রাখতে পর্যন্ত হয়েছিল ৷

সাত পুরুষ ধরে শ্রীরামপুর রাম মন্দিরের সেবা করে আসছে রায় পরিবার ৷ এখনও রামের জন্মদিন ও রাম দোল পালন করা হয় এখানে ৷ বিশেষ পুজো হয় এই অনুষ্ঠানের দিনগুলিতে ৷ প্রতিদিন নিত্যসেবা করে রায় পরিবারের বংশধর তথা পুরোহিত রাজ শেখর রায় ৷ তিনি বলেন, "শেওড়াফুলি রাজ পরিবারের যখন সাহায্য আসা বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিনশো বিঘা জমির কর আদায় থেকেই মন্দিরের যাবতীয় খরচ চলত ৷ ইংরেজ শাসন আসার পর শ্রীরামপুর পৌরসভার গঠন থেকেই অধিকাংশ জমি অধিগ্রহণ হয়ে যায় ৷ কোনও টাকা পাওয়া যেত না ৷ পরবর্তী সময়ে বংশপরম্পরায় আমাদের পরিবার এই মন্দিরের দায়ভার সামলে আসছে ৷ বর্তমানে এই মন্দির ভগ্নপ্রায় অবস্থা ৷ ছাদ থেকে জল পড়ে ৷ আমরাও চাই এর সংস্কার হোক ৷ রাজ পরিবার চিন্তাভাবনা করছে ৷ এই মন্দির হেরিটেজ স্বীকৃতি পাক সকলেই চাই আমার ৷"

শেওড়াফুলি রাজ পরিবারের রাজারা হুগলি-হাওড়া মিলিয়ে একাধিক রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ৷ শ্রীরামপুরের মন্দিরের নামে তিনটি গ্রাম দান করা হয়েছিল সেই সময় ৷ বর্তমানে এই মন্দিরের পরিস্থিতি জরাজীর্ণ ৷ সেই কথা মাথায় রেখে সংস্কারের জন্য রাজ্য হেরিটেজ কমিশন ও সরকারের কাছে আবেদন করেছে রাজ পরিবার ৷ তাদের মধ্যেই এক নতুন প্রজন্মের বংশধর সৌরদীপ ঘোষ বর্মন বলেন, "আমাদের কথা হচ্ছে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন ও শ্রীরামপুর পৌরসভার সঙ্গে ৷ যৌথভাবে তত্ত্বাবধান করে একজন বাস্তুকারের সাহায্যে এই মন্দির পুনর্নির্মাণ করার কথা ৷ অধিগৃহিত জমির কিছুটা ফিরিয়ে দিলে মন্দিরের সেবা চালাতে সুবিধা হয় ৷ সেই সঙ্গে সরকারের কাছে আবেদন হেরিটেজের তকমা যাতে পাওয়া যায় ৷"

আরও পড়ুন:

  1. চন্দননগরের আলোয় সাজল রাম মন্দিরের সামনের রাস্তা
  2. রাম মন্দিরের প্রবেশদ্বারে শোভা পাবে বাংলার শিল্পশৈলী, একশো ম্যুরাল তৈরি বিশ্বজিতের
  3. কাশীর রমাপতি মন্দির থেকে খেলনা অর্পণ করা হবে অযোধ্যার রামলালাকে
Last Updated : Jan 4, 2024, 12:06 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.