চন্দননগর, 19 ডিসেম্বর: সোমবার চন্দননগর রেজিস্ট্রি অফিসে দেবজিৎ ঘোষ নামে এক আইনজীবী একটি দলিল রেজিস্ট্রি করতে যান সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে। দলিলে কিছু বিষয়ে লেখা নিয়ে মতপার্থক্য শুরু হয় দু'জনের মধ্যে। সেই নিয়ে সাব রেজিস্ট্রার স্বাগতা তরফদার সঙ্গে বাদানুবাদ বাঁধে। আর তা চরম আকার নেয়। সেখানে বার অ্যাসোসিয়েশনের আরও কিছু আইনজীবীদের সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয় সাব-রেজিস্ট্রারের মধ্যে (Complaints of Slapping and Showing Shoes of Lawyers) ।
এক মহিলা আইনজীবীর হাত মুচকে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে এদিন। এই ঝামেলার মাঝে একটি ভিডিয়ো ফুটেজও রেকর্ড করেন কেউ ৷ যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত ৷ তাতে দেখা যায় আইনজীবীদের চড় দেখাচ্ছেন সাব রেজিস্ট্রার (Chandannagar Registry Office)। তবে সাব-রেজিস্ট্রার স্বাগতা দেবীর অভিযোগ, তাঁকে আইনজীবীরা বাবা-মা তুলিয়ে কথা বলেন।
আইনজীবী দেবজিৎ ঘোষের অভিযোগ, এই সাব-রেজিস্ট্রার অকারণে দলিল ছুড়ে ফেলে দেন। আমাকে মুখে চড় মেরে সিধা করে দেব বলে আক্রমণ করেন। এত বছর কাজ করার পর আমাকে এইসব কথা শুনতে হচ্ছে। বার অ্যাসোসিয়েশনের (Bar Association) সদস্যরা এলে তাঁদেরকে জল ছুড়ে ও হাতে জুতো তুলে নিয়ে মারারও হুমকি দেওয়া হয়। উনি টাকারও দাবি করেন। আমাদের উপর দুর্ব্যবহার ও টাকা চাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। ওনাকে এখান থেকে বদলি করার দাবি জানাচ্ছি আমরা। আমাদের সঙ্গে শুধু না, উনি অফিসের অন্যান্য স্টাফেদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন।"
আরও পড়ুন: ওড়িশা জেলা আদালত চত্বরে ভাঙচুর, গ্রেফতার 17 আইনজীবী
বার অ্যাসোসিয়েশনের সহসম্পাদক অন্নপূর্ণা চক্রবর্তী বলেন, "দেবজিৎবাবুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করায় আমি জিজ্ঞাসা করতে গেলে আমার দলিল ছুড়ে ফেলে দেন। আমার হাত ধরে মারতে আসেন। আমাদের সকলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। আমাদের চড় দেখাচ্ছেন ও গায়ে জল ছুড়েছেন। উনি টাকা ডিম্যান্ড করেন সব ক্ষেত্রে। রেজিস্ট্রি অফিসের নাম করে লাখ লাখ টাকা নেন । তাহলে আমরা কোথায় যাব? আমাদের ঘুষ দিতে হচ্ছে। না-হলে উনি দলিল করবেন না।"
অন্যদিকে, সাব-রেজিস্ট্রার স্বাগত তরফদার বলেন ওনারা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আমায়। ওনারা ক্রিমিনাল কোর্টের আইনজীবী, সিভিল কোর্টেরও আইনজীবী নয়। আমি দলিলে তিনটি লাইন কাটতে বলেছিলাম উনি কাটবেন না। আমি কোথায় টাকা-পয়সা চেয়েছি? যদি চেয়ে থাকি তাহলে তাঁরা প্রমাণ দেখাক। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা লিখিতভাবে জানাক। আমাকে জুতো দেখানো হয়েছে ৷ বাবা-মা তুলে কথা বলেছেন দেবজিৎ ঘোষ ৷ আমি যদি ওনাদের মেরে থাকি তাহলে প্রমাণ দেখাক।"একারণে বিকাল পর্যন্ত আইনজীবীরা চন্দননগর রেজিট্রি অফিসে বসেছিলেন। তাতে সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চন্দননগর থানার পুলিশ। দুই তরফই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
আরও পড়ুন: হাওড়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে প্রহৃত আইনজীবী