ETV Bharat / state

Anganwadi : শিশুদের স্কুলমুখী করতে বাসের আদলে অঙ্গনওয়াড়ি

বাসের আদলে আস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ৷ শিশুদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়াতে এমনই উদ্যোগ ধনিয়াখালি ব্লক প্রশাসনের ৷

শিশুদের স্কুলমুখী করতে বাসের আদলে অঙ্গনওয়াড়ি
শিশুদের স্কুলমুখী করতে বাসের আদলে অঙ্গনওয়াড়ি
author img

By

Published : Aug 29, 2021, 5:02 PM IST

ধনিয়াখালি, 29 অগস্ট : মাঠের মাঝখানে দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে একটি বাস । একঝলক দেখে মনে হবে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছে বাসটি । কাছে গেলে পরিষ্কার হবে গোটা বিষয়টি ৷ বাসের উপরে লেখা রয়েছে - মাদপুর ঘোষপাড়া সুসংহত শিশুবিকাশ কেন্দ্র ৷ অর্থাৎ যাত্রীবাহী বাস নয়, এটি একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ৷

তবে অবিকল বাসের আদলে তৈরি ৷ সিঁড়ি দিয়ে বাসের ভেতরে গেলে চোখে পড়বে ABCD থেকে শুরু করে অ-আ-ক-খ কী না রয়েছে দেওয়াল জুড়ে ৷ রয়েছে ছবির আকারে বর্ণমালা, পশু-পাখি, বিভিন্ন মাছ, ফুল-ফল ও নানা সবজি ৷ বাসে চেপে খেলার মাধ্যমে শিশুরা চিনবে সংখ্যা, জানবে মনীষীদের ৷ কোনটা কী রং, কত ধরনের আকার রয়েছে সবটুকু প্রাথমিক জ্ঞান আহরণ করতে পারবে এই অঙ্গনওয়াড়ি বাসে চাপলে ৷ খেলতে খেলতে শেখার মাধ্যমে বিকাশ ঘটবে শিশুমনের ৷ শিশুর ওজন মাপার জন্য রয়েছে ওজন যন্ত্র ৷ কিন্তু হঠাৎ এই উদ্যোগ কেন ?

আরও পড়ুন : বাস নয়, বাসা

প্রশাসন জানাচ্ছে স্কুলছুট বাচ্চাদের স্কুলমুখী করতেই এই অভিনব উদ্যোগ ৷ বিগত কয়েকবছর ধরে ধনিয়াখালি ব্লকের দশঘড়া-2 গ্ৰাম পঞ্চায়েতের মাদপুর ঘোষপাড়ায় একটি বাড়িতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলত ৷ কিন্তু পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল খুবই কম ৷ মাত্র 10-15 জন ৷ তাই ছোট ছোট পড়ুয়াদের পড়াশোনায় উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি কাটলে তারা যাতে স্কুলমুখী হয়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে প্রশাসন ৷ তাঁদের ধারণা এমন একটা কিছু তৈরি করতে হবে, যাতে পড়ুয়ারা নিজে থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী হয় ৷ তার ফলস্বরূপ আস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকেই মাঠের মাঝখানে বাসের আকারে তৈরি করা হয়েছে ৷

জানলা থেকে দরজা, এমনকি চাকাও হুবহু তৈরি করা হয়েছে বাসের আদলে ৷ ফলে মাদপুর ঘোষপাড়া সুসংহত শিশু বিকাশ কেন্দ্রটি যেমন বাইরে থেকে মনোগ্রাহী হয়েছে, তেমনই ভিতরের দেওয়াল যেন বইয়ের পাতার মতো নানা রঙে রঙিন ৷ বাসে উঠে যেদিকেই তাকাবে সেখানেই শিখবে অনেক কিছু ৷ খেলার মধ্যে দিয়ে কচি মন একটু একটু করে জানবে নিজের পরিবেশকে ৷

চতুর্দশ অর্থ কমিশন, এমজিএনআরইজিএ এবং রাজ‍্যের অনগ্ৰসর শ্রেণিকল‍্যাণ দফতরের যৌথ উদ‍্যোগে প্রায় 12 লাখ টাকা ব‍্যয়ে তৈরি হয়েছে এই অঙ্গনওয়াড়ি বাস ৷ বাসের মেঝেই যেখানে বসে বাচ্চারা পড়াশোনা করবে সেটিও খুব সুন্দর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন । বাসের ভিতরেই রয়েছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা ৷

বাসের আদলে অঙ্গনওয়াড়ি

আরও পড়ুন : YouTube Channel : 150টি দেশের নেট মাধ্যমে চর্চার বিষয় বীরভূমের ইউটিউবার দিদা !

শুধুমাত্র বাসে চড়বে বলে পড়ুয়ার সংখ‍্যা দ্বিগুণ হয়েছে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিতে । বর্তমানে প্রায় 40 জন পড়ুয়া ‌হয়েছে এই কেন্দ্রে ৷ যে বাচ্চারা আগে স্কুলে আসতে কান্নাকাটি করত, এখন তারাই এখানে আসতে চেয়ে কান্নাকাটি করে । আশেপাশের অন্যান্য গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি ছেড়ে শিশুরা বাসের টানে এখানে আসছে ৷

এই বিষয়ে ধনিয়াখালি ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌভিক ঘোষ বলেন, "মূলত শিশুমনের বিকাশ ঘটানোর জন্য এই নতুন চিন্তাভাবনা । গ্রামের মধ্যে বাস দেখে গ্রামের মানুষ থেকে পড়ুয়ারাও খুব আনন্দিত । আগামীদিনে ট্রেনের মডেল-সহ আরও বিভিন্ন ধরনের মডেলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে ৷"

দশঘড়া-2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় আহেরী জানান, দশঘড়ার এই এলাকায় মূলত সকলেই মাঠের কাজের সঙ্গে যুক্ত ৷ সকালে মাঠের কাজে বেরিয়ে যাওয়ায় বাচ্চাদের দেখাশোনার সময় পান না ৷ মাঠের মাঝখানে এই বাসের মধ্যে পড়াশোনা চালু হওয়ায় সকলেই খুশি ৷ কাজ করতে করতেও তাঁরা এসে দেখে যেতে পারবেন বাচ্চাদের ৷ তবে এর আগেও প্লাস্টিকের বোতল ও ভাঁড় দিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি করেছি আমরা । এখন এই বাসের আদলে অঙ্গনওয়াড়ি তৈরি হওয়ায় পড়ুয়া থেকে অভিভাবক ও গ্রামের বাসিন্দারা সকলেই খুশি ৷

আরও পড়ুন : করোনার তৃতীয় ঢেউ থেকে শিশুদের বাঁচাতে সতর্কতাতেই জোর চিকিৎসকদের

ধনিয়াখালি, 29 অগস্ট : মাঠের মাঝখানে দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে একটি বাস । একঝলক দেখে মনে হবে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছে বাসটি । কাছে গেলে পরিষ্কার হবে গোটা বিষয়টি ৷ বাসের উপরে লেখা রয়েছে - মাদপুর ঘোষপাড়া সুসংহত শিশুবিকাশ কেন্দ্র ৷ অর্থাৎ যাত্রীবাহী বাস নয়, এটি একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ৷

তবে অবিকল বাসের আদলে তৈরি ৷ সিঁড়ি দিয়ে বাসের ভেতরে গেলে চোখে পড়বে ABCD থেকে শুরু করে অ-আ-ক-খ কী না রয়েছে দেওয়াল জুড়ে ৷ রয়েছে ছবির আকারে বর্ণমালা, পশু-পাখি, বিভিন্ন মাছ, ফুল-ফল ও নানা সবজি ৷ বাসে চেপে খেলার মাধ্যমে শিশুরা চিনবে সংখ্যা, জানবে মনীষীদের ৷ কোনটা কী রং, কত ধরনের আকার রয়েছে সবটুকু প্রাথমিক জ্ঞান আহরণ করতে পারবে এই অঙ্গনওয়াড়ি বাসে চাপলে ৷ খেলতে খেলতে শেখার মাধ্যমে বিকাশ ঘটবে শিশুমনের ৷ শিশুর ওজন মাপার জন্য রয়েছে ওজন যন্ত্র ৷ কিন্তু হঠাৎ এই উদ্যোগ কেন ?

আরও পড়ুন : বাস নয়, বাসা

প্রশাসন জানাচ্ছে স্কুলছুট বাচ্চাদের স্কুলমুখী করতেই এই অভিনব উদ্যোগ ৷ বিগত কয়েকবছর ধরে ধনিয়াখালি ব্লকের দশঘড়া-2 গ্ৰাম পঞ্চায়েতের মাদপুর ঘোষপাড়ায় একটি বাড়িতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলত ৷ কিন্তু পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল খুবই কম ৷ মাত্র 10-15 জন ৷ তাই ছোট ছোট পড়ুয়াদের পড়াশোনায় উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি কাটলে তারা যাতে স্কুলমুখী হয়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে প্রশাসন ৷ তাঁদের ধারণা এমন একটা কিছু তৈরি করতে হবে, যাতে পড়ুয়ারা নিজে থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী হয় ৷ তার ফলস্বরূপ আস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকেই মাঠের মাঝখানে বাসের আকারে তৈরি করা হয়েছে ৷

জানলা থেকে দরজা, এমনকি চাকাও হুবহু তৈরি করা হয়েছে বাসের আদলে ৷ ফলে মাদপুর ঘোষপাড়া সুসংহত শিশু বিকাশ কেন্দ্রটি যেমন বাইরে থেকে মনোগ্রাহী হয়েছে, তেমনই ভিতরের দেওয়াল যেন বইয়ের পাতার মতো নানা রঙে রঙিন ৷ বাসে উঠে যেদিকেই তাকাবে সেখানেই শিখবে অনেক কিছু ৷ খেলার মধ্যে দিয়ে কচি মন একটু একটু করে জানবে নিজের পরিবেশকে ৷

চতুর্দশ অর্থ কমিশন, এমজিএনআরইজিএ এবং রাজ‍্যের অনগ্ৰসর শ্রেণিকল‍্যাণ দফতরের যৌথ উদ‍্যোগে প্রায় 12 লাখ টাকা ব‍্যয়ে তৈরি হয়েছে এই অঙ্গনওয়াড়ি বাস ৷ বাসের মেঝেই যেখানে বসে বাচ্চারা পড়াশোনা করবে সেটিও খুব সুন্দর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন । বাসের ভিতরেই রয়েছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা ৷

বাসের আদলে অঙ্গনওয়াড়ি

আরও পড়ুন : YouTube Channel : 150টি দেশের নেট মাধ্যমে চর্চার বিষয় বীরভূমের ইউটিউবার দিদা !

শুধুমাত্র বাসে চড়বে বলে পড়ুয়ার সংখ‍্যা দ্বিগুণ হয়েছে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিতে । বর্তমানে প্রায় 40 জন পড়ুয়া ‌হয়েছে এই কেন্দ্রে ৷ যে বাচ্চারা আগে স্কুলে আসতে কান্নাকাটি করত, এখন তারাই এখানে আসতে চেয়ে কান্নাকাটি করে । আশেপাশের অন্যান্য গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি ছেড়ে শিশুরা বাসের টানে এখানে আসছে ৷

এই বিষয়ে ধনিয়াখালি ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌভিক ঘোষ বলেন, "মূলত শিশুমনের বিকাশ ঘটানোর জন্য এই নতুন চিন্তাভাবনা । গ্রামের মধ্যে বাস দেখে গ্রামের মানুষ থেকে পড়ুয়ারাও খুব আনন্দিত । আগামীদিনে ট্রেনের মডেল-সহ আরও বিভিন্ন ধরনের মডেলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে ৷"

দশঘড়া-2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় আহেরী জানান, দশঘড়ার এই এলাকায় মূলত সকলেই মাঠের কাজের সঙ্গে যুক্ত ৷ সকালে মাঠের কাজে বেরিয়ে যাওয়ায় বাচ্চাদের দেখাশোনার সময় পান না ৷ মাঠের মাঝখানে এই বাসের মধ্যে পড়াশোনা চালু হওয়ায় সকলেই খুশি ৷ কাজ করতে করতেও তাঁরা এসে দেখে যেতে পারবেন বাচ্চাদের ৷ তবে এর আগেও প্লাস্টিকের বোতল ও ভাঁড় দিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি করেছি আমরা । এখন এই বাসের আদলে অঙ্গনওয়াড়ি তৈরি হওয়ায় পড়ুয়া থেকে অভিভাবক ও গ্রামের বাসিন্দারা সকলেই খুশি ৷

আরও পড়ুন : করোনার তৃতীয় ঢেউ থেকে শিশুদের বাঁচাতে সতর্কতাতেই জোর চিকিৎসকদের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.