শিলিগুড়ি, 5 এপ্রিল: চাকরির পরীক্ষা নিতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরা হল না শিলিগুড়ির সৌরভের ৷ পাহাড়ে আচমকা তুষারধসে চাপা পরে মৃত্যু হল বাড়ির একমাত্র সন্তানের। ঘটনায় শোকের ছায়া নামা এসেছে গোটা এলাকায়। এমনিতেই প্রবল তুষারপাতে বিধ্বস্ত প্রতিবেশী রাজ্য সিকিম। সোমোগো যাওয়ার পথে 17 মাইল এলাকার কাছে মঙ্গলবার থেকে আচমকা তুষারপাত শুরু হয়েছে ৷ চলতি মরশুমে একাধিকবার তুষারপাত হয়েছে সিকিমে ৷ মঙ্গলবার কার্যত ধসের আকার নামে। পূর্ব সিকিমে আচমকা এই তুষার ধসেই মৃত্যু হয়েছে শিলিগুড়ি পৌরনিগমের 32 নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিগড়ের বাসিন্দা সৌরভ রায় চৌধুরীর (24)। জানা গিয়েছে, তিনি এক বেসরকারি অটোমোবাইল সংস্থার কর্মী ছিলেন।
শিলিগুড়ির সেভক রোডের এক বেসরকারি চারচাকা গাড়ি সংস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে কর্মরত ছিলেন সৌরভ। শনিবার 1 এপ্রিল গ্যাংটকে আরও দুই বন্ধু ও এক বান্ধবীর সঙ্গে যান। জানা গিয়েছে, সৌরভ সংস্থার তরফে সেলস বিভাগে কর্মী নিয়োগ করার পরীক্ষা নিতে গ্যাংটকে গিয়েছিলেন। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না। কফিন বন্দি হয়ে দেহ বাড়ি আসবে। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌরভের বাবা নীলা রায়চৌধুরী বিধানমার্কেটে এক কাপড়ের দোকানে কর্মরত। সৌরভের বাড়িতে বাবা-মা ছাড়াও রয়েছেন বৃদ্ধা ঠাকুমা। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু সংবাদ পাননি তাঁর মা এবং ঠাকুমা। সৌরভের কাকা এবং মামা দেহ আনতে সিকিমে গিয়েছেন বলে খবর।
বুধবার বিকেল নাগাদ সৌরভের দেহ শহরে পৌঁছনোর কথা রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, 1 এপ্রিল শিলিগুড়ি থেকে একটি চার চাকার ছোট গাড়ি ভাড়া করে গ্যাংটকে যান সৌরভ-সহ আরও চারজন। প্রত্যেকেই একই সংস্থায় কর্মরত ছিলেন বলেই পুলিশের দাবি। তাদের দলে একজন যুবতীও ছিলেন। তিনি ভীন রাজ্যের বাসিন্দা বলেই সিকিম পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। 2 ও 3 এপ্রিল পরীক্ষার নেওয়ার পর 4 এপ্রিল তাঁরা সকলেই পূর্ব সিকিমে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আর সেখানেই 15 মাইল এলাকায় সঙ্গমো লেকের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
আরও পড়ুন: দাঁড়িভিট স্কুলে দুই ছাত্রের মৃত্যুতে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত চেয়ে মামলা হাইকোর্টে
তুষার ধসের নিচে চাপা পড়ে যান সৌরভ। পুলিশ এবং সেনা বাহিনীর চেষ্টায় প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর উদ্ধার হয় তাঁর নিথর দেহ। সৌরভের দেহ উদ্ধার করে ভারতীয় সেনা ও বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন। অন্যদিকে, গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁর আরও দুই বন্ধু এবং বান্ধবীকে সিকিমের গ্যাংটকের এসটিএনএম হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। সৌরভের বাবা নীলা রায়চৌধুরী বলেন,"পরীক্ষা নেওয়ার পর দিনই বাড়িতে ফেরার কথা ছিল সৌরভের। কিন্তু এভাবে বাড়ি ফিরবে, সে আমি স্বপ্নেও তা ভাবতে পারিনি।" প্রসঙ্গত, প্রবল তুষার ধসের কারণে এখনও 17 মাইল এলাকায় আটকে আছেন প্রায় 150 পর্যটক ৷ দ্রুত গতিতে তাঁদের উদ্ধারের কাজে সিকিম পুলিশের সঙ্গে নেমেছে সেনাও ৷