শিলিগুড়ি, 12 মার্চ : চিতাবাঘ শিকার (Leopard Killed) করে শুধু পিকনিক হয়নি। ওই চিতাবাঘের মাংস গোটা গ্রামের মানুষ খেয়েছে। আর গোটা ঘটনাটাই জানত গ্রামবাসীরা। চিতাবাঘ শিকার এবং তার মাংস সাবার করে চিতাবাঘটির চামড়া পাচারের ঘটনায় এমনটাই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল বনদফতর তদন্তকারী আধিকারিকদের হাতে।
অন্যদিকে, গোটা ঘটনার কিনারা করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগের আধিকারিকরা। চিতাবাঘটির মৃত্যুর কারণ জানতে উদ্ধার হওয়া চামড়া নিউ আলিপুরের জুওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (Alipore Zoological Survey of India) গবেষণাগারে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবারই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এসএসবি গোয়েন্দা বিভাগ, ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো (Wildlife Crime Control Bureau) ও ঘোষপুকুর রেঞ্জের বন আধিকারিকরা অভিযান চালিয়ে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের চামড়া ও চারটি পাঞ্জা-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। ফাসিদেওয়া ব্লকের ফৌজিজ্যোতে অভিযান চালিয়েছিল বন বিভাগ ও এসএসবির গোয়েন্দা বিভাগ। সেখানকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে ওই ব্লকেরই রায় লাইনের বাসিন্দা মুকেশ কেরকেট্টা ও পিতালুশ কেরকেট্টা নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় চিতাবাঘের চামড়াটি।
আরও পড়ুন : Leopard Killed : চিতাবাঘ মেরে পিকনিক ! সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিয়ে গ্রেফতার 3
কিন্তু চামড়াটি দেখে সন্দেহ হয় আধিকারিকদের। কারণ চামড়া থেকে চিতাবাঘের থাবাগুলি গায়েব ছিল। এরপর ওই দু'জনকে জেরা করা হয়। জেরায় মালবাজারের রানিচিড়া চা বাগানের বাসিন্দা তাপস খুড়া নামে আরেক যুবকের নাম উঠে আসে। তাকেও ঘোষপুকুর এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে ওইদিন বিকেলে গ্রেফতার করা হয়।
যদিও ধৃতদের দাবি মৃত অবস্থাতেই উদ্ধার হয়েছিল চিতাবাঘটি, তারা শিকার করেনি। তবে গ্রামবাসীদের প্ররোচনাতেই চিতাবাঘটির চামড়া ছাড়িয়ে মাংস রান্না করা হয়েছিল। সেই মাংস খেয়েছিল গোটা গ্রামের মানুষ। আর এতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ বন আধিকারিকরা। এই ঘটনায় গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু হতে পারে বলে জানা গিয়েছে বনদফতর সূত্রে।
ধৃত পিতালুশ কেরকেট্টা বলে, "আমরা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন গ্রামে ভিড় দেখি। দেখিযে একটি চিতাবাঘ পরে রয়েছে। সেই সময় গ্রামের কয়েকজন বলে মৃত চিতাবাঘটির সম্পর্কে বেশি যেন কেউ কিছু জানতে না পারে।"
আরও পড়ুন : নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে মেয়র গৌতম দেবের বাড়িও ঘেরাও করে বিক্ষোভ টোটোচালকদের
আরেক ধৃত মুকেশ কেরকেট্টা বলে, "চামড়া আমাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে। আমরা মাংস খাইনি। কিন্তু গ্রামের সব মানুষ খেয়েছে। আমরা জানতাম না যে বনবিভাগকে জানাতে হত।" ঘোষপুকুর রেঞ্জের রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া বলেন, "তারা শিকার করেছে না মৃত অবস্থায় চিতাবাঘটি পাওয়া গিয়েছে সেটা ময়নাতদন্তের পরই জানা যাবে ৷ আমরা গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখছি। তবে ওই এলাকায় যে চিতাবাঘ ছিল তা গ্রামবাসীরা জানত।"