ETV Bharat / state

NBU Students Agitation: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার হস্টেলের রান্না বন্ধ করল কর্তৃপক্ষ, চরমে বিশৃঙ্খলা

নজিরবিহীন ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে । প্রত্যাশামতোই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার কারণে বন্ধ হল আবাসিকদের মেসের খাবার। সকাল থেকে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের (Students Agitation in North Bengal University) ।

author img

By

Published : Mar 15, 2023, 5:02 PM IST

Etv Bharat
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা
পড়ুুয়াদের হস্টেলের রান্না বন্ধ করল বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ

দার্জিলিং, 15 মার্চ: আশংকা ছিলই ৷ আর চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই সেই আশংকা বাস্তব রূপ ধারণ করল ৷ ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার 'ইটিভি ভারতে'ই প্রথম উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (North Bengal University) অচলাবস্থার ছবি প্রকাশিত হয় ৷ কয়েকমাস ধরে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসার না-থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজ যে স্তব্ধ হতে বসেছে সেই ছবি তুলে ধরা হয়েছিল। আর সেই খবরের রেশ ধরে ঠিক একদিনের মাথায় বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্য়ালয়ে চরম অচলাবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেয় পড়ুয়ারা ৷ যার জেরে এদিন সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ হল পড়ুয়াদের খাবার। বন্ধ হল মেসের রান্নাও।

এই ঘটনা ছাত্র বিক্ষোভে ঘৃতাহুতির কাজ করেছে ৷ রান্নার কাজ বন্ধ হতেই 'ওয়াচ এন্ড ওয়ার্ড' বিভাগে তালা মেরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে রামকৃষ্ণ হল হোস্টেলের আবাসিক পড়ুয়ারা। আর ছাত্র বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ছাত্র বিক্ষোভের জেরে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবতীয় প্রশাসনিক শিকেয় ওঠার জোগাড় ৷ এদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, ফিনান্স অফিসার না-থাকায় হোস্টেল পরিচালনার জন্য় বরাদ্দ টাকা মেলেনি ৷ ফলে মেসের রান্না বন্ধ করা হচ্ছে। আর তার পরই ছাত্র ও আবাসিকরা ক্ষোভে ফেটে পরে।

বিষয়টি নিয়ে রামকৃষ্ণ হল হোস্টেলের এক আবাসিক বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, "আমাদের না-জানিয়ে আচমকা মেসের রান্না বন্ধ করা হয়েছে। আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে মেসের খাবার খাই। অথচ আজকে সকালে মেস বন্ধ করে দেওয়া হল। এভাবে চলবে না। মেস চালু না-হলে আমাদের বিক্ষোভ চলবে। দ্রুত সব বিষয়ের সমাধান না-হলে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেব আমরা।" অন্য় আবাসিক ছট্টু দাস বলেন, "আধিকারিক না-থাকায় মেস বন্ধ করা হয়েছে। এর জন্য় আমরা অসুবিধা কেন ভোগ করব? বিষয়টা কর্তৃপক্ষের দেখা উচিৎ ছিল। আমরা কি না খেয়ে থাকব ?" উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম রেজিস্ট্রার স্বপন কুমার রক্ষিত বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল। প্রথম থেকেই আমরা এই অচলাবস্থার বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলাম। প্রতিনিয়ত উচ্চ শিক্ষা দফতর বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও কোন সদুত্তর মেলেনি। একটা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ছাড়া চলতে পারেনা। সঙ্গে রেজিস্ট্রার ও ফিন্যান্স অফিসারের মতো আধিকারিকদের পদও ফাঁকা। ফলে এই ধরনের অচলাবস্থা নিশ্চিত ছিল। তবে আমরা বাকি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।"

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে দশটি হোস্টেল রয়েছে। এর মধ্যে সাতটি হোস্টেলে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই দশটি হোস্টেলের মধ্যে সব থেকে বড় হোস্টেল 'রামকৃষ্ণ হল'। বিশ্ববিদ্য়ালয় সূত্রে খবর, শুধু মাত্র ওই একটি হস্টেল পরিচালনা করতেই মাসে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়। কিন্তু ফিন্য়ান্স অফিসার না থাকায় বরাদ্দের সেই টাকা মেলেনি। যে কারণে এদিন সকাল থেকে ভাতের দাবিতে পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। থালার মধ্যে বালি, পাথর রেখেও বিক্ষোভ দেখানো পয় ৷ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের নিরাপত্তা দফতরের মূল বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছাত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগের চাবি থাকে ওই বিভাগে। পড়ুয়ারা সংশ্লিষ্ট বিভাগে তালা মেরে দেওয়ায় কোন বিভাগই আজ খুলবে না বলে বিশ্ববিদ্য়ালয় সূত্রে খবর।

বিক্ষোভ থামাতে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম রেজিস্ট্রার স্বপন কুমার রক্ষিত। তবে তাতে কোনও লাভ হয়নি। বিক্ষোভে অনড় থাকে আবাসিকরা। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রর মেয়াদ শেষ হয়েছে 25 জানুয়ারি। শেষ ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার সুখেন্দ্র নারায়ণ সাহা গত 25 ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। 28 ফেব্রুয়ারি থেকে নেই কোন রেজিস্ট্রার বা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। শেষ ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ছিলেন নূপুর বিশ্বাস। অন্য়দিকে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠকে বসে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের কর্মচারি সমিতি ৷ বৈঠকের পর কর্মচারি সমিতির তরফে জানানো হয়, পড়ুয়াদের দু'দিনের খাওয়ারের জন্য় 20 হাজার টাকা দেওয়া হবে ৷

পড়ুুয়াদের হস্টেলের রান্না বন্ধ করল বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ

দার্জিলিং, 15 মার্চ: আশংকা ছিলই ৷ আর চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই সেই আশংকা বাস্তব রূপ ধারণ করল ৷ ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার 'ইটিভি ভারতে'ই প্রথম উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (North Bengal University) অচলাবস্থার ছবি প্রকাশিত হয় ৷ কয়েকমাস ধরে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসার না-থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজ যে স্তব্ধ হতে বসেছে সেই ছবি তুলে ধরা হয়েছিল। আর সেই খবরের রেশ ধরে ঠিক একদিনের মাথায় বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্য়ালয়ে চরম অচলাবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেয় পড়ুয়ারা ৷ যার জেরে এদিন সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ হল পড়ুয়াদের খাবার। বন্ধ হল মেসের রান্নাও।

এই ঘটনা ছাত্র বিক্ষোভে ঘৃতাহুতির কাজ করেছে ৷ রান্নার কাজ বন্ধ হতেই 'ওয়াচ এন্ড ওয়ার্ড' বিভাগে তালা মেরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে রামকৃষ্ণ হল হোস্টেলের আবাসিক পড়ুয়ারা। আর ছাত্র বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ছাত্র বিক্ষোভের জেরে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবতীয় প্রশাসনিক শিকেয় ওঠার জোগাড় ৷ এদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, ফিনান্স অফিসার না-থাকায় হোস্টেল পরিচালনার জন্য় বরাদ্দ টাকা মেলেনি ৷ ফলে মেসের রান্না বন্ধ করা হচ্ছে। আর তার পরই ছাত্র ও আবাসিকরা ক্ষোভে ফেটে পরে।

বিষয়টি নিয়ে রামকৃষ্ণ হল হোস্টেলের এক আবাসিক বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, "আমাদের না-জানিয়ে আচমকা মেসের রান্না বন্ধ করা হয়েছে। আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে মেসের খাবার খাই। অথচ আজকে সকালে মেস বন্ধ করে দেওয়া হল। এভাবে চলবে না। মেস চালু না-হলে আমাদের বিক্ষোভ চলবে। দ্রুত সব বিষয়ের সমাধান না-হলে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেব আমরা।" অন্য় আবাসিক ছট্টু দাস বলেন, "আধিকারিক না-থাকায় মেস বন্ধ করা হয়েছে। এর জন্য় আমরা অসুবিধা কেন ভোগ করব? বিষয়টা কর্তৃপক্ষের দেখা উচিৎ ছিল। আমরা কি না খেয়ে থাকব ?" উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম রেজিস্ট্রার স্বপন কুমার রক্ষিত বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল। প্রথম থেকেই আমরা এই অচলাবস্থার বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলাম। প্রতিনিয়ত উচ্চ শিক্ষা দফতর বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও কোন সদুত্তর মেলেনি। একটা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ছাড়া চলতে পারেনা। সঙ্গে রেজিস্ট্রার ও ফিন্যান্স অফিসারের মতো আধিকারিকদের পদও ফাঁকা। ফলে এই ধরনের অচলাবস্থা নিশ্চিত ছিল। তবে আমরা বাকি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।"

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে দশটি হোস্টেল রয়েছে। এর মধ্যে সাতটি হোস্টেলে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই দশটি হোস্টেলের মধ্যে সব থেকে বড় হোস্টেল 'রামকৃষ্ণ হল'। বিশ্ববিদ্য়ালয় সূত্রে খবর, শুধু মাত্র ওই একটি হস্টেল পরিচালনা করতেই মাসে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়। কিন্তু ফিন্য়ান্স অফিসার না থাকায় বরাদ্দের সেই টাকা মেলেনি। যে কারণে এদিন সকাল থেকে ভাতের দাবিতে পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। থালার মধ্যে বালি, পাথর রেখেও বিক্ষোভ দেখানো পয় ৷ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের নিরাপত্তা দফতরের মূল বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছাত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগের চাবি থাকে ওই বিভাগে। পড়ুয়ারা সংশ্লিষ্ট বিভাগে তালা মেরে দেওয়ায় কোন বিভাগই আজ খুলবে না বলে বিশ্ববিদ্য়ালয় সূত্রে খবর।

বিক্ষোভ থামাতে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম রেজিস্ট্রার স্বপন কুমার রক্ষিত। তবে তাতে কোনও লাভ হয়নি। বিক্ষোভে অনড় থাকে আবাসিকরা। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রর মেয়াদ শেষ হয়েছে 25 জানুয়ারি। শেষ ভারপ্রাপ্ত ফিনান্স অফিসার সুখেন্দ্র নারায়ণ সাহা গত 25 ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। 28 ফেব্রুয়ারি থেকে নেই কোন রেজিস্ট্রার বা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। শেষ ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ছিলেন নূপুর বিশ্বাস। অন্য়দিকে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠকে বসে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের কর্মচারি সমিতি ৷ বৈঠকের পর কর্মচারি সমিতির তরফে জানানো হয়, পড়ুয়াদের দু'দিনের খাওয়ারের জন্য় 20 হাজার টাকা দেওয়া হবে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.