দার্জিলিং, 2 সেপ্টেম্বর: শোকে বিহ্বল শৈলরানি ৷ গরীব ঘরের সাধাসিধে ছেলেটার সঙ্গে যে এই পরিণতি হবে স্বপ্নেও ভাবেনি কেউ ৷ র্যাফেল শিটের (লটারি) কারণে নবম শ্রেণির পড়ুয়ার উপর অমানবিক মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র ৷ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার মৃত ছাত্রের দেহ নিয়ে মিছিল করল পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয়রা ৷ ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে কাঠগড়ায় ওঠা দার্জিলিংয়ের ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ৷ তাঁকে শনিবার দার্জিলিং জেলা ও দায়রা আদালতে তোলা হলে 14 দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজত নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ৷
ময়নাতদন্তের পর মৃত নবম শ্রেণীর ছাত্রের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ তার দেহ নিয়ে দার্জিলিংয়েক রাস্তায় মৌন মিছিল করে প্রতিবাদ জানায় পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয়রা ৷ প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ স্কুল কর্তৃপক্ষ ফান্ড সংগ্রহে কেন এবং কীভাবে এই ধরনের লটারি খেলার আয়োজন করে ? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷
স্থানীয় এক এলাকাবাসী বলেন, "এই ধরনের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই ৷ কেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ফান্ড সংগ্রহের জন্য পড়ুয়াদের লটারি বিক্রি করতে বাধ্য করবে ? তারা শিক্ষকদের বিক্রি করতে বলুক ৷ এই মানসিক নির্যাতনের জন্য একটা গরিব সাধাসিধে ছেলের প্রাণ গেল ৷"
দার্জিলিং সদর এলাকার সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত একটি স্কুলের তরফে পড়ুয়াদের র্যাফেল শিট (লটারি) বিক্রি করতে দেওয়া হয় ৷ প্রগতি গ্রামের বাসিন্দা ওই স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া চারটে শিটের মধ্যে দু’টি শিট বিক্রি করে 800 টাকা সংগ্রহ করতে পারে ৷ কিন্তু, বাকি দু’টি শিটের লটারি সে বিক্রি করতে পারেনি ৷ লটারি বিক্রি করতে না পারায় স্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়ার উপর লাগাতার মানসিক নির্যাতন চালিয়ে যায় বলে অভিযোগ ৷ কটুক্তির পাশাপাশি চলে অপমান ৷
পরিবারের অভিযোগ সেই অপমান সহ্য করতে না পেরেই, শুক্রবার রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সময় স্কুল ইউনিফর্মে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে পড়ুয়া ৷ এর পরেই পরিবারের সদস্যরা দার্জিলিং সদর থানায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷