শিলিগুড়ি, 12 জুলাই : মাত্র 10 হাজারেই মিলছে শয্যাসঙ্গী । দিনেদুপুরে শিলিগুড়িতে চলছে দেহ ব্যবসার চক্র । এই চক্র সক্রিয় ইন্টারনেটের সৌজন্যে । রয়েছে বিভিন্ন ওয়েবপেজ । আর সেই ওয়েবপেজের সূত্র ধরেই গতকাল রাতে ETV ভারতের অন্তর্তদন্তে গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ল দেহ ব্যবসার ছবি । পুলিশের জালে ধরা পড়ল চক্রের দুই পান্ডা । ধৃতদের নাম সুকুমার রায় ও নিবাস রায় । দু'জনেই কোচবিহারের বাসিন্দা ।
সুকুমার শিলিগুড়ির একটি হোটেলে বেয়ারার কাজ করে । নিবাস শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন ডাবগ্রাম-2 পঞ্চায়েতের বাসিন্দা । সে শিলিগুড়ির সেবক রোড এলাকায় একটি শপিংমলে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করে । পুলিশের নজর এড়াতে গোটা ব্যবসাটাই চলে ইন্টারনেটে । এসকর্ট সার্ভিসের নামে রয়েছে একাধিক ওয়েবপেজ । সেখানে এসকর্ট সার্ভিসের বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি থাকছে নির্দিষ্ট ফোন নম্বর । যদিও ফোন করলে সরাসরি এসকর্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব নয় । সেই নম্বরের মাধ্যমে খদ্দেরের সঙ্গে প্রথমে কথা বলবে চক্রের পান্ডা । চক্র পরিচালনা হয় কলকাতা থেকে । চক্রের পান্ডার অধীনে রয়েছে কিছু যুবক । তারা ক্যারিয়ার ও সাপ্লায়ার হিসেবে কাজ করে মোটা টাকার বিনিময়ে । সেই সঙ্গে খদ্দেরকে হোটেলে ঘর বুকিংয়ের ব্যবস্থাও করে দেয় । পুরো ব্যবসাটাই চলে ইন্টারনেট ও ফোনের মাধ্যমে । খদ্দেরকে ভরসাযোগ্য মনে হলে তার সঙ্গে দেখা করে ক্যারিয়ার ও সাপ্লায়ার । অগ্রিম অর্থ বুঝে নিয়ে খদ্দেরের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয় এসকর্টকে ।
ওয়েবপেজের সূত্র ধরে দেহ ব্যবসার পর্দা ফাঁস করতে প্রথমে আমাদের প্রতিনিধি যোগাযোগ করেন ওয়েবপেজে দেওয়া ফোন নম্বরে । সেই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় এসকর্টের দর । আমাদের প্রতিনিধি তাতে রাজি হলে ওপ্রান্ত থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মারফৎ পাঠানো হয় কিছু মেয়ের ছবি । তারপর দরদাম চূড়ান্ত করতে মোবাইল ফোনে পাঠানো হয় ক্যারিয়ারের ফোন নম্বর । তার কাজ খদ্দেরকে সাপ্লায়ারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া । সবশেষে সাপ্লায়ার খদ্দেরকে এসকর্টের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে প্রাপ্য টাকা বুঝে নেয় । এরপরেই চূড়ান্ত হয় নিরাপদ আস্তানা যেখানে খদ্দেরকে নিয়ে যাবে এসকর্ট ।
আমাদের প্রতিনিধি ক্যারিয়ারকে প্রশ্ন করেছিল পুলিশের ভয় রয়েছে কি না । কিন্তু ক্যারিয়ার জানায় পুলিশের কোনও ভয় নেই । সবটাই সেটিং থাকে । শুধু টাকা দিতে হবে চাহিদা মতো । তাহলেই এসকর্ট থেকে শুরু করে নিরাপদ স্থান সবটাই মিলবে অনায়াসে । শহর জুড়ে চলা এই দেহ ব্যবসার খবর পেতেই শিলিগুড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থানে হাজির হয়ে দুই যুবককে গতকাল রাতে গ্রেপ্তার করে ।