দার্জিলিং, 21 ফেব্রুয়ারি: ফের বনধ পাহাড়ে ৷ এবার রাজ্যের বিধানসভায় বাংলাভাগের বিরোধিতায় আনা বিল নিয়ে উত্তাল দার্জিলিঙের রাজনীতি ৷ বিল পেশের কথা ঘোষণার পরেই পাহাড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ৷ পালটা ওই বিলের বিরোধীতায় অনশনে নেমেছে পাহাড়ের বিরোধী দলের নেতারা ৷ সেই সঙ্গে 12 ঘণ্টার বনধ ডাকা হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনে (Opposition Called 12 Hours Hill Strike) ৷ অর্থাৎ, 23 ফেব্রুয়ারি ৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি থেকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, পাহাড়ে কোনও বনধ তিনি হতে দেবেন না ৷
মঙ্গলবার বাংলাভাগের বিরোধিতায় আনা বিলের বিরুদ্ধে 24 ঘণ্টার জন্য অনশনে নেমেছে জিটিএ বোর্ডের প্রধান বিরোধী দল অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টির সাত সভাসদ ৷ সেই সঙ্গে রয়েছেন বিনয় তামাং-সহ মোট 9 জন ৷ এদিন দার্জিলিংয়ের ভানু ভবনে অনশনে বসে ওই জিটিএ'র নয় সভাসদ ৷ 23 ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু ৷ আর সেই দিনেই 12 ঘণ্টার বনধের ডাক দিল বিরোধীরা ৷ যদিও ওই বনধে পাহাড়ে কোনও প্রভাব পরবে না বলে জানিয়েছেন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ'র চিফ এগজিকিউটিভ অনিত থাপা ৷
মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মাঝেই পাহাড়ে ফের বনধের ডাক দেওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে রাজনৈতিকমহল ৷ 6 বছর পর ফের পাহাড়ে কোনও রাজনৈতিক দল বনধ ডাকল ৷ এর আগে 2017 সালে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলনে নেমেছিল বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ৷ সেই সময় টানা 103 দিনের বনধ হয় পাহাড়ে ৷ সেই বনধ প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন বিনয় তামাং নিজে ৷ কিন্তু, 6 বছর পর ফের বিনয় তামাং আর অজয় এডওয়ার্ডরাই বনধের ডাক দিলেন ৷
পাশাপাশি, এদিন কার্শিয়াঙে বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বা এবং বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিজেপির তরফে পোস্টারিং করা হয় ৷ পাশাপাশি, বঙ্গভঙ্গ নিয়ে রাজ্যের অবস্থানের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে সেই পোস্টারে ৷ এদিন অনশনে বসা বিনয় তামাং জানান, রাজ্য বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী যে বিল আনা হয়েছে, তার বিরোধিতা করছেন তাঁরা ৷ আর সেই কারণেই এই 24 ঘণ্টার অনশন ৷ আর আগামী 23 ফেব্রুয়ারিতে 12 ঘণ্টার বনধ ডাকা হয়েছে ৷ তবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জরুরি পরিষেবাকে বনধের বাইরে রাখা হয়েছে ৷ বিরোধী দলগুলি জানিয়েছে, সমস্ত বাজার ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে ৷
আরও পড়ুন: নোংরা রাজনীতিতে দার্জিলিংয়ে বিজিপিএম’র বোর্ড, দাবি গুরুংয়ের
পালটা অনিত থাপা জানিয়েছেন, পাহাড়ে আরও কোনও বনধ তিনি করতে দেবেন না ৷ তিনি অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতা হারিয়েছে বলেই এসব করছে অজয় এডওয়ার্ড এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি ৷ তাঁর কথায়, ‘‘ওদের জানা উচিত সেদিন পাহাড়ের বাচ্চাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে ৷ এই বনধকে কোনওভাবেই পাহাড়বাসী সমর্থন করবে না ৷’’ পাহাড়ের বিজেপি নেতা সোনম লামা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার অবৈধভাবে ওই বিল এনেছে ৷ তারই বিরোধিতায় আমরা পাহাড় জুড়ে পোস্টার লাগিয়েছি ৷’’
বৃহস্পতিবার বনধ প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি বিনয় তামাংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন ৷ বিনয় তামাং তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন যে, পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত পরিষেবার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না ৷ তারা সকলে বনধের বাইরে ৷