শিলিগুড়ি, 29 মে: চেল নদীর উপর সেতুর দাবিতে 250 কিলোমিটার হেঁটে উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যায় ডেপুটেশন দিলেন জলপাইগুড়ির ক্রান্তি ব্লকের কোদালকাটি গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ নূর নবিবুল ইসলাম ৷ গত মঙ্গলবার এই পদযাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি ৷ তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়ক এবং সাংসদদের এলাকা ঘুরে এবং তাঁদের কাছে লিখিত আবেদন করেন ৷ বছর 25-এর এই যুবক পুরো রাস্তাটা পায়ে হেঁটে শনিবার রাতে উত্তরকন্যায় পৌঁছান মহম্মদ নূর নবিবুল ইসলাম ৷ সোমবার সকালে উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের স্পেশাল অফিসারের হাতে তাঁর দাবিপত্র তুলে দেন নূর ৷
জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ও মালবাজারের মাঝখানে রয়েছে চেল নদী ৷ কিন্তু, নদীর উপর সেতু না থাকায় ক্রান্তি ব্লকের একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ঘুরপথে মালবাজার পৌঁছাতে হয় ৷ তাতে অনেক সময় বিপদে পড়েন ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা নেমে আসে ৷ সবথেকে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় গর্ভবতী, মুমূর্ষু রোগী ও স্কুল পড়ুয়াদের ৷ তাই নয়, মালবাজারেই রয়েছে একমাত্র দমকল কেন্দ্র ৷ এছাড়া বড়-বড় স্কুল, কলেজ ও হাসপাতালও মালবাজার ব্লকে ৷ ফলে ক্রান্তিতে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দমকলের ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেও সমস্যা হয় ৷
ক্রান্তি ব্লকের বাসিন্দাদের অভিযোগ, চেল নদীর উপর সেতুর দাবিতে নূর এবং তাঁর কোদালকাটি গ্রামের বাসিন্দারা একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ৷ একের পর এক সরকারি দফতরেও গিয়েছিলেন তাঁরা ৷ কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই হয়নি ৷ এর পরেই গত মঙ্গলবার সকালে জাতীয় পতাকা নিয়ে ক্রান্তি থেকে সেতুর দাবিতে পদযাত্রা শুরু করেন নূর নবিবুল ইসলাম ৷ প্রথমে মালবাজারে যান তিনি ৷ সেখানে তাঁর সঙ্গে পা মেলান পদ্মশ্রী করিমুল হক ৷ তিনি প্রায় 2 কিলোমিটার নূরের সঙ্গে হাঁটেন ৷
আরও পড়ুন: গন্ধেশ্বরীর উপরে স্থায়ী সেতুতে বর্ষায় স্বস্তি 15টি গ্রামের বাসিন্দাদের
সেখান থেকে নূর যান রাঙামাটি এলাকায় ৷ সেখানে গিয়ে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইকের অফিসে যান ৷ যদিও, তিনি না থাকায় তাঁর দফতরে চিঠি দিয়ে আসেন ৷ সেখান থেকে বানারহাট গিয়ে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী জন বার্লার সঙ্গে দেখা করে তাঁর দাবি জানান নূর ৷ পরবর্তীতে নূর কোচবিহারে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়িতে যান ৷ তিনিও বাড়িতে না থাকায় তাঁর অফিসে চিঠি দিয়ে আসেন ওই যুবক ৷ সেখান থেকে নূর জলপাইগুড়ি শহরে পৌঁছয় ৷
আরও পড়ুন: ভাঙনের জেরে তলিয়ে যেতে পারে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র! আতঙ্কে প্রহর গুনছেন ফলতাবাসী
সেখানে বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও উনি কোনও সাড়া দেননি বলে অভিযোগ ৷ তার পরেই সটান জলপাইগুড়ি থেকে রওনা দেন উত্তরকন্যার উদ্দেশ্যে ৷ শনিবার রাতে শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যায় পৌঁছান নূর ৷ রাতে উত্তরকন্যা পৌঁছালেও উত্তরকন্যা বন্ধ থাকায় কারও সঙ্গে দেখা হয়নি ৷ আবার রবিবারও উত্তরকন্যা বন্ধ থাকে ৷ তাই সোমবার উত্তরকন্যায় গিয়ে তাঁর দাবিপত্র তুলে দেন নূর। মাঝে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীদের বাড়িতেই রাত কাটিয়েছেন ৷ নূর বলেন, "একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী আমাদের এই দাবি পূরণ করতে পারেন ৷ তাই ওনাকে চিঠি দিতে এসেছি ৷ তবে, কেউ আমাদের দাবিতে কর্ণপাত না করাতেই প্রতিবাদে হেঁটে এলাম ৷ এই দাবি খালি আমার নয় ৷ সমগ্র ক্রান্তিবাসীর কয়েক দশকের দাবি ৷"