শিলিগুড়ি, 13 মার্চ: নাবালিকাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে যৌন হেনস্তা, তারপর খুন ৷ শুধু তাই নয়, খুন করে দেহ জঙ্গলে ফেলে লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে । ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিনমাস পর মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হল শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট (Accused arrested in Minor Sexual Assault Case)। আর অভিযুক্তের গ্রেফতারির পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরে । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম মনোজ রায় । তার বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে। পেশায় সে একজন টাইলসের মিস্ত্রী।
রবিবার মাঝরাতে অসমে পালানোর চেষ্টা করে সে ৷ সেই সময় তাকে বাংলা-অসম সীমানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ । ধৃতকে সোমবার শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয় । আদালতের কাছে 14 দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। এই বিষয়ে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শুভেন্দ্র কুমার বলেন, "তিনমাস ধরে ধৃতের খোঁজ চলছিল। কোনও জায়গায় দুই থেকে তিনদিনের বেশি থাকত না সে। বিভিন্ন রাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছিল । রবিবার রাতে বাংলা-অসম সীমানা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় । মূলত ভুটানে পালানোর পরিকল্পনা ছিল তার। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"
প্রসঙ্গত, 2022 সালের 12 ডিসেম্বর শিলিগুড়ি সংলগ্ন সুকন্যা জঙ্গলে এক নাবালিকার পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। পরে ওই নাবালিকার পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। মৃত ওই নাবালিকা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। 6 ডিসেম্বর পরীক্ষার দিন নির্দিষ্ট সময়েই স্কুলে গিয়েছিল সে । পরীক্ষা শেষে স্কুল থেকে বের হওয়ার নিখোঁজ হয়ে যায় । পরে দেবীডাঙার একটি দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায় প্রতিবেশী প্রদীপকুমার রায়ের জামাই মনোজ ওই নাবালিকাকে বাইকে করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছে । সামগ্রিক ঘটনার ভিত্তিতে তদন্তে নামে প্রধাননগর থানার পুলিশ । ধূপগুড়িতে অভিযুক্তের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু লাভ হয়নি। এরপরই ঘটনার কিনারা করতে স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ, গোয়েন্দা বিভাগ ও প্রধাননগর থানার পুলিশকর্মীদের নিয়ে বিশেষ দল গঠন করা হয় ।
তদন্তে নেমে ওই দল কেরল, অন্ধপ্রদেশ, মণিপুর, অসম-সহ একাধিক রাজ্যে অভিযান চালায়। কিন্তু লাভ হয়নি ৷ শেষে পুলিশের হাতে ধরা পরে মনোজ রায় । প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আগে থেকেই পরিচয় থাকার সুবাদে ওই নাবালিকাকে ফুসলিয়ে ঘোরানোর নাম করে নিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত যুবক । এরপর তাকে যৌন হেনস্তা করে সুকনার জঙ্গলে তার দেহ ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় । ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা যায়, ওই নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে । তবে ওই ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: 4 বছরের শিশুর উপর যৌন অত্যাচার, কাঠগড়ায় 16 বছরের কিশোর !