দার্জিলিং, 27 ফেব্রুয়ারি: কথায় আছে, বয়স একটি সংখ্যা মাত্র । মানসিক জোর থাকলে সবকিছুই করা সম্ভব । এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল পাহাড়বাসী (Darjeeling News)। যেখানে 65 বছরের এক প্রৌঢ় লড়াই করলেন এক আস্ত চিতাবাঘের সঙ্গে (Man Overpowers Leopard)। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে পাহাড়জুড়ে । এখন ওই বৃদ্ধের বীরত্বের কাহিনী ঘুরছে পাহাড়বাসীর (Darjeeling News) মুখে মুখে ।
গল্প নয়, সত্যি: গল্প নয়, ঘটনাটি পুরোপুরি সত্যি ! ওই বীর বৃদ্ধের নাম নর বাহাদুর রাই । তিনি মিরিকের বাসিন্দা । যেমন তাঁর নাম, তেমনই তাঁর কাজ । বাহাদুরের মতো চিতাবাঘের সঙ্গে লড়াই করে প্রাণে বেঁচেছেন বাহাদুর (Hexagenerian overpowers leopard)। তাতে তিনি অবশ্য গুরুতর জখম হয়েছেন । বর্তমানে তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।
বেশকিছুক্ষণ চিতাবাঘের সঙ্গে লড়াই: মিরিকের তারাবাড়ির বাসিন্দা নর বাহাদুর রাই । শনিবার রাতে তাঁর বাড়ির কাছে তিনি ফুল বাগানে ঘাস কাটছিলেন । ঠিক ওই সময় ঝোপ থেকে আচমকা তাঁর উপর হামলা করে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ । তবে তাতে তিনি দমে না গিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পালটা চিতাবাঘটির সঙ্গে লড়াই শুরু করেন । বেশ কিছুক্ষণ লেপার্ডের সঙ্গে তাঁর লড়াই চলে । নর বাহাদুরকে কামড়ে, আঁচড়ে গুরুতর জখম করে ওই চিতাবাঘ ।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাহাদুর: এ দিকে, তাঁর চিৎকারে ততক্ষণে আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা দৌড়ে চলে আসেন । ওই সময়ই লেপার্ডটি নর বাহাদুরকে ছেড়ে পালিয়ে যায় । এরপরই তারাবাড়ির গ্রামবাসীরা দ্রুত তাঁকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান । সেখান থেকে তাকে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ।
আরও পড়ুন: পরিবারের সামনে দিয়ে নাবালিকাকে তুলে নিয়ে গেল চিতাবাঘ
নাকে গভীর ক্ষত: জানা গিয়েছে, চিতাবাঘের আক্রমণে তাঁর সারা শরীরেই আঘাত লেগেছে । তবে চিতাবাঘের থাবায় নাকে সবথেকে বেশি গভীর ক্ষত হয়েছে বাহাদুরের । হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের থেকে স্বাস্থ্যের উন্নতিও হয়েছে তাঁর । পাহাড়ের প্রায় বেশিরভাগ চা বাগানই চিতাবাঘের আবাসস্থল । মাঝেমধ্যেই চিতাবাঘের আক্রমণে চা বাগানের শ্রমিকরা জখম হন ।
বীর বাহাদুরকে কুর্নিশ স্থানীয়দের: এ বিষয়ে এলাকার বাসিন্দা লীলা থাপা বলেন, "চিৎকার শুনেই বেরিয়ে দেখি, চিতাবাঘ জঙ্গলের দিকে পালিয়ে গেল । কাকুকে কামড়ে, আঁচড়ে জখম করে দিয়েছে । তবে এই বয়সেও সাহসের সঙ্গে লড়াই করে প্রাণে বেঁচেছেন তিনি । তাঁর এই বীরত্বকে অবশ্যই সম্মান জানাই ।"
বন দফতরের অনুমান, খাবারের সন্ধানেই জঙ্গল থেকে লোকালয়ে চলে এসেছিল ওই চিতাবাঘটি । পাহাড় ও চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় চিতাবাঘের সংখ্যাও গত কয়েক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে ।