শিলিগুড়ি, 5 জুলাই: বরাবরই সোনা পাচারের জন্য নিত্যনতুন ছক এঁটে চলে পাচারকারীরা (Gold Recover In Siliguri)। কখনও জুতোর সোলে, কখনও বেল্টের গোপন চেম্বারে চলে সোনা পাচার । মূলত তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থার চোখে ধূলো দিতে অভিনব পরিকল্পনা করে থাকে পাচারকারীরা । এবার নকল আঘাতের উপরে লাগানো ব্যান্ডেজের আড়ালে সোনা পাচারের অভিনব পরিকল্পনা ভেস্তে দিল কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ (ডিআরআই)।
ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে ডিআরআই আধিকারিকরা । ধৃতদের সোমবার শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয় । ধৃতদের জামিনের আবেদন খারিজ করে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক । উদ্ধার হয়েছে প্রায় এক কেজি সোনা ও নগদ 32 লক্ষ টাকা ।
সরকারি আইনজীবী রতন বণিক বলেন, "কোমরে নকল ক্ষতের ব্যান্ডেজের আড়ালে ওই সোনা লুকিয়ে পাচারের ছক কষেছিল পাচারকারীরা । ঘটনায় এক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছে । আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।" ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা ঝাড়খন্ডের কোদারমা জেলার সেলারির বাসিন্দা শাহাদাত হুসেন ও জলপাইগুড়ি জেলার দিনবাজারের মারওয়ারিপট্টির বাসিন্দা সুরেন্দ্রকুমার শাহ । সুরেন্দ্রকুমার পেশায় স্বর্ণব্যবসায়ী । ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে ডিআরআই আধিকারিকদের হাতে । এর আগে মূলত ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত পার হয়ে সোনা ভারতে প্রবেশ করত তারা । কিন্তু একাধিক অভিযানে পাচারকারীদের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় এবার থেকে ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়ে সোনা ভারতে প্রবেশ করত শুরু করেছে ।
আরও পড়ুন: অন্তর্বাসে লুকিয়ে পৌনে 2 কোটি টাকার সোনা পাচারের চেষ্টা, শিলিগুড়িতে গ্রেফতার 1
শনিবার ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত পার করে কোচবিহারে পৌঁছয় প্রায় এক কেজির সোনা । সেখান থেকে হাতবদল হয়ে সোনা দিনবাজারের স্বর্ণব্যবসায়ী সুরেন্দ্রকুমারের পৌঁছয় । এরপর সুরেন্দ্রকুমার শাহাদাত হুসেনকে ওই সোনা শিলিগুড়ি হয়ে বিহারের পটনার উদ্দেশ্যে পাচারের জন্য দায়িত্ব দেয় । শাহাদাত হুসেন পুলিশ ও গোয়েন্দাদের চোখে ধূলো দিতে সোনা কোমরে নকল ব্যান্ডেজের আড়ালে ওই দু'টি সোনার বাঁট লুকিয়ে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার বাস ধরে ।
গোপনসূত্রে খবর পেয়ে শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডে ওই বাসে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজনকে ধরে ফেলে ডিআরআই । তাকে ডিআরআই অফিসে নিয়ে গিয়ে তল্লাশি চালালে ব্যান্ডেজ দেখতে পান অফিসারেরা । জিজ্ঞেস করলে শাহাদাত জানায় তার কোমরে ক্ষত রয়েছে । যাচাইয়ের জন্য ব্যান্ডেজ খুললেই তার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে দু'টি সোনার বাঁট ।