শিলিগুড়ি, 1 মার্চ: রাজ্যজুড়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে অ্যাডিনোভাইরাস। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে দিনকে দিন শিশুমৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রাজ্যের তরফে নির্দেশিকা জারি করে সতর্ক করা হয়েছে হাসপাতালগুলিকে। কিন্তু অ্যাডিনোভাইরাস মোকাবিলায় উত্তরের চিকিৎসা পরিকাঠামো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল স্বাস্থ্য বিভাগের একাংশ থেকে জনপ্রতিনিধিরা। চিন্তায় চিকিৎসামহল (Doctors are Worried over Increasing Adenovirus Cases)।
চিকিৎসার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো থাকলেও উত্তরবঙ্গে অ্যাডিনোভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের নমুনা পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থাই নেই। আর এতেই অ্যাডিনোভাইরাসের চিকিৎসা করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসকদের। শুধু তাই নয়, অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্তদের উত্তরবঙ্গ বা উত্তরবঙ্গের আট জেলার কী পরিস্থিতি রয়েছে, সেই বিষয়টিও জানা যাচ্ছে না-বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বুধবার অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিষয়ে খতিয়ে দেখতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে যান শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। আর পরিদর্শনের পর চিকিৎসা পরিকাঠামো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। এদিন তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শঙ্কর ঘোষ বলেন, "উত্তরবঙ্গে অ্যাডিনোভাইরাসের পরীক্ষার কোনও পরিকাঠামো নেই । ফলে এখন অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্তের পরিস্থিতি কী রয়েছে, সেটা জানা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, "দ্রুত নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো তৈরি করা উচিত স্বাস্থ্য দফতরের। সেজন্য আমি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেব। পাশাপাশি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বিষয়টি জানাব।" এই বিষয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার চন্দন ঘোষ হলেন, "এখনও পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে অ্যাডিনোভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা হয় না ৷ এখান থেকে নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে কলকাতায় পাঠানো হয়। তবে এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি উদ্বেগের নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।"
আরও পড়ুন: বাঁকুড়ায় অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত 70 জন শিশু, চিন্তায় চিকিৎসকরা
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাইনোভাইরাস, অ্যাডিনোভাইরাস-সহ একাধিক ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো গড়তে প্রত্যেকটি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে 15 লক্ষ টাকা 2021 সালে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতালের ভাইরাল রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গনস্টিক ল্যাবরেটরিতে ওই পরিকাঠামো গড়ে তোলার কথা ছিল। পিসিআর কিটের জন্য তিনবার টেন্ডার ডাকা হলেও কোনও সাড়া মেলেনি ৷ ফলে 2022 সালের অক্টোবর মাসে সেই টাকা ফেরত চলে যায়। ফলে বর্তমানে অ্যাডিনোভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের উপর ভরসা করে থাকতে বাধ্য হচ্ছে উত্তরের সমস্ত হাসপাতাল। রিপোর্ট আসতে দেরি বা উত্তরবঙ্গের কোনও হাসপাতাল থেকে অ্যাডিনোভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে না।