গ্যাংটক, 7 এপ্রিল: তুষারধসের পর এবার করোনার বাড়-বাড়ন্ত ৷ পর্যটকদের পাশাপাশি সিকিমবাসীর জন্য ফের করোনার বিধিনিষেধ লাগু করল সিকিম সরকার ৷ একদিনে করোনায় আক্রান্ত 23 জন ৷ চলতি বছরে এই প্রথম একদিনে এতজন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে সিকিম স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে ৷ সেই কারণে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি পর্যটনমহলও । বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটক ও সাধারণ মানুষের জন্য করোনা বিধিনিষেধ কড়াভাবে লাগু করেছে সিকিম সরকার ।
সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত 24 ঘণ্টায় সিকিমে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে 23 জন । যা এই বছরে সর্বোচ্চ সংক্রমিতের হার। গত 4 দিনে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকেই 11 জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছে । বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা মোট 42 জন ৷ এছাড়া দু’জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে । আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েকজন পর্যটকও রয়েছেন । তাদেরকে আইসোলেশনে যেতে বলা হয়েছে ।
সিকিমের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের সচিব শিওয়াং গ্যাচচো বমোই নির্দেশিকা জারি করেছেন । নির্দেশিকাতেই উল্লেখ করা হয়েছে, এখন থেকে সিকিমে মাস্ক বাধ্যতামূলক । এছাড়া ভীড় এলাকা এড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষকে । মেনে চলতে বলা হয়েছে অন্তত ছয় ফুটের ন্যূনতম দুরত্ব । সর্দি, কার্শি, জ্বর হলে আইসোলেশনে যেতে বলা হয়েছে । এই মুহূর্তে সিকিমে অন্তত 6 থেকে 8 হাজার পর্যটক রয়েছেন । পর্যটকের কোনও অংশ সংক্রমণ নিয়ে ফিরলে পরিস্থিতি বেগতিক হতে পারে বলে আশঙ্কা পর্যটনমহলের ।
আরও পড়ুন: চাকরির পরীক্ষা নিতে গিয়ে তুষারধসে প্রাণ গেল সৌরভের
সম্প্রতি সিকিমের সোমোগো লেকের কাছে 15 মাইল এলাকায় তুষারধসে মৃত্যু হয়েছে 7 পর্যটকের । সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না-উঠতেই করোনার চোখরাঙানি ৷ যা সিকিমের পর্যটন শিল্পে আঘাত হানবে ৷ এর আগে লকডাউনের কারণে দু'বছরে কয়েক শো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে সিকিমের পর্যটন শিল্পে । কারণ সিকিমের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির মূল ভিত্তিই হল পর্যটন । করোনার প্রকোপ সামলে সবেমাত্র ফের দেশ-বিদেশের পর্যটকরা সিকিমমুখী হতে শুরু করেছিল ৷ কিন্তু করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে আগামীতে ফের পর্যটন শিল্প ধাক্কা খাবে ৷ শুধু তাই নয় । সিকিমের করোনা পরিস্থিতির কারণে পরে প্রভাব পরতে পারে শৈলশহর দার্জিলিং ও কালিম্পঙে ।
হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্রাভেল ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, "বিগত দিনে করোনা পর্যটনে একটা বড় খারাপ প্রভাব ফেলেছে । যে কারণে আতঙ্ক একটু হলেও কাজ করে । তবে এখনও সেরকম চিন্তার কিছু নেই ৷ বিধিনিষেধ মেনে চললে চিন্তার কিছু নেই । তবে পরিস্থিতির উপর আমরাও নজর রাখছি ।"
