দার্জিলিং, 18 এপ্রিল : অবশেষে অনশন প্রত্যাহার করলেন হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডস ও তাঁর স্ত্রী নম্রতা এডওয়ার্ডস । রঙ্গীতের কাঞ্চনভিউ চা বাগানের শ্রমিকদের আন্দোলনের সমর্থনে চারদিন ধরে অনশন আন্দোলন করছিলেন তাঁরা ৷ সোমবার দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে চা বাগান শ্রমিকদের দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে অনশন আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন অজয় এডওয়ার্ডস ও তাঁর স্ত্রী নম্রতা এডওয়ার্ডস (Ajoy Edwards ends hunger strike) । প্রশাসনের আশ্বাস পেয়ে খুশি চা বাগান শ্রমিকরাও ৷
সামনেই কার্শিয়াং ও মিরিক পৌরসভার নির্বাচন রয়েছে । তার আগে চা বাগান শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে পাহাড়ে অজয় এডওয়ার্ডসয়ের এই আন্দোলন হামরো পার্টিকে বাড়তি অক্সিজেন দেবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ সোমবার সকালে কাঞ্চনভিউ চা বাগানের জটিলতা নিয়ে দার্জিলিংয়ের চিতরেতে বৈঠকে বসেন হামরো পার্টির প্রতিনিধি, চা বাগান কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও শ্রম দফতরের আধিকারিকরা । এদিনের বৈঠকে এদিন হামরো পার্টির তরফে চা বাগান শ্রমিকদের স্বার্থে নয় দফা দাবির কথা তোলা হয়, এর মধ্যে সাতটি দাবি দ্রুত পূরণের আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন । প্রসঙ্গত, অনশনের আন্দোলনের পাশাপাশি চা বাগানের শ্রমিকদের স্বার্থে গোটা বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন অজয় এডওয়ার্ডস । তারপরই এই সমস্যা সমাধানে তৎপরতা দেখা যায় জেলা প্রশাসনের মধ্যে ৷
আরও পড়ুন : বিজেপিতে অব্যাহত হোয়াটসঅ্যাপ বিদ্রোহ, এবার গ্রুপ ছাড়লেন বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ
প্রশাসন এদিন চা বাগান শ্রমিকদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়ায় হামরো পার্টির সহ-সভাপতি প্রমোস্কার ব্লোন বলেন, "এই জয় দলের জয় নয় । এই জয় চা বাগানের শ্রমিকদের জয় । অজয় এডওয়ার্ডস ও তাঁর স্ত্রীর আমরণ অনশন আন্দোলনের কাছে জেলা প্রশাসন ও মালিকপক্ষ নতিস্বীকার করেছে । নয় দফা দাবির মধ্যে সাতটি দাবি পূরণের আশ্বাস মিলেছে । সেই জন্য অনশন প্রত্যাহার করলেন তাঁরা ।" নিয়মিত পিএফ, গ্র্যাচুইটি-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন রঙ্গীতের কাঞ্চনভিউ চা বাগানের শ্রমিকরা ৷
2008 সালে কাঞ্চনভিউ চা বাগানের লিজ নেয় আগরওয়াল গ্রুপ । আর তারা চা বাগান হাতে নিতেই টানা চার বছরের জন্য বন্ধ হয়ে যায় বাগানটি । শুধু তাই নয়, 2008 সাল থেকে 2022 পর্যন্ত মোট 12 বার বন্ধ হয়েছে বাগানটি । এতে চা বাগানের শ্রমিকদের আর্থিক সংকোটের মুখে পড়তে হয়েছিল । এবার রাজ্য সরকারের টি ট্যুরিজম আইনের অজুহাতে ফের একবার বাগান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় মালিকপক্ষ । শুধু তাই নয়, চা বাগানে কর্মরত প্রায় শতাধিক শ্রমিকের বহু বছরের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটির টাকাও বকেয়া রয়েছে । এইসবের প্রতিবাদেই বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন চা বাগানের শ্রমিকরা ৷ এরই মাঝে টি ট্যুরিজমের নামে বাগানের 600 একর জমির মধ্যে 22 একর জমিতে থাকা সবথেকে ভাল চা গাছ উপড়ে ফেলা হয় বলেও অভিযোগ ৷ আরও 45 একর জমিতে থাকা ভাল চা গাছ উপড়ে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে মালিকপক্ষ । এই গাছগুলি উপড়ে নিলে চা বাগান বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয় চা বাগান শ্রমিকদের মনে । যার জেরে শ্রমিকদের এই আন্দোলন আরও বেশি করে দানা বাঁধে ৷