তপন, 23 জুন : 100 দিনের কাজের টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে । অভিযোগ, যারা ১০০ দিনের কাজ করেছেন তাঁদের অ্যাকাউন্টে না ঢুকে টাকা ঢুকছে অন্যদের অ্যাকাউন্টে । এবিষয়ে তপন ব্লকের BDO-র কাছে লিখিত অভিযোগ জমা করেছে BJP । যদিও বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান পরমানন্দ বিশ্বাস ।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের অন্তর্গত আউটিনা গ্রাম পঞ্চায়েত । পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে ১১টি তৃণমূলের ও ১টি বামফ্রন্টের দখলে । অভিযোগ, ২০১৮ সালে ১০০ দিনের কাজ করার পরও এই পঞ্চায়েতের জবকার্ডধারী বহু দরিদ্র মানুষ টাকা পাননি । অথচ যারা কাজ শুরুর অনেকদিন আগে মারা গেছে তাদের নামে কাজ দেখিয়ে অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে টাকা ।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে অনলাইন থেকে টাকা প্রাপকের নামের তালিকা বের করে স্থানীয় BJP নেতৃত্ব । তা দেখার পর চক্ষু চড়কগাছ । তথ্য অনুযায়ী, যাদের অ্যাকাউন্টে 100 দিনের কাজের টাকা ঢুকেছে তাদের মধ্যে প্রায় 25 জনের জব কার্ড নেই । এখানেই শেষ হয়ে যায়নি । তালিকায় রয়েছেন মৃত ব্যক্তি থেকে শুরু করে স্কুল ছাত্রী, হাতুড়ে চিকিৎসক, দিল্লি নিবাসীও । ২০১৮ সালের কাজের হিসেব অনুযায়ী একেক জনের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ১২ হাজার ২২৪ টাকা । বিষয়টি নজরে আসতেই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে BJP ।
এবিষয়ে স্থানীয় BJP নেতা মুকুল ও ভোলা বিশ্বাস জানান, অনলাইনে 100 দিনের কাজ সংক্রান্ত যে নথি পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, অন্তত ২০ থেকে ২৫টি অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হয়েছে । এদের কোনও জবকার্ডই নেই । পঞ্চায়েতের সেক্রেটারি সহ অন্যান্যরা এই আর্থিক তছরুপের সঙ্গে যুক্ত । তাঁরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে 'সমঝোতা' করে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে দিচ্ছেন । আর যাদের জবকার্ড রয়েছে তাঁরা কাজ করেও টাকা পাচ্ছেন না ।
১০০ দিনের কাজ করা দুই শ্রমিক বিশ্বনাথ ও অঞ্জলি ওরাওঁ বলেন, "আমরা অনেকদিন আগে কাজ করেছি । সেই টাকা এখনও পাইনি । বেশিরভাগ লোকই টাকা পায়নি । এই নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানকে বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি ।"
আউটিনার বাসিন্দা নীরেন সরকার । তাঁর জবকার্ড রয়েছে । তিনি জানান, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ একদিন তাঁর কাছে আসে । অ্যাকাউন্টে নীরেনবাবুর টাকা ছাড়াও তাঁর কিছু আত্মীয়ের টাকা ঢুকবে বলে জানানো হয় । সেইমতো অ্যাকাউন্টে টাকাও ঢোকে । ওই অ্যাকাউন্ট থেকে পুরো টাকা তুলে নিতে বলা হয় নীরেনকে । তারপর সেখান থেকে সবার টাকা ভাগ করে দেয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ।
এবিষয়ে কোনওরকম অভিযোগ আসেনি বলে জানান পঞ্চায়েত প্রধান পরমানন্দ বিশ্বাস । যদিও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তপনের BDO সুশান্ত মাইতি ।