মগরাহাট, 6 এপ্রিল: শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে চলেছে বিশেষভাবে সক্ষম উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মগরাহাটের বাপি ফকির (Specially abled HS candidate)। স্বপ্ন শিক্ষক হওয়ার । জন্ম থেকেই নানা সমস্যার কারণে সে হাঁটতে চলতে অক্ষম । কিন্তু সেই প্রতিবন্ধকতাকে দূরে ঠেলে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অবিচল বাপি ৷
দক্ষিণ 24 পরগনার মগরাহাটের (South 24 parganas news) ডিহিকলস সুড়িপুকুর গ্রামের বাসিন্দা বাপি ফকির । বাপি কলস হাইস্কুলে কলা বিভাগের ছাত্র । বিশেষভাবে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও রাইটার না নিয়েই বেঞ্চে শুয়ে সাবলীলভাবে উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা দিচ্ছে । মাধ্যমিকে নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে 312 নম্বর পেয়ে সে উত্তীর্ণ হয়েছিল (specially abled student appears in Higher Secondary exam)।
সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় ৷ অভাবের সংসারে নিজেই নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে হয় ৷ বাবা দিনমজুর, পাঁচ ভাই বোনের বড় সংসার । বাপি শাহজাহানের বড় ছেলে। মা সেরিনা বিবি বললেন, বাপি ছোট থেকেই হাঁটতে চলতে পারে না ৷ বহু চিকিৎসা করেও সুস্থ হয়ে ওঠেনি । অন্যান্য ছেলেরা এইরকম অবস্থায় মনোবল হারিয়ে ফেলে ৷ কিন্তু বাপি কখনও তা হতে দেয়নি ৷ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সে এগিয়ে চলার লক্ষ্যে স্থির ।
অভাবের তাড়নায় দুবেলা দুমুঠো ভাত যোগাতে হিমশিম খেতে হয় বাপির পরিবারকে । স্কুলের শিক্ষক থেকে গৃহশিক্ষক অনেকেই বাপির স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছেন । মাধ্যমিকের পর থেকেই বাপির পড়াশোনা-সহ সমস্ত খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন উস্থির স্কুলশিক্ষক সঞ্জয়কুমার দাস । বাপির বাবা জানালেন, রাজ্য সরকার বা কোনও সহৃদয় ব্যক্তিকে পাশে পেলে বাপি তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে ।
বাপি জানিয়েছে, "শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনও বাধা নয় ৷ মনের জোরকে হাতিয়ার করে আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করব । উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষা খুবই ভাল হয়েছে । 16 এপ্রিল ইতিহাস পরীক্ষা রয়েছে ৷ সেটাও ভাল করার জন্য দিনরাত এক করে পড়াশোনা চালাচ্ছি । পড়াশোনার ফাঁকে সংসারের হাল ধরতে ও নিজের খরচ চালাতে জাল তৈরির কাজও চালিয়ে যাচ্ছি সমান তালে । আগামিদিনে আমি শিক্ষক হতে চাই । শিক্ষকতার মাধ্যমে হাজার হাজার বিশেষভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের স্বপ্নপূরণ যাতে করতে পারি সেটাই আমার লক্ষ্য ।"