গঙ্গাসাগর, 12 ডিসেম্বর: আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলা ৷ 2024 সালের মকর সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হবে এই মেলা ৷ এর প্রস্তুতিতে ইতিমধ্যে অনেকটাই সম্পূর্ণ ৷ জোর কদমে চলছে প্রস্তুতির কাজ ৷ গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করা নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের দড়ি টানাটানি চলছে ৷ এর মধ্যে 2024 সালে গঙ্গাসাগর মেলাকে অন্য রূপ দিতে চায় ৷ ইতিমধ্যে গঙ্গাসাগরের মেলা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে ফেলেছে রাজ্য সরকার ৷ জেলা প্রশাসনও মেলার কাজ অনেকটাই সম্পূর্ণ করে ফেলেছে ৷ একদিকে যেমন গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে চলছে হোগলা পাতার ঘরের কাজ ৷
গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীদের ভিড় জমে এই মেলা প্রাঙ্গণে ৷ পুণ্যার্থীদের পুণ্য স্নানের জন্য ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে স্নানের ঘাট ৷ বিগত কয়েক বছরে রাজ্য সরকারের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় গঙ্গাসাগর মেলা বিশ্বের দরবারে একটা অন্য জায়গা করে নিয়েছে ৷ এদিকে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নদী বাঁধের ভাঙন ৷
নদী ভাঙনের কারণে এর আগে একবার-দুবার নয় তিন-তিনবার ভেঙেছে গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির মন্দির ৷ বর্তমানে যে জায়গায় মন্দির রয়েছে, সেখান থেকে বঙ্গোপসাগরের দূরত্ব ছিল প্রায় 1 হাজার 200 মিটার ৷ কিন্তু একাধিক বার নদীবাঁধের ভাঙ্গনের কারণে সেই দূরত্ব কমে বর্তমান এসে দাঁড়িয়েছে 400 মিটারে ৷ এভাবেই প্রতি বছর একটু একটু করে নদী বাঁধ ভেঙে এগিয়ে আসছে সমুদ্র ৷
এই পরিস্থিততে রাজ্য সরকার-সহ জেলা প্রশাসনের কাছে আগামী দিনে কপিলমুনির মন্দিরের অস্তিত্ব রক্ষা অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ এর মধ্যেও প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক হয় ৷ এরপর জেলাশাসকের নির্দেশে জোরকদমে চলছে কাজ ৷ গঙ্গাসাগর মেলার কাজ লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীদের থাকার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ওয়াচ টাওয়ার প্রশাসনিক আধিকারিকদের হোগলার ঘরের কাজ ইতিমধ্যেই অনেকটাই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে ৷
পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলার পুণ্যার্থীরা মূলত যে ঘাটে স্নান করেন, সেই ঘাট নদী বাঁধের ভাঙনে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বলাই যায় ৷ তবে বর্তমানে 1 কোটি 39 লক্ষ টাকা ব্যয়ে একদিকে যেমন নদী বাঁধের ভাঙন রোধে অস্থায়ীভাবে নদী বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে ৷ ঠিক তেমনই 43 লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী স্নানের ঘাট ৷ গঙ্গাসাগর মেলায় আগত কোনও পুণ্যার্থীকে যাতে অসুবিধের সম্মুখীন হতে না হয়, তাই জোর কদমে চলছে প্রস্তুতির কাজ ৷
এদিকে গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে ৷ বিজেপি নেতা অরুণাভ দাস অভিযোগ করেন, "প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গঙ্গাসাগর মেলার কাজ শুরু হয় ৷ অর্ধেক টাকায় কাজ হয় এবং অর্ধেক টাকা তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের পকেটে চলে যায় ৷ গঙ্গাসাগর মেলায় টাকা উপার্জন করে রাজ্য সরকার ৷ কোনও স্থায়ী সমাধান না-করে অস্থায়ীভাবে কাজ করে রাজ্য সরকার ৷"
আরও পড়ুন: