নামখানা, 16 জুন: রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে অশান্তির ছবি ধরা পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে । কেবলমাত্র মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করেই রক্ত ঝড়েছে বাংলায় । মনোনয়নের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ছ'জনের । আর তা নিয়ে মুখ খুলতে গিয়ে শুক্রবার বিজেপি, সিপিএমের পাশাপাশি কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর দাবি, রাজ্যে শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে মনোনয়ন পর্ব । কিন্তু বিরোধীরা কেবল কুৎসা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে বিরোধীরা । তবে এদিন যেভাবে বিজেপি এবং সিপিএমের সঙ্গেই একই গণ্ডিতে কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেছেন মমতা, তা নজিরবিহীন বলছে রাজনৈতিক মহল ।
আগামী সপ্তাহেই পটনায় বিরোধী জোটের বৈঠক বসছে । 23 জুন নীতীশ কুমারের ডাকে এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে । বৈঠকে কংগ্রেস সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং রাহুল গান্ধির মুখোমুখি বসার কথা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়েরও । কিন্তু তার কয়েকদিন আগেই কার্যত কংগ্রেসের সঙ্গে আগামী লোকসভা ভোটে কোন সমীকরণে তৃণমূল হাঁটবে তা এদিন মমতার বক্তব্যে স্পষ্ট হল না । তবে কোনওভাবেই যে রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল একসঙ্গে যাবে না, তার সুর এদিন কাকদ্বীপ থেকে কার্যত বেঁধে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় । একই সঙ্গে কংগ্রেসকে বিজেপির সহযোগী হিসাবেও কটাক্ষ করেন মমতা । তিনি বলেন, "কংগ্রেস তুমি অনেক রাজ্য চালিয়েছ । কংগ্রেস এবং সিপিএম বিজেপির দোসর । শুধু সংসদে আমাদের সাহায্য চায় ।"
আরও পড়ুন: বিজেপির দালাল নওশাদ, ভাঙড় নিয়ে তীব্র আক্রমণ মমতার
রাজ্যে তৃণমূল যে একা লড়াই করবে তা এদিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় । তাঁর কথায়, "আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করব, কিন্তু কংগ্রেসকে সাহায্য করব না ।" কংগ্রেসের সঙ্গেই এদিন সিপিএম এবং বিজেপির বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর কথায়, "বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর ছুতো খুঁজছে দিল্লি । এত শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন বাংলায় আগে হয়নি । সিপিএমের আমলে শ্মশানের শান্তি ছিল রাজ্যে ।" এর সঙ্গেই মমতা বলেন, "আমরা বিজেপির বিরোধিতায় তাদের সমর্থন করতে প্রস্তুত। কিন্তু সিপিএম-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলায় সমর্থন চাইতে এলে আমারা কোনওভাবেই তাদের সমর্থন করব না ।" এর আগেও অবশ্য তৃণমূলের তরফে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিকবার আক্রমণ করা হয়েছিল । এমনকী সাগরদিঘির কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় উস্মা প্রকাশ করে টুইট করেছিলেন এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ । তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ভাঙানোর অভিযোগেও সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা । এরপর এদিন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পালটা সুর চড়াতে দেখা যায় মমতাকে ।