কুলতলি, 27 ডিসেম্বর : পাঁচদিন কেটে গিয়েছে ৷ কিন্তু এখনও বন দফতরের কর্মীদের নাগালের বাইরে কুলতলির লোকালয়ে প্রবেশ করা দক্ষিণরায় (Tiger in Kultali) ৷ রবিবার রাতে কুলতলি বিভিন্ন জায়গায় বন দফতরের কর্মীরা খাঁচা পাতলেও, সেই ফাঁদে ধরা দেয়নি সে ৷ আজ সকালে কুলতলিতে পিয়ালী নদীর ধারে বাঘের নখের আঁচড়ের দাগ দেখা গেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে বাঘের খোঁজ করতে ড্রোন ওড়াল বন দফতর (Forest Department Flying Drones to Find Tiger) ৷ বন দফতরের কর্মীদের অনুমান, কুলতলির শেখ পাড়া ও আদিবাসী পাড়ার আশেপাশেই রয়েছে ওই বাঘটি ৷ কিন্তু, রাতভর জেগেও খাঁচায় পোরা যায়নি তাকে ৷ তবে, এদিন বেলায় পিয়ালী নদীর তীরে বাঘটিকে একনজর দেখা গিয়েছিল ৷ লোকজনের হইচইয়ের আওয়াজে সেখান থেকে পালিয়ে যায় সেটি ৷
যদিও বন দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, খাঁচার পরিধি ছোট করে আনা হচ্ছে ৷ গ্রামবাসীদেরও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ বন দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলেছেন বনকর্মীরা ৷ জোড়া দু’টি খাঁচার পরিধি ছোট করা হয়েছে ৷ কারণ, খাঁচার আয়তন ছোট হলে সহজে ধরা পড়বে বাঘটি ৷ খাঁচার মধ্যে রাখা হয়েছে ছাগলও ৷ শুধু তাই নয়, বাড়ানো হয়েছে ট্রাঙ্কুলাইজারের পরিমাণ ৷ গোটা এলাকায় চলছে চিরুনি তল্লাশি ৷ গ্রামবাসীদের বাড়ি থেকে বেরতে নিষেধ করা হয়েছে ৷ যাঁরা বিপদসীমার মধ্যে রয়েছেন, তাঁদের নিরাপদ আস্তানায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে প্রশাসনের তরফে ৷
আরও পড়ুন : Tiger Attack in Kultali: কুলতলিতে বাঘের হামলায় আহত 1
এই পরিস্থিতিতে বাঘ ধরা না পড়ায় রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন কুলতলির শেখপাড়ার বাসিন্দারা ৷ আদিবাসীদের অনেকেই লাঠি হাতে গ্রামের সীমানায় পাহারা দিচ্ছেন ৷ আর এতেই প্রমাদ গুনছেন বনকর্মীরা ৷ কারণ, বাঘ রাতের অন্ধকারে অতর্কিতে হামলা করলে, প্রাণ সংশয় হতে পারে মানুষজনের ৷ আর বাঘ দেখতে পেলে লাঠি হাতে গ্রামবাসীরা তাকেও আঘাত করতে পারে ৷ ফলে, ঝাড়গ্রামের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন : Tiger in Locality of Kultali : বাঘের আতঙ্কে বন্ধ হল পিয়ালী নদীর চরের পিকনিক স্পট
বন আধিকারিক, ডিএফও, কনজারভেটর অব ফরেস্ট সবাই রয়েছেন সেখানে ৷ বাঘের উপর কাজ করে এমন সংগঠনের লোকজনও হাজির হয়েছে ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার ডিএফও মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘গোটা এলাকায় বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা ৷ পাশাপাশি বাঘের উপর নজরদারি চালানোর জন্য এলাকায় উড়ানো হচ্ছে ড্রোন ৷ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বাঘটি ৷ ও একটা স্ট্রেসের মধ্যে রয়েছে ৷ ওর মধ্যেও একটা আতঙ্ক কাজ করছে ৷ সে কারণে হয়তো বাঘটা আমাদের তৈরি করা ঘেরাটোপকে এড়িয়ে নিজের জায়গায় ফেরার চেষ্টা করছে ৷ আগে শুধু খাঁচা ছিল, এবার সঙ্গে মাচাও রেখেছি ৷ কোনওভাবে ও যদি খাঁচার কাছে গিয়েও সেখানে না ঢোকে, আমাদের লোকজন মাচায় ঘুমপাড়ানি ওষুধ নিয়ে থাকবে ৷ তাঁরা চেষ্টা করবেন বাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করতে ৷’’ দক্ষিণরায়কে ধরতে বন দফতরের এত আয়োজন কত দ্রুত ফল দেয়, সেটাই এখন দেখার ৷