গঙ্গাসাগর, 23 ডিসেম্বর: বঙ্গে শীতের মরশুম শুরু হতেই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ভিড় করছেন সাইবেরিয়ার অতিথিরা ৷ তার মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ 24 পরগনার গঙ্গাসাগর এলাকার মুড়িগঙ্গা এলাকা ৷ নিশ্চয় ভাবছেন এই ঠান্ডায় আবার কারা ভিড় বাড়চ্ছে রাজ্যে ৷ কথা হচ্ছে সাইবেরিয়ার পরিয়ায়ী পাখিদের ৷ একঘেঁয়েমি কাটাতে বছরের কয়েকমাস এখানে আসে সিগাল প্রজাতির এই পরিয়ায়ী পাখিরা ৷
বিশেষত গঙ্গাসাগর মেলার সময় মুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে কচুবেরিয়া থেকে লট নম্বর 8 ফেরি ঘাট পর্যন্ত যায় অধিকাংশ ভেসেল ৷ ভেসেলে থাকা এই সব পুণ্যার্থীদের হাত খাবার খেতে থাকে এই পরিয়াযী পাখিরা ৷ এমনকী ভেসেলের পাশ দিয়ে যায় ৷ এক ঝলক দেখে মনে হবে যেন ভেসেলটিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পাখিগুলো ৷ ভেসেলে থাকা পুণ্যার্থীরা জলযান থেকে ছুড়ে দেন মুড়ি, বিস্কুট আর ভুট্টার খই ৷ সেই খাবার কাড়াকাড়ি করে খেতে শুরু করে পাখির দল ৷ এই প্রসঙ্গেই এক বাসিন্দ অরুণাভ দাস বলেন, "কচুবেড়িয়া থেকে লর্ড নম্বর 8 পর্যন্ত লম্বা সফরে পুণ্যার্থীদের সঙ্গী থাকে পরিযায়ী পাখিরা ৷ এই পাখিদের দেখতে দেখতে কখন আমরা নদীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে যায় আমরা বুঝতেই পারি না ।" তিনি আরও জানান, এক ঝলক দেখে মনে হবে যেন ভেসেলটিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পাখিগুলো ৷
সাইবেরিয়ার ঠান্ডা ছেড়ে এখানে কেন আসে এই সমস্ত পরিয়ায়ী পাখিরা? সেই প্রসঙ্গেই সময়ে পক্ষী বিশেষজ্ঞ সাথী মিত্র জানান, এই পাখিগুলি সিগাল প্রজাতির পাখি । শীতকালের যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ দেশেই বরফ পড়ে । বরফ পড়ার কারণে এই পাখিগুলি বেশি ঠান্ডার দেশ ছেড়ে তুলনামূলকভাবে কম ঠান্ডা যুক্ত আবহাওয়া চলে আসে । যা এখানে আসার অন্যতম কারণ ৷ নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এই পাখিগুলিকে সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও আরবসাগর-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা যায় ।" তবে কিছু অসাধু মানুষ ও চোরাশিকারীদর হাতে শিকার হচ্ছে এই প্রজাতির পাখি । প্রশাসনের কাছে পাখিগুলিকে চোরাশিকারি হাত থেকে রক্ষা করা । পাশাপাশি তিনি আরও উল্লেখ করেন এই পাখিগুলো যখন সুন্দরবন বনঅঞ্চয় লাগোয়া এলেকায় থাকে তার দানা জাতীয় বিশেষ খাবার খায় ৷ এই কয়েকমাস এই পাখির খাবর বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকে ৷
আরও পড়ুন: