বারুইপুর, 20 নভেম্বর: বারুইপুরের নৌসেনা কর্মী খুনের ঘটনায় উঠে এলেও চাঞ্চল্যকর তথ্য । দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়াকার খুনের ঘটনা (Shraddha Murder case) থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই দেহ কাটার সিদ্ধান্ত নেন দুই অভিযুক্ত । জেরাতে নিজেই এই কথা জানান ওই নৌসেনা-কর্মীর ছেলে । বারাইপুর পুলিশ জেলার সুপার পুষ্পা সাংবাদিকদের বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন ৷ শুক্রবার দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পরেই খুনের কারণ পরিষ্কার হয়ে যায় পুলিশের কাছে । জেরায় ওই সেনা কর্মীর ছেলে স্বীকার করেন যে উজ্জ্বল চক্রবর্তীর খুন তাঁরাই করেছেন এবং শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় তাঁকে (Ex Navy Man son and wife plot murder)।
যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরে পরিষ্কার হয়ে যায় সম্পূর্ণ চিত্র । সেই সময়েই বোঝা যায় প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় এবং তারপরে দেহের বিভিন্ন অংশ কাটা হয় । উজ্জ্বল চক্রবর্তীর দেহে মৃত্যুর পড়ে হওয়া আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যায় । জানা যায়, বিবাদের জেরে খুন করা হয় তাঁকে । উজ্জ্বল চক্রবর্তীর স্ত্রী জানান, তিনি নেশা করতেন এবং তাঁদের উপরে অত্যাচার করতেন । ছেলে জানিয়েছেন, তাঁর পরীক্ষার খরচ দেওয়া নিয়ে ঝগড়া হয় ৷ এরপরে তিনি বাবাকে ধাক্কা দেন । বাবা পড়ে গেলে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় ।
পুলিশের প্রশ্ন জাগে কেন খুনের পরেও দেহের এত টুকরো করা হয়েছে । সেই সময়েই বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসে জেরায় । উজ্জ্বল চক্রবর্তীর ছেলে দাবি করেন, খুন করা হয়ে যাওয়ার পরে তাঁরা বুঝতে পারেনি কী করতে হবে । তাঁর মা বারবার তাঁকে জিজ্ঞেস করে এবার কী করা হবে এবং দেহ নিয়ে কী করা হবে । সেই সময়েই উজ্জ্বল চক্রবর্তীর ছেলে তাঁর মাকে জানান, দিল্লির ঘটনার মতোই দেহের টুকরো করে সেগুলিকে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে করে দেওয়া হোক (Baruipur Murder Case) ।
উজ্জ্বল চক্রবর্তীর স্ত্রী ছেলেকে জানায় দেহ বাথরুমে কাটার কথা । যাতে সেখান থেকে রক্তের দাগ সরিয়ে ফেলা সহজ হয় । সেই বাথরুমেই দেহের ছয় টুকরো করা হয় । দুটি হাত এবং পা বাদে দেহের বাকি অংশ সাইকেলে করে মা এবং ছেলে মিলে পাশের পুকুর ফেলে দেন । পরবর্তী ক্ষেত্রে আরও দু'বার ছেলে নিজেই সাইকেল চালিয়ে দেহের বাকি অংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলতে শুরু করে । ইতিমধ্যেই আরও দুটি অংশ উদ্ধার হয়েছে । বাকি দেহাংশের উদ্ধারের কাজ চলছে (Ex Navy Man Murder Case) ।
আরও পড়ুন: শ্বাসরোধ করেই প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীকে খুন, দেহ 6 টুকরো করেন স্ত্রী ও ছেলে
জানা গিয়েছে, বারুইপুরের সালেপুরের প্রান্তিক আবাসনের বাসিন্দা ছিল উজ্জ্বল চক্রবর্তীর পরিবার । পাড়ার শিশুদের সঙ্গে জয় খেলতে গেলে কোনও কারণে তাদের মধ্যে মারপিট হলে উজ্জ্বল ছেলেকে শেখাতেন কীভাবে কোথায় মারতে হয় । দম্পতির বনিবনা না হলে স্ত্রীও তাঁর মতো করে ছোটবেলা থেকেই জয়কে হিংসার শিক্ষা দেন ৷ তারই প্রতিফলন এই ঘটনা বলে দাবি প্রতিবেশি তুষার সরকারের । ওই আবাসনে আরও 25টি পরিবার থাকলেও উজ্জ্বলের পরিবার কারোর সঙ্গেই কথা বলতেন না বলে জানা গিয়েছে ।