কুলতলি (দক্ষিণ 24 পরগনা), 20 ফেব্রুয়ারি: গরম এখনও সেভাবে পড়েনি ৷ তার আগেই পানীয় জলের সংকট সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় ৷ এর জেরে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী সব স্কুলগুলি ৷ আজ থেকে তিনদিনের মাথায় শুরু হচ্ছে রাজ্যের মাধ্যমিক পরীক্ষা ৷ তার আগে পানীয় জলের সংকটে ভুগছে সুন্দরবনের একাধিক স্কুল (Severe Drinking Water Crisis in Schools of Sundarbans) ৷ মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে পানীয় জলের সংকট মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৷
কুলতলির জামতলা ভগবানচন্দ্র হাইস্কুল ৷ এই স্কুলে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা 3,500 জন ৷ সেখানে নলকূপ রয়েছে আটটি, সাবমার্সাল রয়েছে পাঁচটি, হ্যান্ডপাম্প রয়েছে তিনটি ৷ কিন্তু, এত পানীয় জলের উৎস থাকলেও একটি নলকূপ বাদে, পানীয় জলের বাকি সব উৎস বিকল হয়ে রয়েছে ৷ এই বিষয় কুলতলি জামতলা ভগবানচন্দ্র হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সৈকত সাউ জানান, সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার স্কুলে গরমের আগেই পানীয় জলের কষ্ট দেখা দিয়েছে ৷
নলকূপ ও সাবমার্সালগুলি থেকে জল উঠছে না-বলে জানিয়েছেন সৈকত সাউ ৷ যার জেরে পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা সবাইকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ৷ তিনি জানান, অধিকাংশই নলকূপই বিকল হয়ে পড়ে আছে ৷ আর হাতে গোনা যে নলকূপগুলি রয়েছে, সেগুলি থেকে ঠিক মতো জল উঠছে না ৷ অভিযোগ স্কুলের সাবমার্সালগুলি থেকে এক ঘণ্টার বেশি পানীয় জল পাওয়া যায় না ৷ গ্রীষ্মকাল আসার আগে জল কষ্টের হাত থেকে যাতে পড়ুয়ারা মুক্তি পায়, সরকারের কাছে সেই আবেদন করেছেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ৷
একই রকম ছবি কুলতলি পাঁচুয়া খালি হাইস্কুলে ৷ 2500 পড়ুয়ার জন্য তিনটি গভীর নলকূপ রয়েছে স্কুলে ৷ কিন্তু, তার মধ্যে 2টি বিকল ৷ একটি মাত্র নলকূপ থেকে ঠিক মতো জল ওঠে না বলে অভিযোগ করেছেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম ৷ এই বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিডিও অফিসে অভিযোগ করেছে ৷ তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, খুব দ্রুত সমস্যার সামাধান করা হবে ৷ এখন বাধ্য হয়ে পানীয় জল আনতে পড়ুয়াদের স্কুলের বাইরে যেতে হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: পানীয় জলের সংকট, বিক্ষোভে গ্রামবাসীরা
পানীয় জলের সমস্যার অভিযোগ নিয়ে বারুইপুরের মহকুমা-শাসক সুমন পোদ্দার বলেন, ‘‘গ্রীষ্মকালের সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার বিভিন্ন স্কুলগুলি থেকে এমনই জল কষ্টের সমস্যা হয় ৷ আমরা দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করব ৷’’ কুলতলির বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল জানান, ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে যাওয়ার কারণে এই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার স্কুলগুলিকে ৷ প্রান্তিক এলাকাগুলিতে গভীর নলকূপ বসানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি ৷ পাশাপাশি, সবক’টি স্কুলের পানীয় জলের নলকূপগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে ৷ আর বিকল নলকূপগুলিকে ঠিক করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক ৷
