ডায়মন্ড হারবার, 6 জানুয়ারি : ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই তৃণমূল কংগ্রেস ভাঙন বাড়তে শুরু করেছে। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও নেতাকে ঘিরে জল্পনা ছড়াচ্ছে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন দক্ষিণ 24 পরগনার ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক তৃণমূলের দীপক হালদার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি আচমকা দেখা করেন বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তা থেকেই ছড়ায় জল্পনা।যদিও এই সমস্ত জল্পনাকে আমল দিতে নারাজ দীপক হালদার। বুধবার তিনি বলেন, "আমি তৃণমূলে আছি, ছিলাম ও থাকব।"
তবে দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন দীপক হালদার। একাধিকবার পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে সরবও হয়েছেন সোশাল মিডিয়ায়। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। ডায়মন্ড হারবারে যেদিন স্থানীয় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেন, সেই সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। ফলে, তাঁর দলত্যাগ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে যে তিনি কি তাহলে বিজেপির পথে পা বাড়ালেন!
আর সেই জল্পনাকে উস্কে দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজেপির কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হাজির হন দীপক। সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণ 24 পরগনার জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের। প্রায় 2 ঘণ্টা ধরে চলে রুদ্ধদ্বার বৈঠক। স্বাভাবিকভাবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠককে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, শোভনের হাত ধরেই গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে চাইছেন দীপক।
যদিও শোভনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করা উচিত নয় বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। ডায়মন্ড হারবারের বিধায়কের কথায়, "গতকাল আমি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য গিয়েছিলাম। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক। সেই সুবাদে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম।"
আরও পড়ুন: সৌমেন্দুকে কেন পদচ্যুত, রাজ্যের কাছে জানতে চাইল হাইকোর্ট
শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে থাকাকালীন দক্ষিণ 24 পরগনার জেলা সভাপতি ছিলেন। ফলে, ওই জেলার নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও সকলের জানা। কিন্তু শোভন এখন বিজেপি নেতা। ফলে, এই বৈঠক ঘিরে শাসক দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু তাতেও পিছু হঠতে নারাজ দীপক হালদার। তিনি বলেন, "শুধুমাত্র এক ব্যক্তির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে যদি আমায় কোনও শাস্তি পেতে হয় তাহলে সেই শাস্তি মাথা পেতে নেব।"