ডায়মন্ড হারবার, 4 সেপ্টেম্বর : করোনার আতঙ্ক থাকলেও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে মানুষ । এর মধ্যে ভয় ধরাচ্ছে তৃতীয় ঢেউ । সে কথা ভেবে বিশেষত শিশুদের সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে শিশুদের জন্য শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ । একইসঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের শতাব্দী প্রাচীন রেড ক্রস সোসাইটির স্বাস্থ্যকেন্দ্র মাতৃসদন সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা প্রশাসন । রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও যে কয়েকটি জেলার সংক্রমণ হার বিশেষজ্ঞদের চিন্তায় ফেলছে, তার মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ 24 পরগনা । তৃতীয় ঢেউয়ের দিকে নজর রেখে তাই আগেভাগে প্রস্তুতি নিচ্ছে এই জেলা ।
1863-তে ডায়মন্ড হারবার পুরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় 4 বিঘা জায়গায় উপর তৈরি হয় রেড ক্রস সোসাইটির 'মাতৃ সদন' ৷ শহর-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মা ও শিশুদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসার জায়গা ছিল এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র । পরিকাঠামোর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়েছিল । এবার এই ভবন দ্রুত সংস্কার করে মা ও শিশুদের চিকিৎসা পরিষেবা চালু করার পাশাপাশি রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কগুলোয় রক্তের ঘাটতি মেটাতে রেডক্রসকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন । এই প্রসঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা বলেন, "শহরের খ্যাতনামা ব্যক্তিরা এখান থেকে জন্মেছেন এবং পরিষেবা পেয়েছেন ৷ পৌরপ্রশাসন, মহকুমা প্রশাসনের তরফ থেকে মাতৃ সদনকে পুনরুজ্জীবিত করতে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি ৷"
আরও পড়ুন: Gangasagar Mela : গঙ্গাসাগর মেলার আগে 100 শতাংশ টিকাকরণের সিদ্ধান্ত প্রশাসনের
ইতিমধ্যে সংস্কারের কাজের জন্য প্রায় 20 লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পরিষদ । পুরসভার তত্ত্বাবধানে সংস্কারের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে । অন্যদিকে তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের সংক্রমণের আশঙ্কায় ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে 12 টি সিসিইউ, 25 টি পিকু ও 100 টি জেনারেল বেড বাড়ানো হচ্ছে । একই ভাবে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালেও বাড়ানো হচ্ছে শয্যা সংখ্যা । দুই হাসপাতালে পাইপ লাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিষেবা চালু করা হয়েছে ।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আগে প্রস্তুতির নিরিখে মূলত দু'টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে স্বাস্থ্যভবন । প্রথমত টিকাকরণে গতি, দ্বিতীয়ত কোভিড আক্রান্ত কম বয়সিদের চিকিৎসা পরিকাঠামোয় জোর দেওয়া । শহরের পরে পঞ্চায়েত এলাকাতেও টিকাকরণের হার বৃদ্ধিতে নজর দিচ্ছে রাজ্য । বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে পিকু, এসএনসিইউ, পেডিয়াট্রিক এইচডিইউ-এর পরিকাঠামো তৈরি রাখতে বলা হয়েছে । মৃদু-মাঝারি উপসর্গ যুক্ত কমবয়সিদের (3 মাস-12 বছর) জন্য রাজ্যজুড়ে 10 হাজার শয্যা চিহ্নিত করা হয়েছে । তাছাড়া কোভিড আক্রান্ত 1 দিন থেকে 3 মাসের শিশুদের জন্য 350 টি এসএনসিইউ শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে । প্রাথমিক স্তরের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলির সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের টেলি কনসালটেশনের মাধ্যমে পরামর্শের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷