বকখালি, 6 সেপ্টেম্বর: দিঘা, পুরীর মতোই বাঙালির ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম ডেস্টিনেশন হল দক্ষিণ 24 পরগনার বকখালি। দক্ষিণ 24 পরগনার এই পর্যটন কেন্দ্রে সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বদলাচ্ছে সমুদ্র। শীতকালে যে বকখালি সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়ে ও পর্যটকদের কোলাহলে গমগম করত, সেখানে এখন শ্মশানের নিস্তব্ধতা।
যশ-আমফান থেকে শুরু করে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় বকখালির ঝাউবন থেকে শুরু করে অধিকাংশ জিনিসই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ফলে বকখালির শোভা আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে। সেটাও পর্যটক কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন হোটেল ব্যবসায়ী থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা দাবি করছেন, প্রশাসনের তরফে ড্রেজিংয়ের বন্দোবস্ত করা হলে সমুদ্র আরও কাছে চলে আসবে এবং পর্যটকদের ভিড় বাড়বে।
বকখালি সমুদ্রে সৈকত লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চর পড়ে গিয়েছে। ফলে এখন বকখালি পিকনিক স্পট আকর্ষণ হারাচ্ছে। দ্রুত চর কেটে পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন এলাকার ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, ভরা অমাবস্যা বা পূর্ণিমার কোটালে সমুদ্রের জল এতটাই নেমে যায় তখন আরও এগিয়ে গিয়ে তবেই সমুদ্রে নামা যায়। সৈকতের সামনে প্রায় 50 মিটার সরু ও লম্বা খাল তৈরি হয়েছে। ওই খালই মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, "মানুষ বকখালিতে আসতে চায় কিন্তু বকখালি সমুদ্রে আর সেই ঢেউ দেখা যায় না৷ চর পড়ে যাওয়ার কারণে প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার হেঁটে সমুদ্রে চান করতে যেতে হয় পর্যটকদের। ক্রমশ পর্যটকদের মধ্যে বকখালির গুরুত্ব হারাচ্ছে। প্রশাসনের উচিত বকখালি সমুদ্র সৈকত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে চর কাটার ব্যবস্থা করা। এর ফলে আবারও পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে বকখালি।"
এ বিষয়ে গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথোরিটির চেয়ারম্যান শ্রীমন্ত মালি জানান, দিঘা, পুরীর মতো সমুদ্রের ঢেউ এখানে আর অতটা নেই। চর পড়ে যাওয়ার জন্য বকখালি পর্যটক কেন্দ্রে অনেক পর্যটক আসছেন না ৷ পর্যটক উজ্জ্বল কুণ্ডু বলেন, "সৈকত থেকে সমুদ্রের দূরত্ব অনেকটাই ৷ দিঘা, পুরীর মতো বকখালিতে পর্যটকদের চাপ নেই। যত দিন যাচ্ছে সমুদ্র সৈকতে পলির পরিমাণ আরও বেশি করে জমছে।"
আরও পড়ুন: লোকালয়ে কুমির ! নামখানার পুকুর থেকে উদ্ধার সরীসৃপ বনদফতরের জালে