দক্ষিণ 24 পরগনা, 14 সেপ্টেম্বর: রান্নাপুজোয় বাঙালির পাতে ইলিশ হতে চলেছে মহার্ঘ্য ৷ কারণ বাংলার আকাশে দুর্যোগের মেঘ। নিম্নচাপ ও কৌশিকী অমাবস্যার ভরা কোটালের জোড়া ফালায় উত্তাল সমুদ্র। গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য দফতর ৷ একে একে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে মৎস্যজীবী ও ট্রলারগুলিকে ৷ ফলে টাটকা মাছ বাজারে পাইকারি হওয়ার সম্ভাবনাও নেই ৷ ফলে একদিকে যেমন মৎস্যজীবীদের ক্ষতি অন্যদিকে চড়া দামে ইলিশ কিনতে গিয়ে বাঙালির পকেটও হতে চলেছে খালি ৷
পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ইলিশের দাম 1800 থেকে 2000 টাকা। খুচরো বাজারে যার দাম বেড়ে দাঁড়াচ্ছে 2200 থেকে 2500 টাকা। এদিকে, 300 থেকে 400 গ্রাম ওজনের খোকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে 400 থেকে 500 টাকায়। কিন্তু রান্না পুজোর আগে ইলিশের তেমন যোগান মিলবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন মৎস্যজীবীরা।
কাকদ্বীপ ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, "নিম্নচাপ আর অমাবস্যার কোটালের জেরে কার্যত সমুদ্র উত্তাল হয়ে গিয়েছে। মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর একে একে গভীর সমুদ্র থেকে মৎস্যজীবী ও ট্রলারগুলি বন্দরের দিকে ফিরছে। এতে যথেষ্ট লোকসান হয়েছে ৷"
তিনি আরও বলেন, "রান্নাপুজোয় ইলিশের দর থাকে ৷ এই সময় কিছুটা লাভের মুখ দেখা যায় ৷ তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে মৎস্যজীবীদের ফিরতে হয়েছে খালি হাতে ৷ ফলে উৎসবের বাজার ধরা গেল না ৷ তাই আড়তে থাকা ইলিশই বেরোবে বাজারে ৷ যা বিক্রি হবে চড়া দামে ৷"
ট্রলারের মালিক মাখন দাস বলেন, "ইলিশের মরশুম প্রায় শেষের পথে। রান্না পুজোতে ইলিশের চাহিদা থাকে ৷ কিন্তু এই বছর চাহিদা থাকলেও নিম্নচাপ ও কোটালের কারণে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারছে না মৎস্যজীবীরা। এর ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ট্রলার মালিকেরা। কী হবে বুঝে উঠতে পারছি না। বাজারে মাছের দাম কার্যত আকাশ ছোঁয়া হতে চলেছে।"
স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ মাইতি জানান, বাজারে ইলিশ মাছের দাম এমনিতেই আকাশ ছোঁয়া। রান্না পুজোতে বাজারে ইলিশের চাহিদা থাকে ৷ কিন্তু এই বছর বাজারে যদি মাছের ঘাটতি থাকে তাহলে দাম আরও চড়া হবে ৷ যা কার্যত মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাবে। তাই ইলিশের বদলে অন্য কোন মাছ দিয়েই রান্না পুজো করতে হবে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে 325 কেজি পদ্মার ইলিশ বাজেয়াপ্ত করল বিএসএফ
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে মায়ানমার উপকূলে সৃষ্ট হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। যা আগামী তিন দিনে নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরে তা শক্তি বাড়িয়ে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। এর জেরে মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত উপকূল এলাকায় হালকা থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে দুই 24 পরগনার উপকূলবর্তী অনেক জায়গায় বৃষ্টি শুরুও হয়েছে। একে একে ট্রলার গুলি বন্দরে ফিরছে ৷ এর ফলে বড়সড়ো ক্ষতির মুখে মৎস্যজীবীরা।